পবিত্র ঈদুল ফিতর    -ইকবাল কবীর মোহন

পবিত্র ঈদুল ফিতর -ইকবাল কবীর মোহন

বিশেষ রচনা জুন ২০১৭

আল্লাহ তাআলার এই বিশাল পৃথিবীতে অনেক জাতি ও গোষ্ঠীর বাস। নানা জাতির নানা রকমের জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতি লক্ষ করা যায়। তাদের রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন ধরনের উৎসব বা পর্ব। প্রত্যেক জাতির নিজেদের বিশেষ বিশেষ কিছু উৎসব রয়েছে। এসব উৎসব বা পর্ব ঐসব জাতির পরিচয় বহন করে। কোনো কোনো জাতির লোকেরা নিছক আনন্দ পাবার জন্য উৎসব পালন করে। কেউবা ঐসব জাতির বা গোষ্ঠীর স্বার্থগত বা ঐতিহ্যগত পরিচয় প্রকাশের জন্য উৎসব পালন করে। কোন কোন ধর্মের লোকেরাও তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদি নিজ নিজ ধর্মের ঐতিহ্যের আলোকে পালন করে থাকে। তবে অধিকাংশ ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান এখন নিছক আনন্দ উপভোগের পর্যায়ে নেমে এসেছে। ইসলামী সংস্কৃতির অনন্য উৎসব ঈদ। বুখারি ও মুসলিম শরিফে বর্ণিত হয়েছে, মহানবী (সা) বলেছেন, ‘প্রত্যেক জাতিরই উৎসব রয়েছে। আমাদের উৎসব হলো ঈদ।’
ঈদ উৎসব মুসলমানদের জাতীয় খুশির দিন। এটি চিরাচরিত কোনো পর্ব নয়। অন্যান্য জাতির পর্ব বা উৎসব থেকে তা সম্পূর্ণ আলাদা। এই উৎসব না কোনো গোষ্ঠীগত স্বাতন্ত্র্য প্রকাশ করার জন্য পালন করা হয়, না কোনো ঐতিহাসিক ঘটনার স্মরণে পালন করা হয়। বরং মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ইবাদত হিসেবে পালিত হয় এই উৎসব। কারো ব্যক্তিগত উৎসাহ বা চিন্তাভাবনা থেকে এই উৎসব উৎসারিত নয়। বরং শুধু আল্লাহর নির্দেশ হিসেবে চলে আসছে এসব পর্ব। ইসলামে ঈদ উৎসবের মূল লক্ষ্য মানুষের আত্মসংশোধন এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন।

ইসলামে ঈদ এসেছে
আল্লাহর পক্ষ থেকে
ইসলামে বছরে দু’টি ঈদ উৎসব পালিত হয়। একটি ঈদুল ফিতর। এটি রমজানের পূর্ণ এক মাস রোজা পালন করার পর পালিত হয়। অন্যটি ঈদুল আজহা। এটি হজ বা কুরবানি উপলক্ষে পালন করা হয়। ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে খুশি। তবে ঈদের শাব্দিক অর্থ বারবার আসা। বছরে সময়ের ব্যবধানে ঈদ বারবার ফিরে আসে বলে এর এ রকম নামকরণ করা হয়েছে। ঈদ নিয়ে একটি ঐতিহাসিক ঘটনা রয়েছে। আবু দাউদ শরিফে বর্ণিত হয়েছেÑ হজরত আনাস (রা) বলেন, মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা) যখন মদিনায় হিজরত করেন তখন সেখানকার লোকেরা দু’টি দিনকে বিশেষ দিন বা পর্ব হিসেবে পালন করত। ঐ বিশেষ দিনে তারা খেলাধুলা ও আমোদ-ফুর্তি করে সময় কাটাত। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা) লোকদেরকে জিজ্ঞেস করলেন, এ দু’টি দিন কী? তোমরা এই দু’টি দিন কেন পালন করছ? তখন লোকেরা বলল, এ দু’টি দিন জাহিলিয়াতের যুগে লোকেরা পালন করত। সেই থেকে এখনও আমরা দিন দু’টি পালন করছি। তখন রাসূল (সা) বললেন, আল্লাহতাআলা তোমাদেরকে এগুলোর বদলে দু’টি মহান দিন উপহার দিয়েছেন। এগুলো হচ্ছে, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা।
তখন থেকেই পালিত হচ্ছে এই দু’টি ঈদ উৎসব। বছরের নির্দিষ্ট দিনে আল্লাহর পক্ষ থেকে সরাসরি বরকত ও মঙ্গলময় দিন হিসেবে ঈদ মুসলিম সমাজে পালিত হচ্ছে। দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ ও মুক্তির দিন হিসেবে ঈদ পর্ব দু’টি আমাদের জীবনকে গৌরবান্বিত করেছে।

ঈদুল ফিতরের অর্থ ও তাৎপর্য
আমরা আগেই বলেছি, ঈদ মানে আনন্দ। আর ফিতর মানে ভঙ্গ করা, বিরতি দেয়া। অতএব, ঈদুল ফিতর মানে রোজা থেকে বিরতি দেয়ার আনন্দ। এটি মুসলিম জীবনে একটি অনন্য দিন। এক মাস রোজা পালনের পর আসে এই ঈদ। শাওয়াল মাসে প্রথম তারিখে পালিত হয় ঈদুল ফিতর। সারা রমজান মাস কষ্ট করে রোজা রাখার পর এ দিন আমরা রোজা না রেখে আনন্দ করি। রোজা পালনের মাধ্যমে মুসলমানরা নিজেদের পাপ ও পাশবিক প্রবৃত্তি দমন করে থাকে। তারপরই উৎসব হিসেবে পালন করে ঈদ। মহানবী (সা) বলেছেন, ‘ঈদুল ফিতরের দিন আল্লাহ রোজাদারের সব গুনাহ মাফ করে দেন। স্বাভাবিকভাবেই বলা যায়, উৎসব পালনের মাধ্যমে মুসলমানরা আখিরাতে নাজাত পাবার প্রয়াস পায়। দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার মধ্য দিয়ে তারা যে গুণাবলি ও প্রশিক্ষণ অর্জন করে ঈদ উৎসব পালনের মাধ্যমে মুসলমানরা তাকে পরিপূর্ণ করে। এই উৎসব মানুষে মানুষে তৈরি বিভেদের প্রাচীর ভেঙে চুরমার করে দেয়। ধনী-গরিব, আশরাফ-আতরাফ, রাজা-প্রজা, মালিক-শ্রমিকের ব্যবধান দূর করে এই ঈদ। মানুষ উঁচু-নিচু ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে এদিন সমান্তরাল হয়ে যায়। ঈদের দিনটি একজন মুমিনের জন্য বড় আনন্দের দিন। পরম প্রাপ্তির দিন। এদিন মানুষ পূত-পবিত্র হয়ে আবার নতুনভাবে প্রস্তুত হয় সামনের বছরটি অতিবাহিত করার তাগিদ নিয়ে। হজরত সাদ বিন আওস আনসারী (রা) থেকে বর্ণিত আছে, মহানবী (সা) বলেছেন, ঈদুল ফিতরের দিন ফেরেশতারা রাস্তার প্রতিটি গেটে দাঁড়িয়ে যায় এবং মুসলমানদেরকে ডেকে বলে, ‘হে মুসলমানগণ! তোমরা তোমাদের সেই পরম দাতা প্রভুর দিকে চল যিনি নিজ কৃপায় তোমাদেরকে শান্তি ও মঙ্গলের শিক্ষা দেন, তার ওপর আমল করার শক্তি দেন, অতঃপর এর ওপরই তোমাদেরকে পুরস্কৃত করেন। তোমাদেরকে তিনি রাতে নামাজে দাঁড়াবার হুকুম করেছেন তোমরা তা পালন করেছ। তিনি তোমাদেরকে দিনের বেলায় রোজা রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন তোমরা তাও পালন করেছ। তিনি তোমাদেরকে আরো যেসব হুকুম করেছিলেন তোমরা তা পালন করেছ। অতএব, এখন তোমরা সেই মহানদাতা আল্লাহতাআলার সাথে সাক্ষাৎ করে ঐসব ইনাম ও পুরস্কারাদি নিয়ে এসো যা তিনি তোমাদের ঐ সমস্ত পুণ্য কর্মের ওপর নির্ধারণ করে রেখেছেন।’ অতঃপর যখন মুসলমানরা তাদের নামাজ শেষ করে তখন একজন আহবায়ক তাদেরকে এই বলে আহ্বান জানাতে থাকে : ‘তোমরা ভালোভাবে জেনে রাখ, নিঃসন্দেহে তোমাদের প্রভু তোমাদেরকে যথাযথভাবে পুরস্কৃত করেছেন, অতএব এখন তোমরা শান্তি ও মঙ্গলে ধন্য হয়ে নিজ নিজ ঘরে ফিরে যাও। অতএব, ঈদের দিন প্রতিদান ও পুরস্কার লাভের দিন। এ কারণে আসমানেও এ দিনের নাম ‘ইয়ামুল জায়িযাহ’ বা ইনাম প্রাপ্তির দিন। (তাবরানি)
ঈদ উৎসব শুরু হয় মহান আল্লাহর প্রতি ‘তাকবির’ বা তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণার মধ্য দিয়ে। আর এই ‘তাকবির’ সালাতুল ঈদ সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত ঘোষিত হতে থাকে। হজরত ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত রাসূল (সা) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ঈদের চাঁদ দেখবে তার উচিত পরের দিন ইমাম ঈদগাহে উপস্থিত না হওয়া পর্যন্ত যেন তাকবির পড়ে।’ হজরত আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত হয়েছে, মহানবী (সা) বলেছেন, ‘তোমরা তোমাদের ঈদগুলোকে ‘তাকবির’ (আল্লাহু আকবার ধ্বনি) দ্বারা সুসজ্জিত করো।’
তাকবির অর্থ হচ্ছে আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব বর্ণনা করা। তাকবিরের ভাষা হচ্ছে : আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ। এর অর্থ হচ্ছে : ‘আল্লাহ শ্রেষ্ঠ, আল্লাহ শ্রেষ্ঠ, আল্লাহ ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই। আল্লাহ শ্রেষ্ঠ, আল্লাহ শ্রেষ্ঠ, আল্লাহর জন্যই সকল প্রশংসা।’ ঈদ উৎসবের অন্যতম পর্ব হচ্ছে দু’রাকাত নামাজ আদায় করা। এখানেও উচ্চারিত হয় আল্লাহ তালার শ্রেষ্ঠত্ব ‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনি। ঈদ উৎসব শুধু ধনী বা সম্পদশালী মানুষের জন্য নয়। মুসলিম সমাজের প্রতিটি মানুষ এতে অংশ নেয়। গরিব-দুঃখী অসহায় সবাই সমানভাবে ঈদ উৎসব পালন করে। তারা একসাথে ঈদগাহে যায়। একই কাতারে এক ইমামের পেছনে ঈদের সালাত আদায় করে। সুতরাং ঈদের এই উৎসব শুধু আনন্দ উৎসব নয়, বরং এটি একটি তাৎপর্যপূর্ণ উৎসব যা ইবাদতের শামিল।

ঈদুল ফিতরের গুরুত্ব
ঈদুল ফিতর মুসলমানদের জীবনে বছরে একবার আসে। রমজানের রোজা পালন এবং ঈদ উৎসব উদযাপনের মাধ্যমে মুসলমানরা তাদের জীবনের সকল পাপ মোচনের সুযোগ পায়। এ জন্য এই দিনের গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য অপরিসীম। এদিন আমরা আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী সবার খোঁজ-খবর নেই। সবাইকে আপ্যায়ন করি। এতে পারস্পরিক সম্পর্ক বৃদ্ধি পায়। ফলে গড়ে ওঠে ঐক্য ও সংহতির এক বেহেশতি পরিবেশ। এদিন আমরা ফিতরা আদায় করি। ফলে গরিব যারা তারাও আমাদের সাথে ঈদের আনন্দ উপভোগ করার সুযোগ পায়। এদিনে ধনী-গরিব সকলে ঈদগাহে এক কাতারে শামিল হয়ে আল্লাহর কাছে মুনাজাত করি। ফলে ধনী-গরিবের ব্যবধান ঘুচে যায়। ঈদুল ফিতরের দিন ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবাই নতুন পোশাক পরিধান করে। ঘরে ঘরে শিরনি-পোলাও, কোরমা-কোপতাসহ নানা রকমের খাবারের আয়োজন হয়। বছরের এই দিনটিতে মনের সুখে সবাই খাবার খায়। এদিন সবার মনে থাকে অনাবিল সুখ ও মুখে ফুটে তৃপ্তির হাসি। এই হাসিখুশি ও খোলামেলা পরিবেশ আমাদের সমাজকে করে কলুষমুক্ত। আমরা একদিনের জন্য হলেও বুক ভরে শান্তির নিঃশ্বাস নেই। আর এই সুখ ও আনন্দ সারা বছরজুড়ে আমাদেরকে উজ্জীবিত রাখে। তাই ঈদুল ফিতরের মহিমা অনন্য।
ঈদুল ফিতরে করণীয়
এদিন দু’টি কাজ করা ওয়াজিব। একটি ফিতরা আদায় করা। এই দিনে ধনীদের পক্ষ থেকে গরিব-দুঃখীদের জন্য নির্ধারিত পরিমাণ দান করাকে আবশ্যক করা হয়েছে। একে সাদাকাতুল ফিতর বলা হয়। বুখারি শরিফের এক হাদিসে বর্ণিত ইবনে উমার (রা) বলেছেন, রাসূল (সা) জাকাতুল ফিতরকে অত্যাবশ্যক করেছেন। এবং সালাতের আগেই তা দিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।’
এদিন আরেকটি ওয়াজিব কাজ হলো ঈদের সালাত আদায় করা। ঈদের দিন ছয়টি অতিরিক্ত তাকবির সহকারে দু’রাকাত সালাত আদায় করা ওয়াজিব। খোলা ময়দানে ঈদের নামাজ পড়া উত্তম। মসজিদেও এই নামাজ আদায় করা যেতে পারে। মহানবী (সা) শুধুমাত্র একবার বৃষ্টির কারণে মসজিদে সালাতুল ঈদ আদায় করেছেন। ঈদের সালাতের সময় সূর্যোদয়ের পর থেকে সূর্য মাথার ওপর আসা পর্যন্ত বলবৎ থাকে। এ ছাড়া ঈদের দিন আরো কয়েকটি সুন্নাত কাজ রয়েছে। ঈদের ইবাদতকে অর্থবহ করার জন্য প্রস্তুতিমূলক এই সুন্নাত কাজগুলো পরিপালনে সবাইকে নজর দিতে হবে। এসব সুন্নাত কাজগুলো হলো : ১. তাকবির পাঠ : শাওয়ালের চাঁদ দেখার পর থেকে শুরু করে সালাতুল ঈদের খুতবা শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত যথাসম্ভব তাকবির পাঠ করা উত্তম। তাকবিরটি হচ্ছে : আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ। অর্থ হচ্ছে : আল্লাহ শ্রেষ্ঠ, আল্লাহ শ্রেষ্ঠ, আল্লাহ ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই। আল্লাহ শ্রেষ্ঠ, আল্লাহ শ্রেষ্ঠ, আল্লাহর জন্যই সকল প্রশংসা। ২. গোসল করা, সুগন্ধি ব্যবহার এবং সুন্দর পোশাক পরিধান করা : হজরত হাসান ইবনে আলী তার পিতা আলী (রা)-এর সূত্রে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন, রাসূল (সা) আমাকে দুই ঈদে সর্বোত্তম পোশাক পরিধান এবং সর্বোত্তম সুগন্ধি ব্যবহার করতে নির্দেশ দিয়েছেন। অন্যত্র বলা হয়েছে, ইবনে উমার (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসূল (সা) ফিতরের দিন সকাল হওয়ার পূর্বে গোসল করতেন।’ ৩. ঈদের সালাতের আগে খাবার গ্রহণ : ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায়ের আগে কোন কিছু আহার করা উত্তম। তবে খেজুর খাওয়া সুন্নাত। আনাস (রা) বর্ণনা করেন, ‘রাসূল (সা) খেজুর খাওয়া ব্যতীত ফিতরের দিন অতিবাহিত করতেন না।’ ৪. চলার পথ পরিবর্তন করা : ঈদগাহে এক পথে যাওয়া এবং অন্য পথে ফিরে আসা সুন্নাত। জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা) বলেন, ‘রাসূল (সা) ঈদের দিন ভিন্ন ভিন্ন পথে চলতেন।’ ৫. খুতবা শ্রবণ : ঈদুল ফিতরের দিন সালাত শেষে ইমামের খুতবা শ্রবণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আবু সাঈদ খুদরি (রা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, ‘রাসূল (সা) ঈদুল ফিতর ও আজহায় বের হতেন এবং প্রথমে সালাত আদায় করে বসে থাকা জনগণের দিকে ফিরতেন, তিনি তাদেরকে উপদেশ দিতেন, দিকনির্দেশনা দিতেন।’ ৬. পারস্পরিক শুভেচ্ছা বিনিময় : যুবাইর ইবনে নুফায়ির (রা) বলেন, ‘রাসূল (সা)-এর সাহাবীগণ ঈদের দিন পারস্পরিক শুভেচ্ছা বিনিময় করতেন।’ ৭. বৈধ বিনোদন : ঈদের দিন বৈধ খেলাধুলা বাজনাবিহীন গান করায় কোনো আপত্তি নেই। হজরত আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, ‘ঈদের দিন হাবশার লোকেরা রাসূল (সা)-এর উপস্থিতিতে খেলা করতেন। আমি রাসূল (সা)-এর কাঁধের ওপর ভর দিয়ে তাদের খেলা দেখতাম।’

উপসংহার
ইসলামের প্রতিটি বিধানের তাৎপর্য রয়েছে। আল্লাহপাক তার বান্দাদের প্রশিক্ষণ ও মঙ্গলের জন্য বিভিন্ন বিধান ও অনুশাসন চালু করেছেন। ঈদও আমাদেরকে অনুপম শিক্ষা প্রদান করে। আনন্দ উপভোগের পাশাপাশি ঈদ আমাদেরকে পাপমুক্ত করে এবং একটি সুন্দর জীবন দান করে। সমাজের মানুষের মধ্যে ঈদ একটি পবিত্র সম্পর্ক গড়ে তুলে, দেয় ঐক্য ও সংহতির শিক্ষা, পারস্পরিক দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে মানুষে মানুষে সহমর্মিতা প্রকাশের একটি মাধ্যম হলো ঈদ। আমরা ঈদুল ফিতরের তাৎপর্য অনুধাবন করে এই উৎসব থেকে ফায়দা লাভ করতে সমর্থ হই- এই কামনা করছি। আমিন।
                        
আপনার মন্তাব্য লিখুন
অনলাইনে কিশোরকন্ঠ অর্ডার করুন
লেখকের আরও লেখা

সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

আরও পড়ুন...

CART 0

আপনার প্রোডাক্ট সমূহ