কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা
ছড়া-কবিতা মে ২০১২
আমি সওদাগর.. আমি সাগর পাড়ি দেবো, আমি সওদাগর। সাত সাগরে ভাস্বে আমার সপ্ত মধুকর। আমার ঘাটের সওদা নিয়ে যাব সবার ঘাটে, চলবে আমার বেচাকেনা বিশ্বজোড়া হাটে। ময়ূরপঙ্খী বজ্রা আমার “লাল বাওটা” তুলে ঢেউ-এর দোলায় মরাল সম চল্বে দুলে দুলে। সিন্ধু আমার বন্ধু হয়ে রতন মানিক তার আমার তরী বোঝাই করে দেবে উপহার। দ্বীপে দ্বীপে আমার আশায় রাখ্বে পেতে থানা, শুক্তি দেবে মুক্তামালা আমারে নজ্রানা। চারপাশে মোর গাংচিলেরা র্কবে এসে ভিড় হাতছানিতে ডাক্বে আমায় নতুন দেশের তীর। আসবে হাঙর কুমির তিমিÑ কে করে তায় ভয়; বল্ব, “ওরে, ভয় পায় যেÑ এ সে ছেলেই নয়।” সপ্ত সাগর রাজ্য আমার, আমি বণিক বীর, খাজ্না জোগায় রাজ্যে আমার হাজার নদীর নীর। ভয় করি না তোদের দুটো দন্ত নখর দেখে, জল-দস্যু, তোদের তরে পাহারা গেলাম রেখে সিন্ধু-গাজী মোল্লামাঝি, নৌ-সেনা ঐ জেলে, বর্শা দিয়ে বিঁধবে তারা, রাজ্যে আমার এলে। দেশে দেশে দেয়াল গাঁথা রাখ্ব না ক’ আর, বন্যা এনে ভাঙ্ব বিভেদ র্কব একাকার। আমার দেশে থাক্লে সুধা তাদের দেশে নেবো, তাদের দেশের সুধা এনে আমার দেশে দেবো। বল্ব মাকে, “ভয় কি গো মা, বাণিজ্যেতে যাই! সেই মণি মা দেবো এনে তোর ঘরে যা নাই। দুঃখিনী তুই, তাই ত মা এ দুখ ঘুচাব আজ, জগৎ জুড়ে সুখ কুড়াব- ঢাক্ব মা এ লাজ।” লাল জহরত পান্নাচূণী মুক্তামালা আনি আমি হব রাজার কুমার, মা হবে রাজরানী।
আরও পড়ুন...