চাঁদের দেশে ভ্রমণ  -তরিকুল ইসলাম

চাঁদের দেশে ভ্রমণ -তরিকুল ইসলাম

তোমাদের গল্প ফেব্রুয়ারি ২০১৮

আনন্দনগর গ্রামে সাত বছরের এক বালক ছিল। যার নাম সুজন। সে নম্র ও ভদ্র ছেলে। কারো সাথে তেমন কথা বলতো না। কারো কাছে যেতো না। খেলাধুলাও করত না। একা একা থাকত। আর সুজনের একটা অভ্যাস ছিলো। সেটা হলো রাতে একবার করে চাঁদ দেখতে বাইরে যাওয়া। আর আধা ঘণ্টা করে সে চাঁদ দেখতো ওপরের দিকে তাকিয়ে থেকে। একদিন সুজনের চাঁদে ভ্রমণের ইচ্ছে হলো। সে রাত ৪টার দিকে কাউকে না বলে একটা ব্যাগে করে কিছু জিনিস নিয়ে চুপে চুপে দরজা খুলে বাইরে বের হলো। তারপর উত্তর রাস্তাটা দিয়ে ও পথ চলতে শুরু করে। ২ ঘণ্টা একটানা হাঁটতে থাকে। কোথাও একটু বিশ্রামও নেয়নি। ২ ঘণ্টা পর সুজন একটা বড় গাছের নিচে বসে পড়ে। চারদিকে তাকিয়ে দেখে খালি অন্ধকার আর অন্ধকার। কিছু দেখা যায় না। একফালি চাঁদের আলোয় যা দেখা যায় সে সেভাবে পথ চলতে থাকে। ৫ মিনিট বসার পর সে সোজা পথ দিয়ে আবার চলতে থাকে। সুজন আরো আধা ঘণ্টা হাঁটার পর ওর কানে একটা আওয়াজ আসে। ও চারদিকে তাকায় কিন্তু কিছু দেখতে পায় না। সুজন মনে করে চারদিকে কোন মানুষ না থাকলে কে শব্দ করছে। সুজন একটু ভয় পেয়ে যায়। ভয়ে ভয়ে ও সামনে হাঁটতে থাকে। আর তারপর যা যা দেখে তাও বিশ^াস করতে পারছিলো না। সুজন দেখে ওর চারদিকে লাল ও নীল আলো জ্বলছে। আর একটা সরু নদী। নদীর ওপর একটা জাহাজের মতো দেখা যাচ্ছে। এর রঙ সাদা। পানির ঢেউয়ে জাহাজটা দুলছিলো। দেখতে অনেক সুন্দর লাগছিলো। তারপর সামনে যেতেই ও একজন মানুষ দেখলো। যার মাথাটা একটু মোটা কিন্তু শরীরটা চিকনা। চোখগুলো বড় বড় আর নাকটা দেখতে পেলো না। সে সুজনকে বলল কোথায় যাবেন, চাঁদের দেশে? সুজন বলল, কিন্তু আমার কাছে তো কোনো টাকা পয়সা নাই। সে বলল, আপনার টাকা লাগবে না। সে সুজনকে নিয়ে একটা সিটে বসতে দিলো। সুজন তাকে কিছু না বলে চুপ করে বসে রইল। আর লোকটা তখন বাইরে চলে গিয়ে কিছুক্ষণ পরে এসে বলল এখন আমরা চাঁদের দেশে যাবো। তারপর লোকটা তার রুমে চলে যায়। আর জাহাজ চালাতে শুরু করে। সুজন তখন আনন্দে নাচতে থাকে। তারপর হলো এক অদ্ভুত ঘটনা! জাহাজ তো পানি পথে না চলে আকাশে উড়ছে। কি অদ্ভুত না ব্যাপারটা! সুজন তখন পাশের জানালার দরজা খুলে একটা সাদা বক উড়ে যেতে দেখে ওর খুব আনন্দ হয়। আর ওদের গ্রাম দেখা যাচ্ছিল না।
তারপর হঠাৎ জাহাজ থামলো। লোকটা তার রুম থেকে বের হয়ে সুজনকে নামতে বলল। সুজন দৌড়ে বাইরে এসে লাফ দেয়। তখন ওর মনে হয় এটা যেন পাখির পালকের বিছানার মতো। সুজনের চোখ যে দিকে যায়, খালি পাখির পালকের বিছানার মতো দেখা যায়। কোন গাছপালা নেই। সুজন তখন আনন্দে দৌড়াতে থাকে। হঠাৎ সুজন ওর ব্যাগ থেকে একটা গোলাপ ফুলের চারা বের করে। হাত দিয়ে মাটি খুঁড়ে চারাটা রোপণ করে। তারপর ওর ব্যাগ থেকে পানির পটের পানি বের করে গোলাপের চারাটিতে পানি দেয়। সুজন তারপর কিছু মাটি ওর ব্যাগে ভরে নিলো ওদের গ্রামের সবাইকে দেখাবে বলে। সুজন তখন আবার হাঁটতে থাকে। আর তখনই ওর মা ওকে ঘুম থেকে ডেকে তোলে। সুজন এক লাফে উঠে বসে। তারপর সুজন মনে করে ও যা কিছু দেখেছে তা সবই স্বপ্ন। ও তাড়াতাড়ি মুখ ধুয়ে পড়তে বসে। আর সুজন তখন ঘড়িতে তাকিয়ে দেখলো ১০টা বাজে। সুজনের নানা এসে বলে, সুজন তোমার কি শরীর খারাপ? সুজন বলে না নানা আজ উঠতে একটু দেরি হয়েছে। তারপর সুজন ওর রুটিন মাফিক কাজ করতে থাকে।
                        
আপনার মন্তাব্য লিখুন
অনলাইনে কিশোরকন্ঠ অর্ডার করুন
লেখকের আরও লেখা

সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

আরও পড়ুন...

CART 0

আপনার প্রোডাক্ট সমূহ