চিরসবুজ ঈদ

চিরসবুজ ঈদ

কুরআনের আলো বিলাল হোসাইন নূরী এপ্রিল ২০২৪

উপহারটা একটু দেরিতেই হাতে এলো।

এ ঠিক উপহার নয়, বার্ষিক পরীক্ষায় প্রথম হওয়ার পুরস্কার। দেরি হয়ে বরং ভালোই হলো। ঈদের চাঁদের সাথে যোগ হলো আরেকটি ঈদের চাঁদ! দুই ঈদের খুশিতে নূহ্ যেন হাওয়ায় উড়ছে। তার পা যেন মাটিতেই পড়ছে না। ঈদের দিন সকালে সবাইকে ডেকে ডেকে বলছে- এই, দেখো! দেখো! বড়ো মামা বিদেশ থেকে আমার জন্য কী পাঠিয়েছেন! এ মুহূর্তে তার মতো সুখী মানুষ যেন আর কেউ নেই।

বাবা-মা দূর থেকে উপভোগ করছেন তার আনন্দ!

মা বলছেন, দেখো! ছেলেটা কত খুশি হয়েছে। পরীক্ষার ফল পাওয়ার পরও সে এভাবেই সবাইকে বলে বেড়িয়েছিল। বাবা-মাও নূহের আনন্দে শরিক হলেন। অনেক অনেক দোয়া করলেন তাকে। মা বললেন, তোমার জীবনে এমন অসংখ্য ঈদ আসুক। বাবা বললেন, তোমার জীবনের শেষদিনেও এমন ঈদ আসুক, এমনকি হাশরের মাঠেও!

হাশরের মাঠে? বাবা! হাশরের মাঠে তো সবাই বিচলিত থাকবে শুনেছি। সেদিন আবার কীসের ঈদ! বাবা বললেন, তুমি আজ যেভাবে সবাইকে তোমার উপহার দেখিয়েছো, সেদিনও কিছু মানুষ এমন করবে! “যার আমলনামা তার ডান হাতে দেওয়া হবে, সে বলবে- ‘এই নাও! আমার আমলনামা পড়ে দেখো! আমি জানতাম, আমাকে আমার হিসাবের মুখোমুখি হতে হবে।’ অতঃপর সে এক আনন্দময় জীবনযাপন করবে। সুমহান জান্নাতে! যার ফলরাশি ঝুলে থাকবে নাগালের মধ্যে। বলা হবে- খাও এবং পান করো তৃপ্তির সাথে, তোমরা অতীত দিনে যা করেছিলে তার বিনিময়ে।” (সূরা আল-হাক্কাহ্: ১৯-২৪)

এ আনন্দই তো প্রকৃত আনন্দ! চিরসবুজ ঈদ! এর জন্য প্রয়োজন ঈমান আর নেক আমল।

সুবহানাল্লাহ! বাবা! যাদের আমলনামা বাম হাতে দেওয়া হবে, তারা কী বলবে সেদিন? 

বাবা বললেন, পৃথিবীতে কেউ অকৃতকার্য হলে যা ভাবে, তা-ই! ভাবে, এ ফল যদি কখনোই প্রকাশ না পেতো! কুরআন থেকেই শোনো- “যার আমলনামা তার বাম হাতে দেওয়া হবে, সে বলবে- ‘হায়, আমাকে যদি আমার আমলনামা না দেওয়া হতো! এবং আমি যদি না জানতাম আমার হিসাব! হায়, আমার মৃত্যুই যদি আমার শেষ হতো!” (সূরা আল-হাক্কাহ : ২৫-২৭)

নূহ্ বললো, নাউজুবিল্লাহ! বাবা, আমি পৃথিবীর সবকিছুতে বিফল হলেও আখিরাতে বিফল হতে চাই না! সেদিনের খুশি আমি চাই-ই!

আল্লাহ কবুল করুন, বললেন বাবা।

আপনার মন্তাব্য লিখুন
অনলাইনে কিশোরকন্ঠ অর্ডার করুন
লেখকের আরও লেখা

সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

আরও পড়ুন...

CART 0

আপনার প্রোডাক্ট সমূহ