আফজালের গল্প

আফজালের গল্প

তোমাদের গল্প নভেম্বর ২০১৩

মো: শফিকুল ইসলাম ফার্মগেট ফার্মগেট চিৎকার করছে একটা ছোট ছেলে। ছেলেটির নাম আফজাল। ছোট হলেও তো তার কষ্টের সীমা নেই। ছোটবেলায় বাবা মারা গেছেন। বিধবা মায়ের একই সাথে বাবার সঙ্গে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিলেন। না মৃত্যু হলো, পা দুটো হারিয়েছেন আয়েশা বেগম। সেই থেকে কষ্ট শুরু আফজালের মহাখালী ফার্মগেটের লোকাল একটি বাসে হেলপার সে। বেতনও খুব বেশি না। দিন ৮০ টাকা তাই দিয়ে তারা দিনে একবার আহার করে। আর কিছু টাকা জমিয়ে রাখে। কোনদিন আফজালের অসুখ থাকলে তাদের অনাহারে থাকতে হয়। এভাবেই চলছে আফজালের জীবন। একবার আফজাল ভাবল বাসের চেয়ে রিকশায় আয় বেশি। যেই ভাবা সেই কাজ। পরিচিত এক রিকশার দোকান থেকে একটি রিকশা ভাড়ায় নেয় সে। বাসের চেয়ে রিকশায় ভালো টাকা পাচ্ছে। দিনে তাদের একবেলা খাবার নিশ্চিত হয়। তবে তিনবেলা আহারের ভাগ্য তাদের কোনদিনও হয়নি। এভাবেই অতিবাহিত হচ্ছে আফজালের দুঃখভরা জীবন। তবে আফজালের একটি ভালো গুণ আছে। সে খুব ভালো ক্রিকেট খেলতে পারে। তার সঙ্গে তাদের গ্রামে এবং বস্তির কেউই এ খেলায় পারতো না। সে যে দলের থাকে সে দল জিতবেই। সে রিকশা চালানো অভ্যাস। বিকেলে সময় পেলে বস্তির ছেলেদের সাথে ক্রিকেট খেলে। একদিন বিকেলে সে ক্রিকেট খেলছে। তাদের বস্তির সামনে দিয়ে তো মহাসড়ক। সেখান দিয়ে যাচ্ছিলেন এক কোচ। আফজালকে দেখে তার ভালো লেগে গেলো। তার ক্রিকেট খেলা দেখে তাকে টিমে নেয়ার চেষ্টা করেন। পেয়েও যায় সুযোগ। টিম ম্যানেজমেন্টের একজন খেলোয়াড় ইনজুরিতে পড়েছে। সে নিয়ে আসে আফজালকে। ম্যাচটি সেই টিমের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। সবাই আফজালকে নিতে না চাইলেও কোচের আদেশে নেয়া হলো। তাকে নামানো হয়েছে ওপিনিংয়ে। রীতিমতো সে প্রথম বলে কিছুই করতে পারল না। কিন্তু দ্বিতীয় বলে সে ছয় মেরে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ দিলো। পরে ক্রমাগত ভালো খেলতে লাগলো। সে একদিন জাতীয় দলের ডাক পেল। সুযোগ মিস করার পাত্র সে নয়। সেখানেও সে যোগ্যতার প্রমাণ দিল। তারপর তার জীবন বদলাতে আর বেশি সময় লাগল না। সে বিরাট ধনী হয়ে গেলো। আঙুল ফুলে কলাগাছ আর কি?

আপনার মন্তাব্য লিখুন
অনলাইনে কিশোরকন্ঠ অর্ডার করুন
লেখকের আরও লেখা

সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

আরও পড়ুন...

CART 0

আপনার প্রোডাক্ট সমূহ