ভূস্বর্গ কাশ্মির   -মুহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম

ভূস্বর্গ কাশ্মির -মুহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম

ফিচার জানুয়ারি ২০১৭

কাশ্মির দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে উত্তরের ভৌগোলিক অঞ্চল। ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি পর্যন্ত কাশ্মির বলতে বিশাল হিমালয় ও পির পানজাল পার্বত্য রেঞ্জের মধ্যকার উপত্যকাকে বোঝাতো। বর্তমানে কাশ্মির বলতে এমন একটি বিশাল এলাকাকে বোঝায় যাতে ভারত শাসিত জম্মু, কাশ্মির ও লাদাখ, পাকিস্তান শাসিত আজাদ কাশ্মির ও গিলগিট-বালতিস্তান এবং চীন শাসিত আকসাল চীন ও ট্রান্স-কারাকোরাম ট্রাক্ট অঞ্চল অন্তর্ভুক্ত।
প্রথম সহ¯্রাব্দের প্রথমার্ধে কাশ্মির অঞ্চল হিন্দুধর্ম এবং পরে বৌদ্ধধর্মের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হয়ে ওঠে।
১৩৩৯ সালে শাহ মীর কাশ্মিরের প্রথম মুসলিম শাসক হন। তিনি সালাতিন-ই-কাশ্মির বা সোয়াতি রাজবংশের সূচনা করেন। পরবর্তী পাঁচ শতাব্দী ধরে মুসলিম বাদশাহরা কাশ্মির শাসন করেন। মুঘলরা ১৫৮৬ থেকে ১৭৫১ সাল পর্যন্ত এবং আফগান দুররানি সা¤্রাজ্য ১৭৫১ সাল থেকে ১৮২০ সাল পর্যন্ত কাশ্মির শাসন করেন। ঐ বছর রঞ্জিত সিংয়ের নেতৃত্বে শিখরা কাশ্মির কুক্ষিগত করে। ১৮৪৬ সালে প্রথম অ্যাংলো-শিখ যুদ্ধে শিখদের পরাজয়ের পর এবং অমৃতসর চুক্তির আওতায় ব্রিটিশদের কাছ থেকে এই অঞ্চল ক্রয়ের ভিত্তিতে জম্মুর রাজা গুলাব সিং কাশ্মিরের নতুন শাসক হন। এরপর ব্রিটিশ ক্রাউনের অভিভাবকত্বের অধীনে তার অধস্তনদের শাসন ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত স্থায়ী হয়। ঐ বছর ব্রিটিশ ভারতীয় সাম্রাজ্যের এই সাবেক রাজা শাসিত রাজ্য বিরোধপূর্ণ অঞ্চলে পরিণত হয়। কাশ্মির এখন ভারত, পাকিস্তান ও চীন এই তিন রাষ্ট্রের দ্বারা শাসিত হচ্ছে।
তবে, আমরা এখানে শুধুমাত্র জম্মু ও কাশ্মিরের বিষয়টি তুলে ধরবো। জম্মু ও কাশ্মিরের আয়তন ২ লাখ ২২ হাজার ২৩৬ বর্গ কিলোমিটার (৮৫,৮০৬ বর্গ মাইল)। এখানকার মোট ভূমির ১৫.৭৩ শতাংশ কাশ্মির, ২৫.৯৩ শতাংশ জম্মু এবং ৫৮.৩৩ শতাংশ লাদাখ। জনসংখ্যা ২০১১ সালের হিসাব অনুযায়ী, ১ কোটি ২৫ লাখ ৪১ হাজার ৩০২ জন। জম্মু ও কাশ্মিরের মোট জনসংখ্যার শতকরা ৬৮.৩১ ভাগ মুসলিম, ২৮.৪৩ ভাগ হিন্দু, ১.৮৭ ভাগ শিখ, ০.৮৯ ভাগ বৌদ্ধ এবং ০.২৮ ভাগ খ্রিষ্টান। বিভাগ অনুযায়ী, কাশ্মিরে জনসংখ্যার ৯৬.৪০ শতাংশ, জম্মুতে ৩৩.৪৫ শতাংশ এবং লাদাখে ৪৬.৪০ শতাংশ মুসলিম। এখানকার মানুষ কাশ্মিরি, উর্দু, ডগরি, পাঞ্জাবি, পাহাড়ি, বালতি, লাদাখি ইত্যাদি ভাষায় কথা বলে।
কাশ্মিরে এসে স্বয়ং মোগল সম্রাট জাহাঙ্গীর নাকি বলেছিলেন, ‘পৃথিবীতে যদি কোথাও স্বর্গ থাকে, তবে তা এখানেই আছে।’ সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় সাত হাজার ফুট ওপরে সবুজ উপত্যকা আর শান্ত হ্রদে ঘেরা কাশ্মিরে এসে যে কারো কাছে মনে হবে, সময়টা বুঝি হঠাৎ থেমে গেছে। সবকিছু ছবির মতো। কোটি কোটি বুনো ফুলে ঢাকা উপত্যকায় ছুটে বেড়ানো ঘোড়ার দল, পাইন, ফার, বার্চগাছের সারি, নীল আকাশে মাথা গুঁজে থাকা পর্বতজুড়ে মেঘেদের খেলা, সেখান থেকে নেমে আসা দুরন্ত ঝরনার নাচ, পর্বতমালার ভেতর দিয়ে এঁকেবেঁকে চলা রাস্তা, কখনো মাটি থেকে হাজার হাজার ফুট ওপরে, কখনো বা ঢাল বেয়ে সটান নিচে, কখনো ঘুটঘুটে অন্ধকার সুড়ঙ্গের ভেতরে, আবার কখনো রাস্তার ধারালো বাঁকে গভীর গিরিখাদের নিচে উন্মত্ত পাহাড়ি নদী। সব মিলিয়ে যেন একটা স্বপ্ন দেখার মতো অভিজ্ঞতা।
কাশ্মিরে রাজকীয় আনন্দটা পেতে হলে অন্তত একটা রাত কাটাতে হবে বোটহাউজে। কাশ্মিরের গ্রীষ্মকালীন রাজধানী শ্রীনগর শহর ঘিরে আছে প্রায় ২৬ বর্গকিলোমিটার ঢাল লেকের স্বচ্ছ পানি। এই হ্রদের তীর ঘেঁষে ভেসে আছে সারি সারি বোটহাউজ। দেখতে ছোটখাটো লঞ্চের মতো। তবে পুরোটাই অত্যন্ত দামি কাঠের তৈরি। দেয়ালে আর সিলিংয়ে কাঠের সূক্ষ্ম নকশার কাজ দেখে বোঝা যায় এর শিল্পমূল্য। বারান্দা, ড্রয়িংরুম, ডাইনিংরুম, বেডরুম সবই আছে বোটহাউজে। মেঝেতে বিছানো কাশ্মিরি গালিচা, সিলিংয়ে ঝাড়বাতি আর জানালায় ঝুলে থাকা পশমিনা শালের পর্দা পর্যটকদের জানান দেবে উষ্ণ আতিথেয়তার। আর বোটহাউজের বারান্দায় বসে যদি আকাশে মিলে যায় পূর্ণিমার চাঁদ, তাহলে তো কথাই নেই। এছাড়াও শ্রীনগরে রয়েছে অনেক হোটেল ও রিসোর্ট।
কী দেখার আছে কাশ্মিরে? জম্মু : ৩০৫ মিটার (৯৯০ ফুট) উচ্চতায় তাওয়াই নদীর তীরে জম্মু ও কাশ্মির রাজ্যের শীতকালীন রাজধানী শহর জম্মু। একে মন্দিরের শহরও বলা হয়ে থাকে। জম্মুর অন্যতম আকর্ষণ রঘুনাজির মন্দির, এর অবস্থান এই শহরের কেন্দ্রে। আরো দেখতে পাওয়া যাবে জয়পুর পাথরের তৈরি রাম, লক্ষণ, সীতাসহ অনেকের মূর্তি। অমর সিং প্যালেস মিউজিয়ামে অনেক ঐতিহাসিক ছবি এবং তার ব্যক্তিগত বই সংগ্রহ দেখে মুগ্ধ হবেন।
শ্রীনগর : এখানে প্রথমেই ডাল লেক ঘুরে দেখে নেয়া ভালো। রাজকীয় ডিঙি নৌকা, যাকে স্থানীয় ভাষায় বলে ‘শিকারা’, তাতে চড়ে চক্কর দেয়া যায় ডাল লেকের অলিগলি, দেখা যায় নেহরু পার্ক, ভাসমান পোস্ট অফিস, চাঁদনি চক আর বাজার, যেখানে রকমারি পসরা সাজিয়ে বসেছে স্থানীয় অধিবাসীরা। শ্রীনগরে দেখার মতো আরও আছে ইন্দিরা গান্ধী টিউলিপ গার্ডেন, চশমা শাহি, নিশাত গার্ডেন আর শালিমারবাগের মতো বড় বাগান, যেখানে শানবাঁধানো পাহাড়ি ঝরনা থেকে পড়ছে অবিরাম জলধারা আর বাগান রাঙিয়ে আছে হাজারো ফুলের গাছ। এখানে আরও আছে পরিমহল, মানসবাল লেক, নাগিন লেক, ঐতিহাসিক চারার-ই-শরিফ ও হজরতবাল মসজিদ, বোটানিক্যাল গার্ডেন, ঝিলাম নদী এবং শ্রী প্রতাপ সিং মিউজিয়াম।
গুলমার্গ : বরফাচ্ছাদিত এই পর্বতে কেবল কারে চড়ে দেখা যায় পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মির সীমান্ত। ঘোড়ায় চড়ে বেড়িয়ে আসা যায় চেরি অরচার্ড, পাইন ফরেস্ট কিংবা সিনেমার শুটিং স্পট। এ ছাড়া এখানে রয়েছে আরও অনেক রকম বিনোদনের ব্যবস্থা।
প্যাহেলগাম : শ্রীনগর থেকে ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে রয়েছে নদী-উপত্যকাশোভিত প্যাহেলগাম, নয়নাভিরাম সৌন্দর্যের লীলাভূমি এই প্যাহেলগাম। চোখ বুজতে মন চাইবে না এর সৌন্দর্যে। এখানে রয়েছে দেখার মতো অনেক স্পট। গাড়ি নিয়ে ঘুরে আসা যায় বেতাব ভ্যালি, চন্দনবাড়ি, আরু ভ্যালিসহ আরো অনেক স্পট। এ ছাড়াও ঘোড়া নিয়ে ঘুরে আসা যায় মিনি সুইজারল্যান্ড ও সুটিং স্পট।
সোনমার্গ : সিন্ধু উপত্যকায় সৌন্দর্যের লীলাভূমি সোনমার্গ। কাশ্মিরে বেড়ানোর সবচেয়ে সুন্দর জায়গার নাম সোনমার্গ। সোনমার্গ উজ্জ্বল ফুল এবং ঘন সবুজ পাহাড় দিয়ে পূর্ণ। সোনমার্গ নামের মানে ‘সোনার তৃণভূমি’ এবং যা যজি লা পাসের কাছাকাছি। অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এই অত্যাশ্চর্য এলাকায় আছে হিমবাহ এবং দেশের সর্বোচ্চ হ্রদ-ভিশানসর লেক, সমুদ্রতল উপরে ৪০৪৮ মিটার এবং স্ট্রিম মহান আলপাইন হ্রদ, নদীপ্রবাহ যা সারা বিশ্ব থেকে আগত প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য একটি জনপ্রিয় পর্যটন অরণ্য। তৃণময় শান্তিপূর্ণ এবং আদিম সৌন্দর্য দেখে এবং লম্বা গাছের মধ্য দিয়ে ট্রেকিং সোনমার্গ পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় কার্যক্রমসমূহের মধ্যে একটি।
লাদাখ : প্রতি বছর বিপুল সংখ্যক পর্যটক বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লাদাখে আসেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে। কিন্তু লাদাখে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বাইরেও প্রকৃতির যে রহস্যময়তা আছে তা অনেক বেশি আকর্ষণীয় মানুষের জন্য। লাদাখের লেহ অঞ্চল থেকে কারগিলের দিকে যেতে ত্রিশ কিলোমিটার দূরত্বেই আছে সে রহস্যময় চুম্বক পাহাড়। শ্রীনগর- লেহ মূলসড়ক দিয়ে খুব সহজেই ওই পাহাড়টি দেখা যায় এবং সড়কটিও ওই পাহাড়ের ওপর দিয়েই গেছে। ওই সড়কে গেলেই সাক্ষী হওয়া যাবে এক রহস্যময় ঘটনার। এখানে গাড়ির ইঞ্জিন বন্ধ করা হলে কিছুক্ষণ পরেই দেখা যাবে গাড়িটি ক্রমশ সামনের দিকে যাচ্ছে। ঘণ্টায় বিশ কিলোমিটার গতিতে গাড়িটিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে যেন অদৃশ্য কেউ। শুধু গাড়িই নয়, লাদাখের এই অঞ্চলের ওপর দিয়ে কোনো বিমান যাওয়ার সময় খুব সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। বিমানের গতিপথ যাতে পাল্টে না যায় সেদিকে তীক্ষè নজর রাখতে হয় পাইলটকে। আর সড়কপথে পর্যটকরা চাইলে গাড়ির ইঞ্জিন বন্ধ করে অনায়াসে বিশ কিলোমিটার গতিবেগে পুরো পরিবেশটিই অবলোকন করতে পারেন। এই চুম্বক পাহাড় নিয়ে স্থানীয়দের ভেতর নানা গল্প চালু আছে। সবগুলো গল্পই ঐশ্বরিক বা অতিপ্রাকৃত শক্তির বর্ণনায় শেষ হয়। অবশ্য পৃথিবীতে যতগুলো এ রকম স্থান আছে তার সবগুলোর স্থানীয় জনতার বিশ্বাসও মূলত একই রকম। বর্তমানে লাদাখ কর্তৃপক্ষ ওই সড়কটির দুই প্রান্তেই সাইনবোর্ড বসিয়ে দিয়েছে, যাতে কেউ দুর্ঘটনায় পতিত না হয়। এখানে রাস্তার ধারে বা কিছুটা উঁচু স্থানে দাঁড়ালে তীক্ষè এক শব্দ শুনতে পাওয়া যায়। দীর্ঘদিন এই শব্দকে ঐশ্বরিক বলে ধারণা করা হলেও পরবর্তী সময়ে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন যে পৃথিবীর যেসব অঞ্চলে এ ধরনের গ্র্যাভিটি হিল রয়েছে সেখানে চৌম্বকীয় ক্ষেত্রের তরঙ্গে ঘর্ষণের ফলে ওই শব্দ উৎপাদিত হয়। এ ছাড়াও এমনও অনেক সময় দেখা যায়, লাদাখের ওই চুম্বক পাহাড়ের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীর পানিও গ্র্যাভিটির সূত্র ধরে ভিন্ন দিকে প্রবাহিত হওয়ার চেষ্টা করে।
জম্মু ও কাশ্মির রাজ্যের দক্ষিণে ভারতের হিমাচল প্রদেশ ও পাঞ্জাব রাজ্য দু’টি অবস্থিত। উত্তর ও পূর্বে গণচীন। পশ্চিম ও উত্তর পশ্চিমে সীমান্ত বা নিয়ন্ত্রণ রেখার ওপারে কাশ্মিরের পাকিস্তান শাসিত আজাদ কাশ্মির ও গিলগিট-বালুচিস্তান। বর্তমান জম্মু ও কাশ্মির ভূখন্ডটি অতীতে কাশ্মির ও জম্মু দেশীয় রাজ্যের অধীনস্থ ছিল। এই রাজ্যের শাসকেরা ঐতিহাসিক বৃহত্তর কাশ্মির অঞ্চল শাসন করতেন। বর্তমানে কাশ্মির অঞ্চলের মালিকানা নিয়ে পাকিস্তান, ভারত ও গণচীনের মধ্যে বিরোধ চলছে।
১৯২৫ সালে কাশ্মিরের রাজা ছিলেন হরি সিং। ভারত স্বাধীনতা লাভের পূর্ব পর্যন্ত তিনিই শাসক ছিলেন। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাজনের অন্যতম শর্ত ছিল, ভারতের দেশীয় রাজ্যের রাজারা ভারত বা পাকিস্তানে যোগ দিতে পারবেন, অথবা তারা স্বাধীনতা বজায় রেখে শাসনকাজ চালাতে পারবেন। ১৯৪৭ সালের ২০ অক্টোবর পাকিস্তান সমর্থিত আদিবাসীরা কাশ্মিরে অনুপ্রবেশ করে। কাশ্মিরের রাজা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করলেও গভর্নর জেনারেল লর্ড মাউন্টব্যাটেনের কাছে সহায়তা চান। কাশ্মিরের রাজা ভারতভুক্তির শর্ত মেনে নিয়ে মাউন্টব্যাটেনের সাহায্যপ্রাপ্ত হন। ভারতীয় সেনা কাশ্মিরে প্রবেশ করে অনুপ্রবেশকারীদের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হয়। ভারত ও পাকিস্তান এক পর্যায়ে যুদ্ধবিরতির শর্ত হিসেবে কাশ্মির থেকে উভয় পক্ষের সেনা প্রত্যাহার ও গণভোটের প্রস্তাব প্রদান করা হয়। ভারত গণভোটে অসম্মত এবং পাকিস্তান সেনা প্রত্যাহারে সম্মতি প্রদান করেনি। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কাশ্মির নিয়ে অন্তত তিনটি যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে। ১৯৪৭, ১৯৬৫ ও ১৯৯৯ সালে যুদ্ধগুলো সংঘটিত হয়। তাছাড়া সিয়াচেন হিমবাহ এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে এই দুই দেশ কয়েকটি খন্ডযুদ্ধে জড়িত হয়। ভারত সমগ্র জম্মু ও কাশ্মির রাজ্য তাদের বলে দাবি করে।
জম্মু ও কাশ্মিরের অশান্তির ফলে হাজারো মুসলিমসহ মারা গেছেন অসংখ্যজন। বিশেষ করে কাশ্মিরে ভারতীয় সেনার নির্যাতনের শিকার হয়েছেন অধিক সংখ্যক মুসলিম কাশ্মিরি। একটি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ১৯৮৯ সালের জানুয়ারি মাস থেকে ২০১৬ সালের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত নিহত হয়েছে কাশ্মিরের নাগরিক ৯৪,৫০৪ জন এবং থানা হেফাজতে মৃত্যু ৭,০৬২ জন। ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে ১,০৬,২৬১টি, বিধবা হয়েছেন ২২,৮২৪ জন নারী, এতিম হয়েছে ১,০৭,৫৮৬ জন শিশু। এই ক্ষুদ্র এলাকার বিদ্রোহ দমনে রাখতে ভারত প্রায় দশ লক্ষ সেনাসদস্য মোতায়েন করে রেখেছে। কাশ্মিরিরা স্বাধীনতার জন্য যুগের পর যুগ জীবন দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু তাদের ঐ স্বপ্ন অধরাই রয়ে গেছে। কবে পূূরণ হবে তা কেউ জানে না।
                        
আপনার মন্তাব্য লিখুন
অনলাইনে কিশোরকন্ঠ অর্ডার করুন
লেখকের আরও লেখা

সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

আরও পড়ুন...

CART 0

আপনার প্রোডাক্ট সমূহ