ছড়া-কবিতা অক্টোবর ২০১০

ফুল
মোল্লা সাইফ উদ্দিন 

ঘাসফুল বাঁশফুল কাশফুল যত
ফোটে শুধু প্রকৃতিতে কত শত শত।
ঘাসফুল ঘাসে ফোটে নিশ্চুপ একা
হেঁটে যাওয়া মানুষের সাথে হয় দেখা।
বাঁশগাছে ফোটে বলে বাঁশফুল বলে
মাথা তুলে দেখেছো কি বাঁশঝাড় তলে।
হেমন্তে সাদা সাদা কাশফুল ফোটে
ছুঁয়ে দেখ ফুলগুলো তুলতুলে বটে।
ঘাসফুল বাঁশফুল কাশফুল বলি
আসলে তারা হল ভালবাসার কলি।

হেমন্তে
আব্দুল্লাহ আল মামুন 

পাকা ধানে ভরছে মাঠ
সবার মুখে হাসি
পল্লী গাঁয়ে প্রতি ঘরে
বাজে সুখের বাঁশি।
একে একে সোনা ধানে
উঠলো ভরে উঠান
আনন্দতে গেল ভরে
কৃষক ভায়ের প্রাণ।
শূন্য গোলা ভরছে আজ
সোনা রঙের ধানে
সুখ-আনন্দে ভরছে প্রাণ
মিষ্টি গানে গানে।

হেমন্ত
নাছরিন আক্তার

নয়া ধানের গন্ধ নিয়ে
এলো আবার হেমন্ত
চতুর্দিকে খুশবু দিয়ে
ছড়িয়ে মৃদু ছন্দ।
পাকা ধানের গন্ধ নিয়ে
এলো ফিরে হেমন্ত
দাদীর মুখে দেখ চেয়ে
খুশির হাসি ফুটন্ত।

খোকার ইচ্ছে
লুৎফুর রহমান 

ফুলটা যখন ওই বাগানে
সাত সকালে ফুটে
খোকার তখন ইচ্ছে করে
ঘ্রাণটা নিতে লুটে।
জোনাক জ্বলা নীল আকাশে
চাঁদটা যবে উঠে
তখন খোকার ইচ্ছে করে
নিতে আপন মুঠে।
রোদ ঝলমল দিন-দুপুরে
সূর্য খেলে ঠোঁটে
খোকার তখন ইচ্ছে করে
যেতে তাদের জোটে।

আমাদের ফররুখ
হাফেজ নুরুজ্জামান 

ইসলামী রেনেসাঁর কবি
আমাদের ফররুখ
তার কাব্যে ছিলো মানুষের কথা
মানুষের সুখ-দুখ।
মিল্লাতকে জাগিয়েছেন
কবিতায় ফররুখ
কাব্যে তার ফুটে ওঠে
মজলুমের মুখ।
সাত সাগরের মাঝি কবিতায়
পথের দিশা মানুষদের
ইসলামী রেনেসাঁর কবি
ফররুখ আহমদ আমাদের।

মা
বিলাল হোসাইন নূরী 

মা যে আমার চাঁদের মত মেয়ে
চোখের তারায় স্বপ্ন আছে ছেয়ে।
বুকের মাঝে প্রেমের নদী ছোটে
আঁচল জুড়ে মায়ার কুসুম ফোটে।
কোমল হাতে ভালোবাসার ছোঁয়া
হয় না বিফল মায়ের কোন দোয়া।
কোলের মাচায় দিয়েছিলাম দোল
কণ্ঠে ছিলো আধো আধো বোল।
পরম সুখে নামতো চোখে ঘুম
মা যখনি আঁকতো গালে চুম।
তাইতো এখন মায়ের মধু নামে
কাব্য লিখি মনের সবুজ খামে।

করবো সেবা
এফ এম তারিকুল ইসলাম 

দুঃখীর কাছে যাব আমি
দুঃখের ভাগ নিতে
আমার পোশাক দেব তাকে
আসছে এবার শীতে।
চোখের আলো নাই যার
আমি হব আলো
বাদশা-ফকির সবাই মানুষ
কিসের সাদা-কালো?
পালিয়ে যে বেড়ায় ভয়ে
সাহস দেব তাকে
থাকবো আমি সবার সেবায়
যেমন করি মাকে।

ফুল হয়ে ফোটে না
নিগার সুলতানা

গরিবের শিশুগুলো সবার আদর পায় না
বই-খাতা নিয়ে তারা স্কুলেতে যায় না।
জামা নেই, জুতা নেই চেহারাটা রুক্ষ
চোখে শুধু কান্না, বুক ভরা দুঃখ।
রোগে ভুগে শিশুগুলো ধুঁকে ধুঁকে মরছে
আজ ঐ শিশুদের ভীষণ মনে পড়ছে।
একমুঠো ভাত তাও ঠিকমতো জোটে না
তাই ওরা বাগানের ফুল হয়ে ফোটে না।

চাঁদের চুম
ইউসুফ আল আজাদ 

চাঁদ মামা যে চুম এঁকে যায়
সবুজ ধানের ঠোঁটে
দূর গগনে দোলনা বেঁধে
চাঁদ মামাটা ছোটে।
কলমি লতার কোমল ঠোঁটে
চাঁদ এঁকে যায় চুম
গভীর রাতে চাঁদের আলো
ধরায় আনে ঘুম।
নদীর বুকে চাঁদের আলো
আঁকে মধুর ছবি
গভীর রাতে চাঁদকে নিয়ে
কাব্য লেখে কবি।

এই আমাদের দেশ
কাজী যুবাইর 

এখানে পাখিরা ডানা ঝাপটালে
সন্ধ্যা নামে
এই আমাদের দেশ
ভোর হলে লাল সূর্যের উন্মেষ
ওইতো আকাশে তারা চিঠি লেখে
মেঘের খামে।
এই দেশে খালে-বিলে মাছ খেলা করে
ঝিনুক জেগে থাকে নদীর কিনারে
এখানে ফুল ফোটে
মৌচাকে মৌমাছি মধু রাখে
এখানে সবুজের মেলা দিগ-দিগন্তে
ডানে বামে।
এখানে পাহাড়ে ঝরনা কাঁদে
মায়ের কোলে শিশুর দল হাসে
বৈশাখে ঝড় তুফানে ডাল ভাঙে
এখানে রাত্তিরে চাঁদ ভাসে
এই দেশে ভালবাসা আছে
ঘাসের বুক ভিজে সারা
রাতের ঘামে।

ফুল ও পাতার শীতল ছায়ায়
আবু সাইদ কামাল

রঙিন ফিতায় ঝুঁটি বাঁধা
উচ্ছল কোনো খুকির মত
দাঁড়িয়ে থাকে শাখা মেলে
বৃক্ষ চূড়া অবিরত।
মুগ্ধ খুকি হাসে যেন
পুকুরপাড়ে পথের পাশে
দুপুর রোদে পথিকেরা
বসে নিচে দূর্বাঘাসে।
ফুল ও পাতার শীতল ছায়ায়
জড়ায় পথিক ঘুমের মায়ায়।

রঙধনু
ফরিদুল হক রেন্টু 

নীল আকাশে মেঘের ভেলা
সারা দিনই করছে খেলা।
মাঝে মাঝে মেঘের পাশে
ফিকফিকিয়ে রোদ যে হাসে।
হঠাৎ দেখি রঙের ছটা আকাশে
এক্কেবারে ধনুক যেন বাঁকা সে।
রঙধুর সাত রঙে চারদিকে ঝিলমিল
এই না দেখে খুকুমণি হাসে খিলখিল।

আজকের শিশু-কিশোর
শিরিন আক্তার (সাথী) 

আজকে যারা শিশু-কিশোর
বেড়ে উঠছে ধীরে
যেমন করে বাড়তে দেবে
তেমনি পাবে ফিরে।
যদি দাও পরিবেশ
পূর্ণ অধিকার
দেশের জন্য জীবন দিতে
করবে অঙ্গীকার।
খুলবে তারা আলোর দ্বার
জয়ের নিশান উড়িয়ে
পরাজয়কে করবে জয়
বাধা-বিঘ্ন তাড়িয়ে।
                        
আপনার মন্তাব্য লিখুন
অনলাইনে কিশোরকন্ঠ অর্ডার করুন
লেখকের আরও লেখা

সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

আরও পড়ুন...

CART 0

আপনার প্রোডাক্ট সমূহ