প্যাঁক প্যাঁক

প্যাঁক প্যাঁক

ফিচার জুন ২০১৩

মাসুম কবীর

হাঁস হচ্ছে অ্যানাটিডি (অহধঃরফধব) পরিবারের অন্তর্ভুক্ত পাখিদের বেশ কিছু প্রজাতির সাধারণ নাম। হাঁস অধিকাংশ ক্ষেত্রেই জলজ পাখি। স্বাদু ও লবণাক্তÑ উভয় ধরনের পানিতেই হাঁসদের দেখা যায়। বাংলাদেশসহ পৃথিবীর অনেক দেশেই বিভিন্ন প্রজাতির হাঁস গৃহপালিত পাখি হিসেবে এবং বর্তমান সময়ে ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে পালন করা হয়। হাঁসের ছানার তুলতুলে গায়ে হাত বুলিয়ে আদর করতে অনেকেই বেশ আনন্দ অনুভব করে। পৃথিবীর নানান প্রজাতি, আকার ও বর্ণের হাঁসেদের মধ্য থেকে কয়েকটির পরিচয় আজ তুলে ধরা হলো। চীনা হাস চীনাহাঁসের ইংরেজি নাম গধহফধৎরহ উঁপশ এবং বৈজ্ঞানিক নাম অরী মধষবৎরপঁষধঃধ। এরা আকারে ৪১-৪৯ সেন্টিমিটার আর পাখাসহ বিস্তৃতি ৬৫-৭৫ সেন্টিমিটার। এই হাঁসগুলো চীন ছাড়াও এশিয়ার বিভিন্ন দেশ জাপান ও রাশিয়ায় দেখা যায়। তবে ইংল্যান্ডে যে প্রজাতির দেখা মেলে তা একটু ভিন্ন রকম দেখতে। এদেরকে বিভিন্ন জলাধার যেমন লেক, পুকুর বা নদীর কাছে চড়ে বেড়াতে দেখা যায়। এরা জলের কাছাকাছি কোনো গাছে বাসা বাঁধে। মাটিতেও এরা চলাচল করে। বাংলাদেশে অনেক এলাকাতেই এই প্রকার হাঁস বাড়িতে পালা হয়। ঝুঁটি হাঁস ঝুঁটি হাঁস নানা নামে পরিচিত যেমনÑ গোছা হাঁস, খোপা হাঁস, গুচ্ছ হাঁস, কালো হাঁস ইত্যদি। এর  ইংরেজি নাম ঞঁভঃবফ উঁপশ আর বৈজ্ঞানিক নাম অুঃযুধ ভঁষরমঁষধ। এরা আকারে মাঝারি ধরনের। পূর্ণ বয়স্ক পুরুষ হাঁসটি দেখতে একেবারে কালো তবে ডানা থেকে নিচের অংশের দিকের পালক সাদা। আর মেয়ে হাঁসগুলো ধূসর রঙের হয়ে থাকে। ভুটি হাঁস পুরুষ ও মহিলা ভুটি হাঁস দেখতে প্রায় একই রকম তবে পুরুষ ভুতি হাঁসের চোখ সাদা আর মেয়ে ভুটি হাঁসের চোখ কালো রঙের। বামুনিয়া হাঁস বামুনিয়া হাঁস বাংলাদেশসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশ ছাড়াও আইসল্যান্ড, ওয়েস্টার্ন ইউরোপ, সাইবেরিয়া, বিংঃবৎহ ণধশঁঃরধ, স্পেন, ফ্রান্স, তিউনিশিয়া, বলকান, কাজাকিস্থান, চীন ও কেনিয়াতেও দেখা যায়। এরা দেশ ভেদে নানা নামে পরিচিতÑ ঘড়ৎঃযবৎহ চড়পযধৎফ, ঊঁৎড়ঢ়বধহ চড়পযধৎফ, ঊঁৎধংরধহ চড়পযধৎফ, চড়পযধৎফ, ঋঁষরমঁষব সরষড়ঁরহ, গরষড়ঁরহ ঊঁৎড়ঢ়ব ঞধভবষবহঃব চড়ৎৎষ্টহ ঊঁৎড়ঢ়বড় ইৎঁহধহফ ঞধভবষববহফ গড়ৎরমষরড়হব, গড়ৎরমষরড়হব বঁৎড়ঢ়বড় ইত্যাদি। আর বৈজ্ঞানিক নাম অুঃযুধ ভবৎরহধ। এদের পাখার পালক সাদা, মাথা-ঘাড় খয়েরি, বুকের পালক সাদা আর লেজের পালক ময়লা রঙের। চোখ লাল এবং মনি ধূসর-কালো। এরা বিভিন্ন জলজ উদ্ভিদ, জলজ পোকামাকর, ছোট মাছ খেয়ে থাকে। ইন্ডিয়ান রানার হাঁস ইন্ডিয়ান রানার হাঁস এক ধরনের গৃহপালিত হাঁস যা বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, মালয়েশিয়া ছাড়াও এশিয়ার অনেক স্থানে দেখা যায়। ১৮৩৫ সালে একজন নাবিক খড়হফড়হ তড়ড়ষড়মরপধষ এধৎফবহং বীযরনরঃরড়হ-এর জন্য ইউরোপে নিয়ে যায় এই হাঁস। এবং মূলত তখন থেকেই এদের লালন-পালন শুরু হতে থাকে ইংল্যান্ডে। এরা শরীর টান করে হাঁটে পেঙ্গুইনের মতো তবে হেলেদুলে নয়, দৌড়িয়ে চলার মতো। প্রয়োজনে উড়তেও পারে। এরা আকারে ১৪ ইঞ্চি বা ৩৬ সেন্টিমিটার হয় আর ওজন প্রায় ১.৪-২.৩ কেজি। এদের ডিম মুরগির ডিমের মতো তবে যিরঃব, ড়ভভ-যিরঃব, নষঁব, বা ষরমযঃ মৎববহ রঙের হয়। খাঁকি ক্যাম্পবেল খাঁকি ক্যাম্পবেল ইংরেজিতে কযধশর ঈধসঢ়নবষষ বা শুধু ঈধসঢ়নবষষ নামে পরিচিত। তবে খাঁকি ক্যাম্পবেলের পাশাপাশি সাদা, নীল, কালো ক্যাম্পবেলও দেখা যায়। খাঁকি ক্যাম্পবেল হাঁসটির নামকরণ করেন তৎকালীন ভারতীয় ব্রিটিশ রাজ্যপালের পতœী অফবষব ঈধসঢ়নবষষ। হাঁসটির রঙ খাঁকি বা ছাই ছাই বাদামি। তিনি ১৮০০ সালের দিকে গধষষধৎফ, জড়ঁবহ উঁপশ এবং ডযরঃব ওহফরধহ জঁহহবৎ হাসেঁর মধ্যে সঙ্করায়ন ঘটিয়ে খাঁকি ক্যাম্পবেল সৃষ্টি করেন। পুরুষ খাঁকি ক্যাম্পবেলগুলো তাদের নিজ (নীলশির হাঁস) বৈশিষ্ট্য প্রায় পরিপূর্ণভাবে ধরে রেখেছে। পুরুষ খাঁকি ক্যাম্পবেল আর নীলশির হাঁস (গধষষধৎফ)-এর মধ্যে পার্থক্য খুবই সামান্য। ১৮৮৯ সালের দিকে এই হাঁস ব্যাপক পরিচিতি লাভ করে। পরবর্তীতে ১৯৪১ সালে আমেরিকায় এর পালন শুরু হয়। একটি পূর্ণ বয়স্ক খাঁকি ক্যাম্পবেল  হাঁসের ওজন ৪ পাউন্ডের মতো। মার্বেল হাঁস মার্বেল হাঁস দেখতে অনেকটা মার্বেলের মতো বিশেষত পালকগুলো। এই হাঁসগুলো ঝড়ঁঃযবৎহ ঝঢ়ধরহ, ঘড়ৎঃযবিংঃ অভৎরপধ, ওৎধহ, ঞঁৎশবু, অৎসবহরধ, অুবৎনধরলধহ, ওৎধয়, ঝধযধৎধ-তে দেখা যায়। এরা আকারে ৩৯-৪২ সেন্টিমিটার হয়। ইংরেজিতে গধৎনষবফ উঁপশ বা গধৎনষবফ ঞবধষ নামে পরিচিত। এর বৈজ্ঞিিনক নাম গধৎসধৎড়হবঃঃধ ধহমঁংঃরৎড়ংঃৎরং। নীলশির হাঁস নীলশির হাঁস ইংরেজিতে গধষষধৎফ (ম্যালারড) নামে পরিচিত যার বৈজ্ঞানিক নাম অহধং ঢ়ষধঃুৎযুহপযড়ং। এদের ঘড়ৎঃয অসবৎরপধ, ঊঁৎড়ঢ়ব, অংরধ, অভৎরপধ, ঘবি তবধষধহফ ও অঁংঃৎধষরধ দেখা যায়। এদের মাথা নীল রঙের পালক দ্বারা আবৃত। খুব সম্ভবত তাই এদের নাম নীলশির হাঁস। তবে মেয়ে হাঁসগুলোর দেহ এরকম নয়। তারা দেখতে অনেকটা খাঁকি ক্যাম্পবেলের মতো। এরা ৮-১৩টি ডিম দেয় এবং শুধু মেয়ে নীলশিররাই ডিমে তা দেয়। সে সময় পুরুষ নীলশিররা অন্যত্র চলে যায়। এরা ২৭-২৮ দিনে ডিম দেয় আর তা দিয়ে বাচ্চা ফোটাতে সময় লাগে ৫০-৬০ দিন। লেনা হাঁস লেনা হাঁসের ইংরেজি নাম চরহঃধরষ বা ঘড়ৎঃযবৎহ চরহঃধরষ এবং বৈজ্ঞানিক নাম অহধং ধপঁঃধ। এই হাঁস বাংলাদেশ ছাড়াও এশিয়ার বিভিন্ন দেশ এবং ইউরোপ, দক্ষিণ আমেরিকাতেও দেখা যায়। পুরুষ হাঁসগুলোর দেহ বাদামী, ধূসর, সাদা ও কালো রঙের পালক দ্বারা আবৃত থাকে। লেজ একটু লম্বা হয়। আর মেয়ে হাঁসগুলোর দেহ প্রধানত হালকা বাদামী ও সাদা পালকে ঢাকা থাকে। লেজ ছোট হয়। এরা পানির কাছাকাছি ভেজাভূমিতে বাস করে। মাছ এদের প্রধান খাদ্য। এছাড়াও শেওলা, কীটপতঙ্গ, গেঁড়ি, শামুক ইত্যাদি খায়। এদের কোনো কোনো প্রজাতির ঠোঁট হলুদ হয়। সেগুলোকে ণবষষড়-িনরষষবফ চরহঃধরষ হাঁস বলে। রাজ হাঁস রাজ হাঁস এক বিশেষ প্রজাতির বড় ধরনের হাঁস। বিশাল আকৃতি এবং মাথায় হালকা মুকুট ধরনের থাকে। এরা আকারে যেমন বড় এদের গলাও বেশ বড়। এরা সাধারণ হাঁসের মতো শব্দ করে না, মানুষকে তাড়া করতে দেখা যায় ও দল বেধে চলাফেরা করে। রাজ হাঁসের বিভিন্ন প্রজাতি রয়েছে। তার মধ্যে নিম্নলিখিত প্রজাতিগুলো সাধারণত দেখা যায়Ñ ক. টুলুজ : ভারি প্রজাতির পাখি। ফরাসী দেশের পাখি। ভারি পাখিদের মধ্যে এরাই বেশি ডিম দেয়। তবে সব টুলুজ পাখি ডিমে তা দেয় না। ঠোঁট, পা কমলা রঙের। গলা, পেট এবং লেজ সাদা। পুরুষের ওজন ১৪ কেজি, স্ত্রী ৯ কেজি। তবে কালো রঙেরও দেখা যায়। আবার সাদা-কালো মেশানোও দেখা যায়। খ. এমডেন (ঊসনফবহ এড়ড়ংব) : জামার্নির হ্যানোভারে এই পাখি বেশি দেখতে পাওয়া যায়। ভারি জাতের পাখি। ডিমের সংখ্যা ভালো। অন্য প্রজাতির রাজ হাঁস থেকে বেশ ঠাণ্ডা। ঠোঁট জ্বলজ্বলে কমলা রঙের। পা ধবধবে সাদা পালকে ভরা। পুরুষের ওজন ১৪ কেজি, স্ত্রী ৯ কেজি। গ. চীনা {ঈযরহবংব এড়ড়ংব (অহংবৎ পুমহড়রফবং)} : চীনদেশের রাজ হাঁস। তবে চীন ছাড়াও রাশিয়া, জাপান, কোরিয়া, সাইবেরিয়া, তাজিকিস্থান, উজবেকিস্থান, তাইওয়ান, থাইল্যান্ডেও দেখা যায়। টুলুজ এবং এমডেন ছাড়া আকারে ছোট। সংখ্যায় বেশি ডিম দেয়- বছরে ৬০টির মতো। ডিমে তা দিতে অভ্যস্ত। দু’টি রঙয়ের চীনা রাজ হাঁস দেখা যায়। খয়েরি এবং সাদা। খয়েরি রঙা চীনা রাজ হাঁসের পা কমলা। ঠোঁট, পালকের রঙও খয়েরি। সাদা রঙের রাজ হাঁসের ঠোঁট এবং পা উজ্জ্বল কমলা রঙের। গায়ের পালক ধবধবে সাদা। ওপরের ঠোঁটের গোড়ার চামড়া ফুলের মতো গোল হয়ে থাকে। পুরুষের ওজন ৯ কেজি, নারীর ওজন ৮ কেজি। পাহারাদার হিসেবে চীনা রাজ হাঁসের সুখ্যাতি আছে। ঘ. বার্নাকল রাজ হাঁস {ইধৎহধপষব এড়ড়ংব (ইৎধহঃধ ষবঁপড়ঢ়ংরং)} : এদের মাথা, বুকের পালক সাদা ও পিঠের  পালক সাদা ও কালোতে মেশানো। ঙ. বন্য রাজ হাঁস {ঈধহধফধ এড়ড়ংব (ইৎধহঃধ পধহধফবহংরং)} : এদেরকে কানাডিয়ান রাজ হাঁসও বলে। প্রধানত দক্ষিণ আমেরিকাতে দেখা যায়। এর ঠোঁট, মাথা, গলা, লেজের পালক কালো; শরীরের পালক ধূসর রঙের আর চোয়ালে সাদা পালক আছে। এছাড়া আরো কিছু প্রজাতির রাজ হাঁস আছে। যেমন আফ্রিকান। অনুমান করা হয় এরা আদিতে ভারতীয়। কেউ বা বলেন চীনা এবং টুলুজের মধ্যে প্রজননের ফলে এদের সৃষ্টি হয়েছিল। হাঁস পালনের উপকারিতা বর্তমানে বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে হাঁস পালন একটি লাভজনক পেশা। অনেক পরিবারের জীবিকা এর উপর নির্ভর করে। নিচে হাঁস পালনের বিভিন্ন উপকারিতা তুলে ধরা হলোÑ ১.    হাঁসের ডিম ও গোশত প্রাণিজ আমিষের অন্যতম উৎস। ২.    হাঁসের ডিম ও গোশত বিক্রি করে পরিবারে বাড়তি আয়ের সুযোগ সৃষ্টি করা সম্ভব। ৩.    হাঁসের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি এবং প্রতিকূল পরিবেশে মানিয়ে চলতে পারে। ৪.    হাঁস ও মাছের চাষ এক সাথে করা যায়। ৫.    হাঁস হাওর-বিল, ডোবা-নালা ও ধানের জমিতে নিজেরা চরিয়ে খেতে পারে। এর ফলে হাঁসের প্রাকৃতিক খাবারের অভাব হয় না। ৬.    হাঁসের বিষ্ঠা ভালোমানের জৈব সার। হাঁস পালন পদ্ধতি সাধরণত তিন পদ্ধতিতে হাঁস পালন করা হয়। যথাÑ ক.    সম্পূর্ণ মুক্ত পদ্ধতি : এ পদ্ধতিতে প্রায় সারাদিন হাঁসকে মাঠের মধ্যে চরানো যায়। শুধু রাতে ঘরে রাখা হয়। খ.    সম্পূর্ণ আবদ্ধ পদ্ধতি : এ পদ্ধতিতে দিনরাত হাঁসকে ঘরের মধ্যে রাখতে হয়। ঘরের মধ্যেই পানি ও খাদ্যের ব্যবস্থা থাকে। গ.    অর্ধ আবদ্ধ-অর্ধমুক্ত পদ্ধতি : এ পদ্ধতিতে রাতে হাঁস ঘরে রাখতে হয়। দিনের বেলা কিছু সময় ঘরে এবং কিছু সময় বাইরে রাখার ব্যবস্থা করতে হয়। পানি ও খাদ্য এমনভাবে ভাগ করে দিতে হবে যেন কিছু ঘরে এবং কিছু বাইরে চরে খেতে পারে। রোগবালাই ও চিকিৎসা ১.    মড়কের হাত থেকে বাঁচাতে হাঁসকে নিয়মিত ওষুধ ও টিকা দিতে হয়। ২.    ডাকপ্লেগ, রানীক্ষেত, হেপাটাইটিস, কলেরা, সালমোনেলোসিস, মাইকোটক্রিকোসিস সমস্যা এবং ভিটামিনের অভাবজনিত রোগ ইত্যাদির ক্ষেত্রে প্রয়োজন অনুযায়ী টিকা এবং ওষুধ ব্যবহার করতে হয়। ৩.    হাঁসকে সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ভালো ও টাটকা খাবার দিতে হয়। ৪.    কেনলে পর কয়েকদিন আলাদা রাখতে হয়। ৫.    অসুস্থ হাঁসকে চিকিৎসা করার সময় ভালো বা সুস্থ হাঁস থেকে আলাদা রাখতে হয়। ৬.    আয়োসান, ফিনাইল, লাইজল ইত্যাদি দিয়ে ঘর ও জিনিসপত্র ধুতে হয় এবং মাঝে মাঝে রোদে শুকিয়ে রোগমুক্ত করতে হয়। হ

আপনার মন্তাব্য লিখুন
অনলাইনে কিশোরকন্ঠ অর্ডার করুন
লেখকের আরও লেখা

সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

আরও পড়ুন...

CART 0

আপনার প্রোডাক্ট সমূহ