সোনালি স্বপ্ন

সোনালি স্বপ্ন

তোমাদের গল্প জুন ২০১৪

আবদুল্লাহ আল মারুফ

তের বছর বয়সের ছেলে মাহমুদ শান্ত ও ভদ্র স্বভাবের। এক ভাই ও এক বোন এবং মা-বাবা নিয়ে তাদের ছোট্ট সংসার। তার বোনের নাম নাঈমা। বাবা সরকারি চাকরিজীবী। মা গ্রামে সেলাই করেন। বাবা-মায়ের আয় দিয়ে সংসারটা ভালোভাবে চলে যাচ্ছে। কয়েক দিন পর মাহমুদের জেএসসি পরীক্ষা। পরীক্ষার জন্য ভালোভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে। ভালো করে পরীক্ষাটা দিলো। এবার ফলাফলের পালা। ভালো ফলাফলের জন্য মাহমুদ আল্লাহর নিকট দোয়া করে। মাহমুদ তার বেজাল্টের কথা শুনে খুবই খুশি হলো। আর আল্লাহর নিকট কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করল। তার এ প্লাস পাওয়ার কথা শুনে বাবা-মা দু’জনেই মহা খুশি। নবম শ্রেণীতে বিজ্ঞান বিভাগটি বেছে নেয় সে। তার আশা সে একজন ভালো ডাক্তার হবে। গরিব-দুঃখী লোকদের সাহায্য করবে। নবম শ্রেণীর পড়ালেখা নিয়ে সে মহা ব্যস্ত। এদিকে তার বাবার চাকরি শেষ। পেনশনের টাকা এক সাথে উঠিয়ে ফেলেছেন। একটা গার্মেন্টস দেন তিনি। একদিন এক দুর্ঘটনায় মাহমুদের বাবা মারা যান। বাবার মৃত্যুর কথা শুনে মাহমুদ হতবাক হয় যায়। তার মা তো যেন পাগল হয়ে গেছেন। সংসারের ব্যয়ভার সব মাহমুদের মায়ের ওপর পড়ে। দেখতে দেখতে এসএসসি পরীক্ষা ঘনিয়ে এলো। ভালোভাবেই পরীক্ষা দিলো এবং গোল্ডেন এ প্লাস পায় সে। ভালো কলেজে ভর্তি হওয়ার আশা। মা খুবই চিন্তিত। ছেলের ভর্তি ও বই কেনার খরচ মায়েরই তো জোগাড় করতে হবে। রোজগারও কমে গেছে। তাই মা তার সোনার নেকলেসগুলো বিক্রি করে দেন। কলেজ থেকে এসে মাহমুদ দেখে তার মা শুয়ে আছেন। Ñ মা তোমার কি অসুখ? না তেমন কিছু না। সামান্য জ্বর। সেরে যাবে। মাহমুদ দেখল তার মায়ের ভীষণ জ্বর। ডাক্তারের কাছে নেয়া লাগবে। কিন্তু টাকা নেই। তবুও হাসপাতালে নিয়ে যায় মাকে। অর্থের অভাবে তার মা শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। দু’চোখ বেয়ে অশ্রু নেমে আসে, সে তার ছোট বোনকে নিয়ে অজানার উদ্দেশে ছুটে। স্বপ্ন নিজে ডাক্তার হবে বোনকেও ডাক্তার বানাবে। তার সেই সোনালি স্বপ্ন এখনও রয়ে গেল।

আপনার মন্তাব্য লিখুন
অনলাইনে কিশোরকন্ঠ অর্ডার করুন
লেখকের আরও লেখা

সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

আরও পড়ুন...

CART 0

আপনার প্রোডাক্ট সমূহ