খালিদের স্বপ্ন    -তারিক জামিল

খালিদের স্বপ্ন -তারিক জামিল

গল্প মার্চ ২০১৭

শিশুটির নাম খালিদ। বাড়ি ফিলিস্তিন। সে একদিন তার আম্মুকে বলল- মা আমি আর স্কুলে যাবো না। বাবা হত্যার প্রতিশোধ নেবো। আমার ভাইকে যারা কয়েদখানায় বন্দি করে রেখেছে, আমি তাদেরকে হত্যা করে আমার ভাইকে মুক্ত করে আনব। ঐ ইসরাইলি জালিমরা আমার বোনকে লাঞ্ছিত করে নির্মমভাবে হত্যা করেছে।
ওরা আমাদের স্বাধীনতাকে ছিনিয়ে নিয়ে পরাধীনতার শিকলে আবদ্ধ করেছে। এই হায়েনাদের কবল থেকে নারী-শিশুরাও রক্ষা পাচ্ছে না। প্রতিদিনই বোমার আঘাতে রক্ত ঝরছে তাদের। ফিলিস্তিনের মাটিতে এখন শুধু মাজলুমানের রক্ত আর গোলা-বারুদের গন্ধ। ওদের হামলায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালের বেডে শুয়েও রক্ষা নেই। বোমার আঘাতে হাসপাতালগুলোও ধ্বংস করে দিচ্ছে। ওরা অমানবিক, নির্দয়, ওদের মনে দয়া নেই।
এখন প্রতিশোধ নেবার পালা। পিঠ দেয়ালে গিয়ে ঠেকেছে। আর পিছুটান নয়, হয়তো বীরের বেশে যুদ্ধ চালিয়ে যাবো নয়তো জীবন দিয়ে হলেও স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনব। এজন্যই আর স্কুলে যাবো না। আমি যুদ্ধে যেতে চাই মা আপনি অনুমতি দিন।
ছেলের চেতনা দেখে মা নির্বাক তবে আনন্দিত। কারণ একজন মুসলিম দেশপ্রেমিক মায়ের সন্তানের এমনই চেতনা থাকা উচিত। কেননা তিনি চান খালিদের মত সব শিশু এমন চেতনা লালন করুক। ফিলিস্তিনের বুকে উদিত হোক স্বাধীনতার সূর্য। মানুষ ফিরে পাক তাদের অধিকার। মুক্ত হোক মুসলমানদের প্রথম কিবলা আল আকসা। এজন্য যদি সন্তান হারাতে হয় তবুও। তাদের সন্তানরা নিজের জীবন বিলিয়ে দিয়ে হলেও ছিনিয়ে আনবে মাজলুমের অধিকার। স্বজন হারানো মানুষের মুখে ফোটাবে হাসির ঝিলিক। মা তার খালিদকে বললেন : শোন বাবা। তোমার এমন চেতনায় আমরা আশান্বিত। তুমিই হবে আগামী দিনের সুলতান সালাহউদ্দিন আয়ুবীর যোগ্য উত্তরসূরি। এজন্য প্রথমেতো তোমাকে ভালোভাবে পড়াশোনা করতে হবে। ওদের মোকাবেলায় যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিতে হলে ওদের কৌশল আগে আয়ত্ত করতে হবে অতঃপর পাল্টা কৌশল প্রয়োগ করতে হবে। এজন্য যোগ্যতা অর্জন করতে হবে এখনই। আর হ্যাঁ পড়ার সাথে সাথে মহান আল্লাহর কাছে সাহায্য কামনা করতে হবে। খালিদ বলল : ঠিক আছে তবে তাই হবে। সেই সাথে আরেকটি কাজ করব। যখন স্কুল ছুটি দেবে তখন ফেরার পথে ব্যাগ ভরে পাথর নিয়ে এসে বাসায় জমা করে রাখব। যখন সুযোগ মিলবে তখনই ইসরাইলি হায়েনাদের ওপর পাথর নিক্ষেপ করব। হয়তো আমার এই পাথরগুলো আবাবিলের নিক্ষিপ্ত পাথরের মতো আঘাত হানতে পারে।
খালিদ শুধু একা পাথর কুড়ায় না। ওর মতো সব ফিলিস্তিনি শিশু পাথর কুড়ায় প্রতিশোধ নেবে বলে। বাহ্যত এটাকে পাথর জমা মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে ক্ষোভ সঞ্চারিত হচ্ছে। যেকোনো সময় ঘটতে পারে ক্ষোভের বিস্ফোরণ।
আর এভাবে সংগ্রামের মাধ্যমেই আসতে পারে ফিলিস্তিনের মুক্তি তথা মাজলুমানের বিজয়। হ
                        
আপনার মন্তাব্য লিখুন
অনলাইনে কিশোরকন্ঠ অর্ডার করুন
লেখকের আরও লেখা

সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

আরও পড়ুন...

CART 0

আপনার প্রোডাক্ট সমূহ