চায়ের রাজ্যে চায়ের রাজধানীতে

চায়ের রাজ্যে চায়ের রাজধানীতে

ভ্রমণ দেওয়ান মোহাম্মদ শামসুজ্জামান মে ২০২৩

শ্রীমঙ্গল যাবার স্বপ্ন সফল হল হঠাৎই। ঢাকার কমলাপুর স্টেশন থেকে সাড়ে পাঁচ ঘণ্টার রেলপথ পাড়ি দিয়ে পৌঁছলাম শ্রীমঙ্গল স্টেশনে,  বেলা সাড়ে এগারোটায়। শ্রীমঙ্গল স্টেশন শহর নিয়ে আগে থেকে আমার কোনো ধারণা ছিল না। সুতরাং প্রথমেই  হোঁচট খেলাম। আর দশ পাঁচটা স্টেশন শহরের মতোই সাদামাটা শহর। ছোট ছোট দোকানপাট, বাজার-ঘাট, খাবার হোটেল চা দোকান, হকার কুলি ভিখেরি সব নিয়ে এক ঘিঞ্জি শহর। দমবন্ধ হবার মতো অবস্থা। সুতরাং সময় নষ্ট না করে দ্রুত সটকে পড়লাম। সি.এন.জি নিয়ে রওনা দিলাম। গন্তব্য শহর থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে হোটেল গ্র্যান্ড সুলতানে। সিট বুকিং দেবার সময়ই শুনেছি এ পাঁচ তারকার হোটেলটি শুধু বৃহত্তর সিলেট জেলার মধ্যেই শ্রেষ্ঠ নয়, বিশ্ব মানের অন্যান্য পাঁচ তারকা হোটেলগুলোর সমকক্ষ। সি.এন.জি ছুটে চলেছে পিচ ঢালা সড়ক বেয়ে এঁকে বেঁকে। কিছুদূর যেতে না যেতে আচমকা পাল্টে গেল দৃশ্যপট। সামনে অফুরন্ত সবুজের সমারোহ। যতদূর দৃষ্টি যায় শুধু সবুজ আর সবুজ, চা বাগানে মোড়া সবুজ পাহাড়। কাছাকাছি হতেই আমার চোখে অপার বিস্ময়। চারদিকে ছোট ছোট পাহাড়, পাহাড়ের ঢাল, কিন্তু সব খানেই ঢেউ খেলানো চা বাগান। এ যেন এক রূপকথার সবুজ স্বপ্নপুরী। অবশ্য ছায়া দেবার জন্য সারি সারি ইউক্যালিপটাস জাতীয় গাছ আছে, কোথাও কোথাও আবার রাবারের বাগানও আছে। তবে চা গাছের সবুজের কাছে এসব বনানী একাকার ম্লান, একেবারে ফিকে। চায়ের ইতিহাসের দিকে আলোকপাত করলে দেখা যায় চীন দেশে সর্বপ্রথম চায়ের ব্যবহার শুরু হয়েছিল। তারপর পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে এবং বাগানও গাড়ে উঠে। সে সূত্রে শ্রীমঙ্গলে চা বাগানগুলো গড়ে উঠেছে ব্রিটিশ আমলে, ১৮৫৪ সালে তারপর কেটে গেছে অনেক সময়। সুতরাং এখানকার চা গাছগুলো দেখতে ছোট ছোট ঝাঁকড়া ঝোপ ঝাড়ের মতো দেখালেও এগুলোর অধিকাংশের বয়স একশ থেকে দেড়শ বছরের মতো। অর্থাৎ এদেরকে একশ বছরের বনসাই চলা চলে। শুধু পার্থক্য এদের পাতা বনসাই পাতার মতো ছোট নয়। দুটো পাতা ও একটা কুঁড়ি তুলে নেবার পর যখন পর্যাপ্ত পরিমাণ কচিপাতা থাকে না, তখন এগুলোকে কেটে ছেঁটে ন্যাড়া করে দেওয়া হয়। তারপর আবার গজায় নতুন পাতা ও কুঁড়ি। জানা যায় শ্রীমঙ্গলে প্রায় ১৫০টি চা বাগান আছে। এর মধ্যে তিনটি বাগান আবার পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বড়। ফিনলে, ন্যাশনাল, নূরজাহান, ইস্পাহানী কত রকমের না চা কোম্পানি জেঁকে বসেছে এখানে।

চা বাগানগুলো পেরিয়ে অবশেষে পৌঁছিলাম গ্র্যান্ড সুলতান হোটেলে। আসলে এটি একটি টি রিসোর্ট। চারদিক পাহাড়ে ঘেরা, মাঝে হোটেল। ঢালে ঘন সবুজ চায়ের গলিচা, উঁচু উঁচু গাছপালা, গালফ খেলার মাঠ, হেলিপ্যাড, আঁকাবাঁকা লেক, সুইমিং পুল সব নিয়ে এক বিলাসবহুল পাঁচতারকা হোটেল। এক কথায় শ্রী মঙ্গলের ভূস্বর্গ। হোটেলের স্টাফরাও বেশ স্মার্ট ও সুদর্শন। প্রবেশপথে দেখি ফ্রন্ট ডেক্সে বিমানবালার মতো সুসজ্জিত সুশ্রী রমণীরা দাঁড়িয়ে আছেন। রেস্টুরেন্ট শপিং সেন্টার, সুইমিং পুলে যারা দায়িত্বে আছেন তারাও একই পোশাকে সুসজ্জিত ও ফর্সা, সুদর্শন, স্মার্ট ও আন্তরিক। অথচ শ্রীমঙ্গলে দেখেছি বাঙালি, খাসিয়া, মনিপুরী, ত্রিপুরা, গারো বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর বসবাস করেন। এদের অধিকাংশের গায়ের রঙ শ্যামলা ও কালো। যাই হোক মায়াপুরির মতো বিশাল হোটেলে তিন তলায় আমাদের পরিবারের জন্য রুম বরাদ্দ ছিল। রুমে ব্যাগ, ট্রলি রেখে রেস্টুরেন্টে এলাম। খাবারের ব্যবস্থা বুফে সিস্টেম। চল্লিশ, পঞ্চাশ পদের খাবার। পোলাও, ভাত, বিরানি, মাছ, মাংস থেকে দই, মিষ্টি, ফল-মূল পর্যন্ত। যার যত রুচি, খেতে পারেন। কিন্তু আমি তিন-চার রকমের খাবার খেয়ে চটপট ডিনার সারলাম। ইচ্ছে ছিল বিকেলে লাউয়াছড়া বনে যাব। কিন্তু হেমন্তের ছোট দিনের বেলা হওয়ায় ঝুপকরে সন্ধ্যা নামলো। অগত্যা মাগরেবের নামাজ পড়ে পাহাড় বেয়ে রিসোর্টের  হেলিপ্যাডে গিয়ে দাঁড়ালাম। হালকা কুয়াশার চাদরে ঢাকা চরাচর। চাঁদের আলোয় পাহাড়ের ঢালের সব চা বাগান গুলো ঝাপসা ঝাপসা। হঠাৎ সরসর আওয়াজ। ভয়ে দুরু দুরু করে উঠলো বুক। কোন বন্যজন্তু বা জানোয়ার নয়তো? পরক্ষণে ভুল ভাঙলো। লক্ষ্য করি কাঁঠাল গাছে একটা কাঠবিড়ালি। পাকা কাঁঠাল খাচ্ছে। এবার আমি ভয়ের পরিবর্তে একটু অবাক হলাম। কাঁঠালতো আষাঢ় শ্রাবণের ফল। তাহলে নবান্নের অগ্রহায়ণে কেন কাঁঠাল? কি জানি, পাহাড়ি এলাকায় অসময়েও কাঁঠাল পাওয়া যায় বোধ হয়। তা আবার নবান্ন উৎসবের সময়। এ নিয়ে আর মাথা ঘামালাম না।

পরদিন নাস্তাপর্ব শেষে হোটেল থেকে বেরিয়ে পড়লাম। ঝকঝকে রোদ্দুরে এবার আমাদের গন্তব্য লাউয়াছড়া বনে। জানা যায় এই বনের গোড়াপতন করেছিল ব্রিটিশরা। দেশ বিদেশ থেকে এনেছিল নানা বিরল গাছ গাছালি। কিন্তু এসব গাছগুলোকে টেক্কা মেরে জায়গা করে নিয়েছ হাজার হাজার প্রজাতির নানা দেশী গাছপালা, লতা গুল্ম। ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশ সরকার এই বনভূমিকে জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা করেছে। এটি এখন বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটন আকর্ষণ।

হোটেল থেকে সি.এন.জি একটু এগোতেই লাউয়াছড়া বনভূমি চোখে পড়লো। গাছপালায় ঠাসা মনমুগ্ধকর এক বনানী। আমার শরীরের শিরায় শিরায় রোমাঞ্চ ছড়িয়ে পড়লো। জীবনে প্রথম অপরূপ সুন্দর এক বনভূমি দেখতে পাচ্ছি।

টিকেট কেটে ভেতরে প্রবেশ করলাম। চোখে আবারও বিস্ময়। হাজারো গাছ গাছালি, লতা-গুল্ম আর পাহাড়ি পানির ছড়া, খাদ নিয়ে গা ছম ছম করা এক ভিন্ন জগৎ। ভেতরটা কেমন ঢিপ ঢিপ করে উঠলো। আশপাশে কোন দখলদারি বন্যজন্তু ওঁৎ পেতে আছে কিনা? কিন্তু ক্রমশ ভয়ও জড়তা কেটে যেতে লাগলো। বরং ভয় মিশ্রিত এক রোমাঞ্চ পেয়ে বসলো। আরও ভেতরে হারিয়ে যেতে থাকলাম। তবে সব সময় সতর্ক থাকছি। কারণ এই বনে হনুমান, বানর, অজগর সাপ থেকে শুরু করে আরও হিংস্র প্রাণীর বিচরণ। যে কোন সময় ওরা সামনে আসতে পারে। 

শহর জীবনের কোলাহলহীন এমন একটা শান্ত সুন্দর নির্জন বনভূমির টানে কখন যে ট্রেনলাইনে পৌঁছে গেছি তা খেয়ালই করিনি। চতুর্দিকে গাছগাছালিতে পাখিদের কলরোল, বাতাসে বনফুলের গন্ধ আর ভেতর দিয়ে ট্রেন চলছে ঝিকঝিক শব্দে। কেমন এক রোমাঞ্চকর যাত্রা। মনে হচ্ছে কাউবয় জাতীয় কোন সিনেমার সুটিংয়ের এক উৎকৃষ্ট লোকেশন। আমার ভাবনা শেষ হতে না হতে থমকে দাঁড়ালাম। আসলেই আমি সুটিং স্পটে পৌঁছে গেছি। সামনে একটা সাইন বোর্ড। অস্কার বিজয়ী বিশ্ব বিখ্যাত হলিউড চলচিত্র Around the world in 80 days এর অংশ বিশেষ নাকি এই ট্রেনলাইনে সুটিং হয়েছিল। সময়টা ছিল ১৯৫৫ সাল। আর ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল ১৯৫৬ সালে।

মনটা গর্বে ফুলে উঠলো। এক ঝটকায় ফিরে গেলাম আমার স্কুল বেলায়। ১৯৬৬-৬৭ সাল। বড়দের সঙ্গে প্রেক্ষাগৃহে যেয়ে কখন দু’ একটা ঢাকা লাহোরের বাংলা উর্দু সিনেমা দেখেছি। ইংরেজি সিনেমা দেখা ছিল বারণ। সে সময়ে আরও বারণ ছিল একাকী সিনেমা হলে গিয়ে কোন সিনেমা দেখা। তখন রেডিওর যুগ। ঢাকাতে টিভি এলেও অন্যান্য জেলায় তখনো টিভি আসেনি। বিনোদনের একমাত্র মাধ্যম ছিল বই পড়া। অবসরে সকলেই প্রায় গল্প কবিতা উপন্যাসের কিংবা পত্রিকার পাতায় চোখ আটকে রাখতেন। আর সপ্তাহে বোনাস হিসেবে কেউ কেউ নিতেন সিনেমা পত্রিকা। চিত্রালী, চিত্রাকাশ, চলন্তিকা প্রভৃতি সিনেমা পত্রিকা তখন চুটিয়ে ব্যবসা করছিল। এসব সিনেমা পত্রিকা আমাদের মতো কিশোরদের পড়া বারণ থাকলেও আমরা অনেকেই ক্লাব বা লাইব্রেরিতে গিয়ে চুপি চুপি পড়তাম।

ঠিক সেই সময় আমি কোন এক পত্রিকায় জেনেছিলাম Around the world in 80 days চলচ্চিত্রের কথা। কিন্তু কোন দিন সেই চলচ্চিত্রটা দেখা হয়নি। আজ সেই সুটিং স্পটে এসে নিজেকে অন্য রকম মনে হচ্ছে। ভাবতে অবাক লাগছে একবিংশ শতাব্দীতে যখন বাংলাদেশের নাম অনেক ইউরোপিয়ান আমেরিকানরা জানলেও বিস্তারিত ভাবে জানেন না, তখন ১৯৫৫ সালে আমেরিকার হলিউড থেকে চিত্র পরিচালক ছুটে এসেছেন এই তল্লাটে। ছবির দৃশ্য ধারণ করেছেন। আবার অস্কার পুরস্কার বাগিয়েও নিয়েছেন। অথচ আমি ষাটোর্ধ্ব বয়সে এখন এই সুন্দর বনভূমির রূপ অবলোকন করতে এসেছি। ট্রেনলাইন থেকে পেরিয়ে একটু এগোতেই আরেকটি সাইন বোর্ড চোখে পড়লো। হুমায়ূন আহমেদ এর “আমার আছে জল” চলচ্চিত্রের সুটিং স্পট। এ চলচ্চিত্র সম্বন্ধে আমার কোন জানাশোনা নেই। কারণ অনেক দিন আগে, সেই আশির দশকে আমি প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে চলচ্চিত্র দেখা ছেড়ে দিয়েছি। এখন চলচ্চিত্র বিষয়ক কোন খবরও রাখি না।

সুটিংস্পট পেরিয়ে আরও কিছুদূর অগ্রসর হলাম। গাছপালা ঝোপ-ঝাড়, লতা-গুল্ম নিয়ে এক অরণ্য বিভীষিকা। প্রতি মুহূর্তে ভয় হচ্ছিল বুনো শুয়োর, অজগর সাপের, কিংবা মাথার উপর উল্লুকের লম্ফঝম্ফের। কিন্তু কপাল ভালো সে রকম কোনো ঘটনার মুখোমুখি হলাম না। আবারও সিনেমা পত্রিকার খবরের কথা মনে পড়লো। সময়টা ছিল বাংলাদেশ স্বাধীন হবার আগে। হলিউডের টারজান চলচ্চিত্রের নায়ক একবার আকাশ পথে কোথায় যেন যাচ্ছিলেন। যাত্রা বিরতিতে ঢাকা তেজগাঁ বিমানবন্দরে নেমেছিলেন। এই সুযোগে তিনি অত্যন্ত গোপনে গিয়েছিলেন লাউয়াছড়া বনে। উদ্দেশ্য এই বনে কোন দৃশ্য ধারণ করা যায় কি না। পরবর্তীতে তিনি আর এগোননি। যাই হোক এই অরণ্য যে টারজান ছবির সুটিং এর জন্য একেবারে উপযুক্ত ছিল তা নির্দ্বিধায় বলা যায়। অবশেষে পাহাড় জঙ্গল ঝিরঝিরে ঝরনা ধারার নৈসর্গ ছেড়ে লাউয়াছড়া বন থেকে বেরিয়ে এলাম। এবার আমাদের গন্তব্য মাধবপুর লেক। বনের উল্টোদিকে আঁকাবাঁকা পিচঢালা ঢালু পথে সি.এন.জি নেমে গেল। আবারও টিলা, দৃষ্টিনন্দন বাগান, দু একটা রাবারের বাগান আর নানা প্রজাতির বর্ণময় পাখির বিচরণ। পাতা তুলছেন চা শ্রমিকরা। এদেরকে চা দাস বললেও বোধ হয় ভুল বলা হবে না। ব্রিটিশ আমলে এদেরকে আনা হয়েছিল ভারতের উত্তর প্রদেশ কিংবা মধ্যপ্রদেশ থেকে। তারপর কোম্পানির আইনে ফেলে চলেছে শ্রম শোষণ সেই ধারা এখনো আছে। যোগ্য মজুরি ও সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে এরা এখনও হতা-দরিদ্র জনগোষ্ঠী। এদের অনেককে ভিক্ষে করতেও দেখা গেল।

মাধবপুরে চলে এলাম। পাহাড় ঘেরা বিশাল এক হ্রদ। অনেকটা চট্টগ্রামের ফয়েজ লেকের মতো। কাকের চোখের মতো কাজল কালো টলটলে পানিতে রঙিন শাপলার বাহার। গাছে গাছে নাম না জানা হাজারো পাখির কূজন। নিসর্গ উপভোগ করতে অনেক পর্যটকই ছুটে এসেছেন এখানে। হ্রদ বনানী আর ধাপে ধাপে চা বাগানের সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে পাহাড়ে শীর্ষে উঠে এলাম। ওপারে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য। ঝকঝকে রোদ্দুরে যতদূর দৃষ্টি যায় শুধু সবুজ আর সবুজ। সবুজ পাহাড়ের হাতছানি। মাধবপুর থেকে হোটেলে ফিরে এলাম। ডিনার সারলাম। সময় নষ্ট না করে আবার বেরিয়ে পড়লাম। এবার মনিপুরী গ্রামের দিকে যাত্রা। পথেই পেলাম চা জাদুঘর। এরপর Bangladesh Tea Research Institute (BTRI) এগুলো এক ঝলক দেখে সোজা হাজির হলাম মনিপুরী উপজাতি গ্রামে। এখানে দেখার মতো আহামরি কোন দৃশ্য নেই। শুধুমাত্র হস্তশিল্পের পণ্যসামগ্রী নিয়ে বসে আছেন উপজাতিরা। আমার কন্যা ডা: আনিকা জামান স্মারক হিসেবে একটা চাদর কিনলো। কিন্তু আমি আলাপ জমালাম মনিপুরী হ্যান্ডিক্রাফটস এর কর্ণধার পুতুল সিনহার সঙ্গে। সদালাপী এই ভদ্রলোক এক সময় ঢাকায় চা বোর্ডে কর্মরত ছিলেন। চাকরি থেকে অবসর নেবার পর এখন হ্যান্ডিক্রাফট্স এর শোরুম খুলে বসে আছেন। কথায় কথায় তাঁদের সংস্কৃতি ও ধর্মের প্রসঙ্গ এলো। তাঁদের ধর্ম বিষয়টা জেনে একটু অবাকই হলাম। তাঁরা মূলত একেশ্বরবাদী। কিন্তু কোন এক হিন্দু রাজার সংস্পর্শে এসে তাঁরা বহু ঈশ্বরের অর্চনাও শুরু করেন। এ কারণে তাঁরা প্রথমে এক ঈশ্বরের আরাধনা করেন। পরবর্তীতে বহু ঈশ্বরের বন্দনাও করেন।

হাতে এখনো ঘণ্টা খানেক সময় আছে। চলে এলাম লেমন রিসোর্টে। অসংখ্য লেবু মাল্টা আর কমলালেবুর গাছ। মাঝে পায়ে চলা পথ। বাহারি ফুল প্রজাপতি পাখির কলকাকলিতে স্থানটি বেশ উপভোগ্য। দেখতে দেখতে সূর্য পশ্চিম আকাশে হেলে পড়েছে। বিকেল সাড়ে ৪টায় শ্রীমঙ্গল স্টেশনে আমাদের ঢাকাগামী পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেন। সুতরাং তড়িঘড়ি এলাম হোটেলে। লাগেজ নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। সঙ্গে নিলাম চা বাগান লাউয়াছড়া বনের স্মৃতিটুকু।

আপনার মন্তাব্য লিখুন
অনলাইনে কিশোরকন্ঠ অর্ডার করুন
লেখকের আরও লেখা

সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

আরও পড়ুন...

CART 0

আপনার প্রোডাক্ট সমূহ