খোদাভীরুতার ফল  -মোঃ আবু তালহা

খোদাভীরুতার ফল -মোঃ আবু তালহা

তোমাদের গল্প সেপ্টেম্বর ২০১৮

মাহমুদ পঞ্চম শ্রেণীতে উঠেছে। লেখাপড়া তেমন ভালো না মাহমুদের। সে সবসময় দুষ্টামিতে মগ্ন থাকে। নামাজ আদায় করে না। সে মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। তার বাবা একটি কোম্পানিতে কাজ করেন। তাতেও তিনি উন্নতি করতে পারতেন কিন্তু তিনি সবসময় সততার সাথে কাজ করেন যার ফলে তিনি তেমন কোনো উন্নতি করতে পারেননি। তিনি প্রত্যেক ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতেন। তিনি তার বেতন দিয়ে খুব কষ্টে তার সংসার পরিচালনা করেন। তার একটাই আশা তার ছেলে যেন ভালোভাবে লেখাপড়া করে এবং তার মতো সততার পথে চলে। কিন্তু তার ছেলে মাহমুদ সবসময় দুষ্টামি করতো দেখে তার অনেক চিন্তা হতো। কারণ প্রায় প্রতিদিন মাহমুদের নামে একটা না একটা নালিশ আসতো। এইতো সেদিন তার বন্ধু জিসানের সাথে ঝগড়া করে তার নাকে আঘাত করে, যার ফলে তার নাক দিয়ে রক্ত বের হয়। তাই নিয়ে অনেক কাহিনী হয়। মাহমুদ নিয়মিত স্কুলে যেত এবং নানা রকম দুষ্টামি করতো। আজকে স্কুলে যাওয়ার পর তার আরেক বন্ধু রাকিবের সাথে ঝগড়া করে। যার ফলে স্যার তার বাবাকে ফোন দিয়ে স্কুলে নিয়ে আসেন। স্যার তার বাবাকে মাহমুদের ব্যাপারে বলেন, ও যদি আর কারো সাথে ঝগড়া করে তাহলে ওকে বাধ্য হয়ে স্কুল থেকে বের করে দিবো। এর আগেও অনেকবার আপনার ছেলে এরকম কাজ করেছে।
স্যারের কথাগুলো মাহমুদের বাবা শুনে তার ছেলেকে নিয়ে বাড়িতে যান। বড়িতে যাওয়ার পর মাহমুদের বাবা আ: করিম মাহমুদকে নানা উপদেশ দেন। কারণ তিনি জানেন মাহমুদকে মার দিয়ে ভালো বানানো যাবে না, তাই তিনি মাহমুদকে উদ্দেশ করে বলেন, মাহমুদ বলতো আমরা কোন ধর্মের অনুসারী?
মাহমুদ বললো, ইসলাম ধর্মের অনুসারী।
তার বাবা বললেন, ইসলাম শব্দের অর্থ কী?
মাহমুদ বললো, একটা অর্থ আত্মসমর্পণ, আর একটি অর্থ শান্তি।
তার বাবা বললেন, তুমি প্রতিদিন স্কুলে যে ঝগড়া করো সেটা ইসলাম সমর্থন করে?
মাহ্মুদ : জি না।
তার বাবা বললেন, তাহলে তুমি ইসলামের বিরুদ্ধ কাজ কিভাবে করতে পারলে, তোমার কি জাহান্নামের ভয় নেই?
মাহমুদ তখন বললো, আমার ভুল হয়ে গেছে, আমাকে ক্ষমা করে দাও। আজ আমি বুঝতে পারছি আমি কত বড় ভুল কাজ করেছি।
তার বাবা বললেন, আমার কাছে ক্ষমা না চেয়ে যাদের সাথে অন্যায় করেছো তাদের কাজ থেকে ক্ষমা চাও।
মাহমুদ বললো, আমি এখনই যাচ্ছি বাবা তাদের কাছ থেকে ক্ষমা চাইতে।
তারপর মাহমুদ তাদের কাছ থেকে ক্ষমা চাইলো এবং তারা তাকে ক্ষমা করে দিলো। তারপর ওরা মাহমুদের প্রিয় বন্ধু হয়ে গেল। সন্ধ্যা পর্যন্ত তাদের সাথে কথা বলে বাড়িতে আসে। তারপর নামাজ, খাওয়া-দাওয়া, পড়া, নামাজ। আবার পড়ে নফল নামাজ পড়তে শুরু করে। সেদিন সারারাত নফল নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইলো। সেদিনের পর থেকে মাহমুদ আর কোন খারাপ কাজ করেনি। মাহমুদ এখন লেখাপড়ায় ব্যস্ত সবসময় এবং প্রত্যেক ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে। তাই এখন তার বাবা-মা মহা খুশি।
মাহমুদ প্রাথমিক পরীক্ষায় এ+ পেয়েছে।
মাহমুদ তখন ভাবে বাবা আমাকে সত্যের পথ দেখানোর কারণে আজ আমি এ+ পেয়েছি ও সকল খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকতে পেরেছি এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তির পথও পেয়েছি। তার বাবা বলতেন, জীবনে যে কোন কাজ করো না কেন সবসময় খোদাকে ভয় করে কাজ করবে। তবেই জীবনের সফলতা আসবে।
                        
আপনার মন্তাব্য লিখুন
অনলাইনে কিশোরকন্ঠ অর্ডার করুন
লেখকের আরও লেখা

সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

আরও পড়ুন...

CART 0

আপনার প্রোডাক্ট সমূহ