বাংলা নববর্ষ হারুন   -ইবনে শাহাদাত

বাংলা নববর্ষ হারুন -ইবনে শাহাদাত

বিশেষ রচনা এপ্রিল ২০১৮

স্বাগতম বঙ্গাব্দ ১৪২৫। পহেলা বৈশাখ বঙ্গাব্দ বা বাংলা বর্ষপূঞ্জি অনুসারে বছরের প্রথম দিন। যদিও আমাদের দেশের অফিস আদালত, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠাগুলো পরিচালিত হয় ঈসায়ী বা খ্রিষ্টাব্দ বর্ষপঞ্জি অনুসারে। যাকে সাধারণ মানুষ ইংরেজি বর্ষপঞ্জি বলে। সেই অনুসারে প্রতি ঈসায়ী সনের ১৪ এপ্রিল বঙ্গাব্দের প্রথম দিন। ছোট্ট বন্ধুরা তোমরা জান, প্রতিদিন ভোরে মুয়াজ্জিনের আজানের সুরে ঘুম ভাঙার সাথে সাথে শুরু হয় নতুন একটি দিন। ভোরের আভা শেষে পুব আকাশে লাল সূর্য ওঠে, পৃথিবীটাকে আলোকিত রাখে সারা দিন। একটি নির্দিষ্ট কক্ষপথ ধরে সূর্যটি আস্তে আস্তে চলে যায় পশ্চিম আকাশে। তারপর আবারও লাল রঙ ধারণ করে হারিয়ে যায়। মসজিদ থেকে ভেসে আসে মাগরিবের নামাজের আজান। সূর্যের চলার গতির সাথে তাল রেখে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা সময়কে ভাগ করেছেন সেকেন্ড, মিনিট, ঘণ্টা, দিন, মাস, বছর, যুগ, অব্দ হিসাবে। সময় গণনা সাধারণত সূর্য ও চাঁদের পথচলার হিসাবের ব্যবধানকে ভাগ করে করা হয়। সূর্যের হিসাবে করা বর্ষপঞ্জি বা ক্যালেন্ডারকে সৌর এবং চাঁদের হিসাবে করা এক বছরকে চন্দ্রবর্ষ, সাল বা সন বলা হয়। আল্লাহতায়ালা সূরা বনি ইসরাইলের ১২ নম্বর আয়াতে ঘোষণা করেছেন : ‘দেখো, আমি রাত ও দিনকে দু’টি নিদর্শন বানিয়েছি। রাতের নিদর্শনকে বানিয়েছি আলোহীন এবং দিনের নিদর্শনকে করেছি আলোকোজ্জ্বল, যাতে তোমরা তোমাদের রবের অনুগ্রহ তালাশ করতে পারো এবং মাস ও বছরের হিসাব জানতে সক্ষম হও। এভাবে আমি প্রত্যেকটি জিনিসকে আলাদাভাবে পৃথক করে রেখেছি।’
আমাদের দেশে ইংরেজি, বাংলা ও হিজরি এই তিনটি সালের প্রচলন রয়েছে। আমাদের প্রয়োজনই আমরা তিনটি সনের দিন তারিখের দিকে চোখ রাখতে বাধ্য। আর একটি কথা তোমাদেরকে আগেই বলে রাখছি, ইংরেজি ও বাংলা সনের হিসাব করা হয় সূর্যের চলার গতির ওপর ভিত্তি করে। অন্য দিকে হিজরি সনের হিসাব রাখা হয় চাঁদের গতির ওপর ভিত্তি করে। হিজরি সন/মাস মুসলমানদের ধর্মীয় কারণেই আমাদের দেশে ব্যবহার করা হয়। ইংরেজি সন ব্যবহার করা হয় আন্তর্জাতিক বিশ্বের সাথে যোগাযোগের সুবিধার জন্য। আমাদের সরকারি-বেসরকারি সব অফিস আদালত স্কুল, কলেজ, কারখানায় ব্যবহৃত হয় ইংরেজি দিন তারিখ। কৃষিকাজের সুবিধার জন্য ব্যবহৃত হয় বঙ্গাব্দ বা বাংলা সন। এক সময় শকাব্দের প্রচলন ছিল যা এখন আর নেই, অবশ্য ভারতের পশ্চিম বাংলায় এখনো শকাব্দের প্রচলন বিদ্যমান।
আমাদের প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশে প্রচলিত বঙ্গাব্দ বা বাংলা বর্ষপঞ্জির সাথে জড়িয়ে আছে মুসলিম ইতিহাস-ঐতিহ্য। শিকড় সন্ধানী বাঙালি ও বাংলাদেশী মুসলমানরা অবশ্যই এ জন্য গর্ব করতে পারেন। কিন্তু প্রতিটি বাংলা নববর্ষে নতুন বছরকে বরণ করার নামে বিভিন্ন উৎসব আয়োজনে আমরা যে দৃশ্য দেখি তাতে মুসলিম নয় প্রতিফলিত হয় পৌত্তলিক সংস্কৃতির নানান আচার অনুষ্ঠান। অথচ এ কথা কারো অজানা নয়, হিজরি সালের ওপর ভিত্তি করে, বাংলা বর্ষপঞ্জি ১৫৮৪ ঈসায়ী বা খ্রিষ্টাব্দে দিল্লির সম্রাট আকবর এর প্রবর্তন করেছেন। ১৫৮৪ খ্রিষ্টাব্দের ১০ বা ১১ মার্চ এ সন বঙ্গাব্দ নামে প্রচলিত হয়। নতুন এই সালটি আকবরের রাজত্বের ঊনত্রিশতম বর্ষে প্রবর্তন করা হলেও তা গণনা করা হয় ১৫৫৬ খ্রিষ্টাব্দের ৫ নভেম্বর থেকে। এর কারণ এই দিন সম্রাট আকবর দ্বিতীয় পানিপথের যুদ্ধে হিমুকে পরাজিত করে সিংহাসনে আরোহণ করেন। তার সিংহাসনে আরোহণের ঐতিহাসিক মুহূর্তকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য এ দিন থেকে গণনা শুরু করা হয়। তখন এ নতুন সালের নাম ছিল তারিখ-ই-এলাহি।
ঐতিহাসিকগণ মনে করেন আকবরের এ বিজয়কে স্মরণীয় করে রাখা এবং রাজস্ব আদায়ের সুবিধার্থে এ নতুন সনের প্রবর্তন করা হয়। হিজরি বর্ষপঞ্জি অনুসারে কৃষকদের নিকট থেকে রাজস্ব আদায় করা ছিল এক জটিল কাজ। কারণ চন্দ্র ও সৌরবর্ষের মধ্যে ১১-১২ দিনের ব্যবধান এবং এই কারণে ৩১ চন্দ্রবর্ষ ৩০ সৌরবর্ষের সমান। সে সময় চন্দ্রবর্ষ অনুযায়ী রাজস্ব আদায় করা হতো, কিন্তু ফসল উৎপাদন ও সংগ্রহ করা হয় সৌরবর্ষ অনুসারে। সম্র্াট আকবর তার রাজত্বের শুরু থেকেই এ সমস্যা সমাধানের জন্য একটি বিজ্ঞানসম্মত এবং কাজের উপযোগী বর্ষপঞ্জির প্রয়োজন অনুভব করেন। এ জন্য তিনি মোগল দরবারের বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ও জ্যোতির্বিদ আমীর ফতুল্লাহ শিরাজীকে একটি বর্ষপঞ্জি তৈরির দায়িত্ব দেন। তার প্রচেষ্টায় হিজরি ৯৬৩ সালের মুহররম মাসের শুরু থেকে বাংলা নববর্ষের সূচনা হয়। মজার ব্যাপার হলো বাংলা বর্ষপঞ্জি শুরু হয়েছে ৯৬৩ অব্দ ধরেই। অর্থাৎ জন্মদিনের দিনই বঙ্গাব্দের বয়স ৯৬৩ বছর। শুরুর বছর যেহেতু মুহররম মাসের সাথে বৈশাখ মাসের মিল ছিল তাই এ মাসকেই প্রথম মাস ধরে গণনা শুরু হয়। আগে বঙ্গ বা বাংলাদেশে শক বর্ষপঞ্জি প্রচলিত ছিল। শক বর্ষপঞ্জি অনুসারে চৈত্র মাস ছিল বছরের প্রথম মাস।
আকবরের সময় মাসের প্রতিদিনের জন্য একটি স্বতন্ত্র নাম ছিল। প্রতিদিনের নাম মনে রাখা এক দুঃসাধ্য ব্যাপার। এই জটিল ও কষ্টকর পদ্ধতিকে সাপ্তাহিক পদ্ধতিতে পরিবর্তন করার জন্য একজন পর্তুগিজ পন্ডিতকে দায়িত্ব দেন। তিনি সাত দিন বা বারের নাম দিয়ে সাপ্তাহিক পদ্ধতির প্রবর্তন করেন। আমরা যদি একটু ভালো করে লক্ষ করি তাহলে খুুব সহজেই বুঝতে পারি যে রোমান বারের নামের সাথে আমাদের সাত দিন বা বারের নামের যথেষ্ট মিল আছে। যেমন- সান ডে রবিবার ইংরেজি ও রোমান ভাষায় সান শব্দের অর্থ রবি বা সূর্য, মানডে সোমবার মুন বা চাঁদ, মার্স (টুইস) বা মঙ্গল, মারকুরি (ওয়েটনেস) বুধ, জুপিটার (থার্স) বা বৃহস্পতি, ভেনাস (ফ্রাই) শুক্র এবং রোমান সেটার্ন ইংরেজি সেটার ডে বা শনিবার। পশ্চিমাদের অনুসরণে আগের দিনে বাংলাবর্ষ পঞ্জিতে প্রথম সপ্তাহ শুরু হতো রোববার দিন। বঙ্গাব্দের শুরুতে অর্থাৎ সম্রাট আকবরের সময় বার মাসের নাম ছিল ফারওয়ারদিন, উর্দিবাহিশ, খোরদাদ, তীর, মুরদাদ, শাহারিবার, মেহের, আবান, আজার, দে, বাহমান এবং ইসফান্দ। পরবর্তীতে তারকারাজির বাংলা নাম অনুসারে বার মাসের রাখা হয়। যেমন- বিশাখা থেকে বৈশাখ, জ্যেষ্ঠা থেকে জ্যৈষ্ঠ, আষাঢ়া থেকে আষাঢ়, শ্রবণা থেকে শ্রাবণ, প্যুষা থেকে পৌষ, মঘা থেকে মাঘ, ফল্গুলী থেকে ফাল্গুন এবং চিত্রা থেকে চৈত্র। ঐতিহাসিকগণ মনে করেন, বঙ্গাব্দ প্রবর্তনের আগে এ অঞ্চলে শকাব্দ চালু ছিল সেই অব্দের মাসের নাম হতেই মাসের এ নামগুলো নেয়া হয়েছে সম্রাট আকবরের দরবারের বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ও জ্যোতির্বিদ আমীর ফতুল্লাহ শিরাজীর দেয়া ফারসি নামগুলো পরিবর্তন করে। এর আসল কারণ কি সে সম্পর্কে ঐতিহাসিক কোনো সর্বসম্মত মত না পাওয়া গেলেও অনুমান করা হয়, শকাব্দের মাসের নামগুলো এ অঞ্চলের মানুষের মুখে মুখে আগে থেকেই ছিল, তাই তাদের রক্ষণশীল মন থেকে তা মুছে ফেলা সম্ভব হয়নি। বঙ্গাব্দ চালু হওয়ার পর হতে চাঁদের হিসাব অনুসারে হিজরি অব্দ এবং সূর্যের হিসাব অনুসারে বঙ্গাব্দ প্রচলিত আছে আমাদের দেশে। চন্দ্রবর্ষের হিসাবে এ দেশের মানুষ তাদের ইবাদত বন্দেগি এবং বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান উদযাপন করেন। সৌরবর্ষ বঙ্গাব্দ অনুসারে এ দেশের কৃষক জমিতে ফসল ফলায়। আগেই বলেছি, দেশের অফিস আদালত এবং ব্যবসাবাণিজ্য চলে বর্তমান দুনিয়ার সাথে তাল মিলিয়ে সহজভাবে গ্রেগোরিয়ান অব্দকে অনেকেই ইংরেজি অব্দ বলে থাকে। আসলে এটি ইংরেজি অব্দ নয়, গ্রেগোরিয়ান বা ঈসায়ী অব্দ। আল্লাহ তায়ালা মানবজাতির হেদায়তের জন্য যুগে যুগে নবী ও রাসূল পাঠিয়েছেন। তাঁদেরই এক জন্য ছিলেন হযরত ঈসা (আ:)। তাঁর জন্মদিনকে প্রথম দিন ধরে জ্যোতির্বিদ গ্রেগোরিয়ান এ অব্দ চালু করেন। এ জন্য একে ঈসায়ী অব্দ বলা হয়। হযরত ঈসা (আ:)কে খ্রিষ্টানরা যিশুখ্রিষ্ট বলেন, তাই এ বর্ষ গণনা পদ্ধতিকে খ্রিষ্টাব্দও বলা হয়। অনেকে প্রবর্তকের নামানুসারে খ্রিষ্টাব্দকে গ্রেগোরিয়ান বর্ষপঞ্জিও বলে থাকেন। বঙ্গাব্দ ও গ্রেগোরিয়ান অব্দের মধ্যে পার্থক্য খুব বেশি নয়। দু’টিই সৌরবর্ষভিত্তিক। বাংলা সনের সাথে ৫৯৩ যোগ করলে ঈসায়ী সন পাওয়া যায়। আমরা মুসলমানরা যেহেতু বিশ্বাস করি হযরত ঈসা (আ:)ও আমাদের নবীদের একজন, তাই এখানেও আমরা পাই আমাদের ঐতিহ্যের শিকড়ের সুঘ্রাণ।
পঞ্জিকা সংস্কারের লক্ষ্যে ঢাকার বাংলা একাডেমি ১৯৬৩ সালে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর নেতৃত্বে একটি পঞ্জিকা কমিটি গঠন করে। এই কমিটির প্রণীত বাংলা বর্ষপঞ্জিকাই এখন আমাদের বাংলাদেশে অনুসরণ করা হচ্ছে। কিন্তু এই সংস্কারের ফলে আমাদের জাতীয় দিবসগুলোতে ইংরেজি তারিখের কিছুটা হেরফের হয়ে গেছে। ইংরেজি সালের বঙ্গাব্দের দিন-তারিখের হিসাবের সমস্যা দূর করার জন্য ১৯৬৬ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি বাংলা একাডেমির তত্ত্বাবধানে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর নেতৃত্বে একটি বঙ্গাব্দ সংস্কার কমিটি গঠিত হয়। ওই কমিটি চার বছর পরপর চৈত্র মাস ৩০ দিনের পরিবর্তে ৩১ দিনে গণনা করার পরামর্শ দেয়। ১৯৯৫ সালে সর্বশেষ বাংলা বর্ষপঞ্জির পরিবর্তন আনা হয়। তবে পরিবর্তিত বর্ষপঞ্জিতে জাতীয় ও রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ দিনগুলো মূল বাংলা তারিখের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়নি। যেমন ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ও ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরের প্রতিষঙ্গী বাংলা তারিখ ছিল ৮ ফাল্গুন ও ১ পৌষ। পরিবর্তিত বর্ষপঞ্জিতে তা যথাক্রমে ৯ ফাল্গুন ও ২ পৌষ হিসেবে পালন করা হয়। এসব বৈষম্য দূর করতে ২০১৬ সালের বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি বাংলা একাডেমির পঞ্জিকা সংস্কার কমিটি একটি সভায় বসে। যেখানে পঞ্জিকা সংস্কার কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. অজয় রায়ের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান, অধ্যাপক জামিল চৌধুরী, অধ্যাপক আলী আসগর এবং কমিটির সদস্য সচিব ও একাডেমির পরিচালক অপরেশ কুমার ব্যানার্জি। কমিটি বিভিন্ন বিষয় পর্যালোচনা করে তিনটি সিদ্ধান্ত নেয়। সেগুলো হচ্ছে- বাংলা বর্ষপঞ্জির প্রথম ছয় মাস বৈশাখ থেকে আশ্বিন পর্যন্ত ৩১ দিনে গণনা করা হবে। এছাড়া কার্তিক থেকে মাঘ এবং চৈত্র মাস ৩০ দিনে গণনা করা হবে। শুধু ফাল্গুন মাস ২৯ দিনে গণনা করা হবে। তবে ইংরেজি বর্ষপঞ্জির অধিবর্ষে (লিপইয়ার) ফাল্গুন মাস ২৯ দিনের পরিবর্তে ৩০ দিনে গণনা করা হবে। সংশোধনের ফলে ১৪২৩ বঙ্গাব্দ থেকে সংস্কার কমিটির সুপারিশ গ্রহণ করার কথা থাকলেও ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর সংস্কার সঠিক বিবেচনায় তা শেষ পর্যন্ত পরিবর্তন করা হয়নি।
প্রতি বছর ধুমধামের সাথে নতুন বছরকে বরণ করা হয়। উদযাপিত হয় বাংলা নববর্ষ। কিন্তু এক্ষেত্রে আমরা অনেকেই ভুলেই যাই আমাদের নিজস্ব স্বকীয়তা। অন্যের অনুসরণ করতে গিয়ে হারিয়ে ফেলি আত্মপরিচয়। এই ভুল থেকে অবশ্যই আমাদেরকে বের হয়ে আসতে হবে। তা না হলে অন্যের অনুসরণ করতে করতে আমরা একদিন হারিয়ে ফেলবো আমাদের শিকড়। আর এভাবেই আমাদের অনাগত উত্তরসূরিরা পরিণত হবে শিকড়হীন পরপাছা জাতিতে।
                        
আপনার মন্তাব্য লিখুন
অনলাইনে কিশোরকন্ঠ অর্ডার করুন
লেখকের আরও লেখা

সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

আরও পড়ুন...

CART 0

আপনার প্রোডাক্ট সমূহ