পিকনিক

পিকনিক

তোমাদের গল্প আগস্ট ২০১৩

কাজী রিচি ইসলাম মীম, টুকু দুই বোন। ঘরে একা একা থাকতে ভালো লাগছিল না। তাই দুজনে বাইরে বেরুলো। সেখানে অনেক ছেলেমেয়ে খেলছে, দৌড়াদৌড়ি করছে। মীম এসে বলল ওর বন্ধুদের, টুশী, রাকীব, সৃষ্টি, পলাশ, টুকু- রোজ রোজ এক খেলা খেলতে ভালো লাগে না, চলো অন্য খেলা করি। পলাশ বলল, কী খেলা? মীম বলল, পিকনিক পিকনিক। রাকীব আনন্দে লাফিয়ে উঠে বলল, বাহ, পিকনিক। ভারি মজা ভারি মজা! পলাশ মুখটা একটু শুকনো করে বলল, কিন্তু তার জন্য তো টাকা লাগবে। মীম তক্ষুনি সমাধান দিল। বলল, আরে না, টাকা লাগবে না। যার যার বাড়িতে গিয়ে আম্মু বা বড় ভাইবোনদের কাছ থেকে কিছু খাবার আনলেই হয়ে যাবে। তারপর যা ব্যবস্থা হবে। সবাই খুব খুশি হলো ওর কথায়। তাই আনন্দে লাফাতে লাফাতে যে যার যার বাসায় গেল। মীম বাড়ি গিয়ে মাকে বলল, আম্মু, আমরা পিকনিক করবো, আমাকে তুমি কিছু খাবার দিবে। বন্ধুরা মিলেমিশে খাব। মীমের মা বললেন, তাই নাকি? খুব ভালো কথা। তা তোমরা ক’জন? মীমের খুশি দেখে কে! আম্মু রাজি হয়ে গেছেন। তাই বলল, এই তো ৫-৬ জন। মীমের মা মীমকে এক ডজন কমলা আর ৭টি ডিম সিদ্ধ দিলেন। রাকীব বাসায় বড় বোনকে বলল, আপু, আমাকে কিছু খাবার দিবে? আমরা বন্ধুরা মিলে পিকনিক করবো। রাকীবের বড় বোন চিন্তায় পড়ে গেল। তারপর বলল, ভালো কথা তোমরা একসাথে খাবে। এক কাজ করো,  কাল  ছোট চাচা আমাদের জন্য যে আইসক্রিমের বক্স এনেছেন সেটা নিয়ে যাও। সবাই মিলে আনন্দ করে খাবে। ঝগড়া করিসনে আবার! এ দিকে পলাশ বাড়িতে গিয়ে দেখলো বাড়িতে ওর মা নেই। কী একটা কাজে বাইরে গেছেন। বাবা মাত্র অফিস থেকে এসেছেন। উপায় না দেখে তাই পলাশ বাবাকেই বলল, বাবা বাড়িতে একটা বিস্কুটের প্যাকেট আছে, এটা নিয়ে যাই? আমরা সব বন্ধুরা পিকনিক করবো। পলাশের বাবাও বেশ খুশি হলেন। বললেন, তাই নাকি, তোমরা পিকনিক করবে? তাহলে, বিস্কুটের প্যাকেট আর জুসের একটা বোতল কিনে নিয়ে যাও। যার যার বাড়ি থেকে যে যা পেল তাই নিয়ে মীম, পলাশ, রাকীব, টুকু সবাই আগের জায়গায় চলে এলো। যে যা এনেছে তা দেখালো। সবাই খুশি। যাক, পিকনিকটা বেশ জমবে। মীমকে সবাই-ই ধন্যবাদ জানাতে লাগল সুন্দর এই বুদ্ধিটা দেয়ার জন্য। সবেমাত্র খাবার মুখে দেবে এর মধ্যে পলাশ দেখতে পেল দুটি শিশু পেপার বিক্রি করছে। ঐ দূরে দেখতে পাচ্ছে এক মাঝবয়সী মহিলা বসে আছে তার ছোট শিশুকে নিয়ে। পলাশ বলল, এই টুকু, আমি একটা কথা বলি রে। টুকু জানতে চাইলো, বলো কী বলবে? পলাশ তখন বলল, আমরা এতো আনন্দ করে এতো মজার মজার খাবার খাচ্ছি আর দেখ ওদের কতো কষ্ট। আমাদের এখানে তো অনেক খাবার, ওদের ডাক দে না, সবাই মিলে খাই! মীম খুশিতে লাফিয়ে উঠল। ওর মনটা সবার মধ্যে সবচেয়ে নরম। বলল, খুব ভালো কথা। টুকু, রাকীব তোরা এখানে বসে থাক, আমরা ওদেরকে যেয়ে বলি দেখি ওরা আসে কি না। পলাশ, চলো। মীম-পলাশ ওদেরকে বলা মাত্রই ওরা রাজি হলো। সঙ্গে মীমদের বাড়ির কাজের মেয়েটাকেও নিয়ে এলো। তারপর সবাই মিলে খেল খুব মজা করে। ওরা খুব আনন্দ করে খেয়েছে। এই পিকনিকে মীমদের বাসার কাজের মেয়ে, শিশু পেপার বিক্রেতা, মহিলাটি আর তার ছোট্ট শিশুটি আসতে পেরে মহাখুশি।

আপনার মন্তাব্য লিখুন
অনলাইনে কিশোরকন্ঠ অর্ডার করুন
লেখকের আরও লেখা

সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

আরও পড়ুন...

CART 0

আপনার প্রোডাক্ট সমূহ