জিসানের স্বপ্ন

জিসানের স্বপ্ন

তোমাদের গল্প জুন ২০১৩

মো: শাহাদাত হোসেন

জিসানের আব্বা বনবিভাগের একজন সিনিয়র অফিসার। গত বছর ডিসেম্বর মাসে তার চাকরি বগুড়া থেকে রাজশাহীতে স্থানান্তরিত হয়েছে। বাবার চাকরির কারণে জিসানকে এবার প্রিয় স্কুল ত্যাগ করতে হবে। বছরের শুরুতেই বাবা রাজশাহীর তালাইমারীতে একটা বাসা ঠিক করলেন। এবার নতুন বাসায় ওঠার পালা। পরিবারের সবাই ৫ জানুয়ারি নতুন বাসায় উঠল। জিসানকে এবার নতুন স্কুলে ভর্তি হতে হবে। কিন্তু তারা রাজশাহীর স্কুল সম্বন্ধে কিছুই জানে না। অফিসের এক জুনিয়র কর্মকর্তা জিসানকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্কুলে ভর্তি করার জন্য পরামর্শ দিলেন। যাহোক জিসানকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্কুলেই ভর্তি করা হলো। স্কুল কাছে হওয়ায় সে বাসা থেকে রিকশায় যাতায়াত করে। বাসা থেকে স্কুল আসতে রিকশায় ১০ টাকা লাগে। কিন্তু রাস্তায় ভিড়ের কারণে সময় একটু বেশি লাগে। নতুন স্কুলে ভর্তি হলেও জিসানের মনে কোন ভয় থাকে না। কারণ তাদের এলাকার অনেকেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করে। বিকেল বেলা খেলাধুলা আর সন্ধ্যায় পড়ালেখার মধ্য দিয়েই জিসানের দিন অতিবাতি হতে লাগল। তবে স্কুলে কেন যেন সে শূন্যতা অনুভব করল। এখানে আশপাশে কোন গাছ নেই। আবহাওয়া কেমন যেন খারাপ মনে হয়। ফুলের গাছ না থাকায় স্কুলের সৌন্দর্য ফুটে ওঠে না। সে স্কুলের দিকে শুধু তাকিয়ে থাকে আর এখানকার পরিবেশ কিভাবে সুন্দর করা যায় তার স্বপ্ন দেখে। স্কুল থেকে বাসায় ফিরলে বাবা জিসানকে চিন্তিত দেখে জিজ্ঞেস করলেন। জিসান স্কুলের পরিবেশ সম্বন্ধে বাবাকে বিস্তারিত বলল। পরদিন স্কুলে গেলে বাংলার কামরুল স্যার ক্লাসে জিসানের আনমনা ভাব লক্ষ করলেন। এক সময় জিসানকে দাঁড় করিয়ে তার বিষয়ে জানতে চাইলেন। উত্তরে সে বলল কিছুুই না স্যার। বাংলা ক্লাস শেষে জিসান তার বন্ধু রাহাতকে নিয়ে বাংলা স্যারের কাছে গেল। স্কুলে গাছ লাগিয়ে চারপাশের পরিবেশ কিভাবে সুন্দর করা যায় তা স্যারের কাছে উপস্থাপন করল। বাংলা স্যার আগে থেকেই জানতেন জিসানের আব্বা বনবিভাগের একজন সিনিয়র অফিসার। জিসান ও রাহাতকে বনবিভাগের প্রধান বরাবর একটা দরখাস্ত লেখার পরামর্শ দিলেন। দরখাস্ত লেখা শেষে স্যার নিজেই অধ্যক্ষ স্যারের সুপারিশ যুক্ত করলেন। এবার জিসানকে এটি পৌঁছানোর জন্য তার আব্বুর সাথে যোগাযোগ করতে বললেন। বাসায় ফিরে জিসান এটি আব্বুকে বনবিভাগের অফিসে পৌঁছে দিতে বলল। আব্বু পরদিন দরখাস্তটি ঠিক জায়গায় পৌঁছে দিলেন। ঠিক ক’দিন পরই বনবিভাগ থেকে স্কুলে গাছ পাঠনো হলো। ফলদ, বনজ ঔষধি গাছ দেখে অধ্যক্ষ স্যার খুশি হলেন। স্যার জিসানকে প্রধান করে স্কুলের চারপাশে ও রাস্তার ধারে ফলজ-বনজ এবং ভেতরের দিকে ফুলের গাছ লাগানোর নির্দেশ দিলেন। যতœ নেয়ার জন্য স্কুলের মালিদের নির্দেশ দেয়া হলো। ঠিক সময়ে পানি ও সার দেয়ায় গাছগুলো সময়ের সাথে সাথে বাড়তে থাকলো। স্কুলের ভেতরের দৃশ্য দিন দিন সুন্দর হতে লাগলো। বাইরের দিকে বের হলে এখন সুন্দর বাতাস এসে গায়ে দোলা দেয়। স্কুলের যে পরিবেশ এখন তৈরি হয়েছে এমন স্বপ্নই জিসান দেখেছিল। জিসান এখন গর্বিত তার স্বপ্ন সত্যি হয়েছে বলে। হ

আপনার মন্তাব্য লিখুন
অনলাইনে কিশোরকন্ঠ অর্ডার করুন
লেখকের আরও লেখা

সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

আরও পড়ুন...

CART 0

আপনার প্রোডাক্ট সমূহ