হেমন্তের বাংলাদেশ

হেমন্তের বাংলাদেশ

ফিচার মঈনুল হক চৌধুরী নভেম্বর ২০২৩

বাংলার প্রত্যেকটি ঋতুর আছে নিজস্ব বিচিত্রতা ও সৌন্দর্য। সেইভাবে হেমন্তের সৌন্দর্য তার সোনালি প্রকৃতি। হিম হিম বাতাস, সোনালি প্রান্তর সব মিলিয়ে সৃষ্টি হয় অপূর্ব দৃশ্য যা মানুষকে উৎফুল্লিত করে। হেমন্ত মানেই পাকা ধানের ঋতু। হেমন্ত আসলেই পাকা ধানের সোনালি আলোয় উদ্ভাসিত হয় বাংলার মাঠ ঘাট প্রান্তর। খুশির আলো বইতে থাকে কৃষকদের ঘরে ঘরে, চারিদিক হয় উৎসবমুখর। হেমন্তের হিম বাতাস কনকনে শীতের আগমনি বার্তা ঘোষণা করে। এই সময়ে প্রকৃতি এক নতুন সাজে সেজে ওঠে। বর্ষার পানি শুকিয়ে গিয়ে মাঠঘাট হয়ে ওঠে অনন্য। উল্লেখ্য, হেমন্ত হলো ষড়ঋতুর চতুর্থ ঋতু। কার্তিক ও অগ্রহায়ণ এই দু’মাস নিয়ে হেমন্তকাল। হেমন্ত মানেই শিশিরস্নাত প্রহর। শরতের কাশফুল মাটিতে নুইয়ে পড়ার পরপরই হেমন্তের আগমন ঘটে। এর পরে আসে শীত, তাই হেমন্তকে বলা হয় শীতের পূর্বাভাস। হেমন্তে সকালবেলা আবছা কুয়াশায় ঢাকা থাকে চারিদিকের মাঠঘাট। সকালে ধান গাছের ডগায় যে শিশির জমে থাকে তা হেমন্তের জানান দেয়। সকালের প্রথম রোদের বর্ণচ্ছটায় গাছের পাতাগুলো খিলখিল করে হেসে ওঠে। দৃষ্টিসীমা যতদূর গিয়ে পৌঁছে দেখা যায়। হেমন্ত ঋতুতে প্রকৃতি ও মানুষের রূপবদল বড় অপূর্ব। দিগন্তবিস্তৃত মাঠজুড়ে কেবল সোনালি রঙের ধান আর ধান। দলে দলে মানুষজন সেসব ধান কাটে, আঁটি বাঁধে আর সেসব ধানের আঁটি বাঁকের দু’পাশে দাঁড়িপাল্ল­ার মতো ঝুলিয়ে বাঁক কাঁধে বাড়ি ফেরে। কোথাও বা সেসব ধানের আঁটিবোঝাই গরুর গাড়ি মেঠোপথে ক্যাচর ক্যাচর শব্দ তুলে গৃহস্থের বাড়ি বা ধানখোলার পথে চলে। ভোর থেকে হেমন্তের কুয়াশা নামে মাঠে। বিন্দু বিন্দু শিশির জমে থাকে ধান গাছের পাতায় পাতায়। ক্ষেতের ওপর ওড়াউড়ি করে ফড়িংয়ের দল। সোনালি ধানের ক্ষেত ডিঙিয়ে পূর্ব দিগন্ত রাঙিয়ে ওঠে ভোরের সূর্য। বৈচিত্র্য রূপের সাজে প্রকৃতিতে হেমন্ত বিরাজ করে। হেমন্ত ঋতুতে চলে শীত-গরমের খেলা। হেমন্তের শুরুর দিকে এক অনুভূতি আর শেষ হেমন্তে অন্য অনুভূতি। ভোরের আকাশে হালকা কুয়াশা, শিশিরে ভেজা মাঠ-ঘাট তারপর ক্রমেই ধরণী উত্তপ্ত হতে থাকে। সৌন্দর্য এবং বৈশিষ্ট্য লালিমায় বাংলার ঋতুর রানি হেমন্ত। কৃষিপ্রধান বাংলাদেশে এ ঋতুতেই প্রধান ফসল ধান ঘরে ওঠে। সারা বছরের মহাজনের কাছ থেকে ধার নেওয়া পাওনা পরিশোধের সুযোগ হয় ফসল ঘরে ওঠার পরেই। সারা বছরের মুখের খাবারের জোগানও আসে এ সময়।  হেমন্ত তাই সুখ-সমৃদ্ধির কাল। তাই মুখের হাসিটা অন্য সময়ের চেয়ে একটু বেশিই থাকে কার্তিকের এই নবান্নের দেশের মানুষের।


হেমন্ত এলে পাল্টে যায় প্রকৃতি ও মানুষ। গ্রামের পরিবেশে আনন্দ বিরাজ করে। গ্রাম্য মেলা, ঘরে ঘরে পিঠা-পায়েস বানানোর আয়োজন, ঢেঁকির শব্দ সব মিলিয়ে এক অন্যরকম প্রকৃতিকে বরণ করে নেয় হেমন্ত। প্রকৃৃতি রঙ বদলায় তার নিজস্ব নিয়মেই। প্রকৃতির পরতে পরতে কত বিচিত্র রঙ যে মিশে আছে! চোখ খুলে দেখলে মনের গহিনে তা উপলব্ধি করলে প্রাণ যায় জুড়িয়ে। বারবার প্রকৃতি তাই বিশ্ব চরাচরে এক রহস্যের নাম। বিশেষ করে বাংলা ঋতুর বহু বিচিত্র রূপ-রস-গন্ধ মানুষকে মুগ্ধ করে। বিস্মিত করে। এক অভাবনীয় রূপ সৌন্দর্যে বাংলার ঋতু-প্রকৃতি প্রতিটি বাঙালিকে ভাবালুতায় নিমজ্জিত করে। অনাদিকাল থেকে চলে আসছে এ প্রক্রিয়া। শিশিরস্নাত সকাল, কাঁচাসোনা রোদমাখা স্নিগ্ধসৌম্য দুপুর, পাখির কলকাকলি ভরা ভেজা সন্ধ্যা আর মেঘমুক্ত আকাশে জ্যোৎস্না ডুবানো আলোকিত রাত হেমন্তকে যেন আরও রহস্যময় করে তোলে সবার চোখে, প্রকৃতিতে এনে দেয় ভিন্নমাত্রা। নবান্ন মানেই চারদিকে পাকা ধানের ম-ম গন্ধ, নতুন অন্ন, গ্রামের মাঠে মাঠে চলে ধান কাটার ধুম, হেমন্তে এই ফসল কাটাকে কেন্দ্র করেই ঘরে ঘরে শুরু হয় নবান্ন উৎসব। গৃহস্থবাড়িতে নতুন ধানে তৈরি পিঠাপুলির সুগন্ধ বাতাসে ভেসে বেড়ায়। কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের চোখে হেমন্ত ধরা দিয়েছে ভিন্ন ভিন্ন রূপে। কবি রবীন্দ্রনাথ লেখেন, ‘হিমের রাতে ওই গগনের দীপগুলিরে,/ হেমন্তিকা করল গোপন আঁচল ঘিরে।/ঘরে ঘরে ডাক পাঠালো ‘দীপালিকায় জ্বালাও আলো,/ জ্বালাও আলো, আপন আলো, সাজাও আলোয় ধরিত্রীরে।’ আমাদের জাতীয় কবির কবিতায় ধরা পড়েছে হেমন্তের প্রকৃতির রূপ। ‘ঋতুর খাঞ্জা ভরিয়া এলো কি ধরণীর সওগাত?/ নবীন ধানের অঘ্রাণে আজি অঘ্রাণ হলো মাৎ।/ ‘গিন্নি পাগল’ চালের ফিরনি/ তশতরি ভরে নবীনা গিন্নি/ হাসিতে হাসিতে দিতেছে স্বামীরে, খুশিতে কাঁপিছে হাত।/ শিরনি রাঁধেন বড় বিবি, বাড়ি গন্ধে তেলেসমাত।’ হেমন্তে ধান পেকে মাঠের পর মাঠ যেন সোনালি-হলুদ রঙে সেজে ওঠে। হেমন্তের প্রকৃতি সকালের সোনারঙা রোদ বাড়িয়ে দেয় বাংলার পথঘাট আর মাঠের উজ্জ্বলতা, গ্রামের মাঠে যতদূর চোখ যায় সোনালি ধান। এসময় লাউয়ের মাচায় লিকলিকে প্রতিটি ডগার খিলখিল হাসি, হাওর-বিলে অতিথি পাখিদের ডানা ঝাপটানোর শব্দ। হেমন্ত মানেই নব উচ্ছ্বাস, নব সুর, নব শিহরণ। হেমন্তের নবজাগরণে কাননে কাননে ফোটে গন্ধরাজ, মল্লি­কা, শিউলি, কামিনী, পদ্ম, হাসনাহেনা, হিমঝুরি, দেবকাঞ্চন, রাজ-অশোকসহ নানা রঙ ও ঘ্রাণের অসংখ্য জাতের ফুল। সেসব ফুলের পাপড়ি ও গাছের পাতায় পাতায় ভোরের মৃদু শিশিরের স্পর্শ জানিয়ে দেয় শীত আসছে। তাই হেমন্তকে বলা হয় শীতের পূর্বাভাস। কার্তিক আর অগ্রহায়ণ, এ দুই মাস হেমন্তের হলেও হেমন্ত ততটা স্থায়িত্বের হয় না। হেমন্তের যৌবন খুবই অল্প সময়ের। এ অল্প সময়েই হেমন্ত তার রূপমাধুরীতে রাঙিয়ে দেয় প্রকৃতির প্রতিটি প্রহর। হেমন্তের সকালগুলো যেন হাঁসের পালকের মতো কোমল। জলজ বাতাসে গায়ে মাখা হিমঝুরির পাগল করা ঘ্রাণ। শব্দহীন ঝরে পড়া শিশিরধৌত সকাল অমৃত। হেমন্তের প্রতিটি প্রহরই যে মুগ্ধতার। হেমন্তের ঘুঘু ডাকা দুপুর, বাঁক খেয়ে ধানক্ষেতে নেমে আসা বালিহাঁসের ঝাঁক, কাকতাড়ুয়ার মাথায় বসে থাকা ফিঙে, শেষ বিকেলে পশ্চিম আকাশ রাঙিয়ে দেয়া সাত রঙের রংধনু। আর ভাবুক সন্ধ্যার প্রফুল্ল­তা ছেয়ে যায় মানুষের ভেতর জগৎ। জ্যোৎস্না ডুবানো আলোকিত রাতও যে প্রকৃতিকে করে তোলে অপরূপ। 


হেমন্তের এমনই মায়াময় প্রকৃতি মানব মননে অদ্ভুত তন্ময়তার সৃষ্টি করে। বিশেষত প্রাচীন বাংলায় হেমন্ত ঋতুর গুরুত্ব ছিল আরও বেশি। অর্থাৎ এদেশের অধিকাংশ মানুষ কৃষক ও কৃষিনির্ভর জীবিকা সেই প্রাচীনকাল থেকেই। পাকা ধান ঘরে তোলার সময় এই কার্তিক-অগ্রহায়ণ। মহাজনের ঋণ শোধ করে ঘরে ঘরে পিঠা-পায়েসের আয়োজনের উপলক্ষ এই হেমন্তেই। কালের বিবর্তনে সেই গুরুত্ব কমলেও হেমন্ত আজও কৃষকের ঘরে আনন্দের উৎস হিসেবে কাজ করে। বাংলার প্রতিটি ঋতুর রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন বৈশিষ্ট্য। ভিন্ন ভিন্ন রূপ। সব মিলিয়েই এই বাংলা। হেমন্তের মাঠ-ঘাট, শিশির ভেজা সকাল, মাঠের পাকা সোনালি ধান, কৃষকের ধান ঘরে তোলার দৃশ্য, ঘরে ঘরে ডোলা ভর্তি ধান, কৃষক-কৃষাণির আনন্দ সবই হেমন্তের রূপের অনুষঙ্গ। হেমন্তে শুকনো একটা রূপ উঁকি দেয় বিভিন্ন রূপে। যে রূপ শরতের নেই, যে রূপ বর্ষার নেই, যে রূপ গ্রীষ্মের নেই, যে রূপ বসন্তের নেই, যে রূপ শীতের নেই, সে অসম্ভব সুন্দর রূপ হেমন্তের, বিচিত্র ও বৈচিত্র্যময় এক অপরূপ। দীর্ঘ তাপদাহের পর এ রূপ প্রশান্তির। ভাদ্রের কাঠফাটা রোদের অতিষ্ঠতার পর শান্তির এই রূপকে কাগজে লিখে, মুখে বলে, ছবির ফ্রেমে দেখিয়ে, চিত্রের পটে এঁকে, নাট্যের বর্ণনায় ব্যাখ্যা করে বোঝানো যায় না, এর প্রকৃত সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলা যায় না। কি সিনেমায়, কি নাটকে, কি উপন্যাসে, কি গল্পে, কি কবিতায় তুলে আনা যায় না হেমন্তের সেই ধানের জমির সৌকর্য, সেদ্ধ ধানের প্রথম ভাতের মৌ মৌ গন্ধের তির্যকতা। তাই হেমন্তের সুন্দর শরীর দেখতে হলে কাঁচা মাটির দেশে যেতে হয়। পাড়াগাঁয়ে যেতে হয়। যেখানে এখনো ইটের ছোঁয়া লেগেছে, পিচের ছোঁয়া লাগেনি। আজানেরও আগে ঘুম ভেঙে বিস্তীর্ণ মাঠে নামলে, খালি পায়ে চললে, হাতের কাছেই কুয়াশার দেয়াল দেখা যায়, দেখা যায় ঘাসের মাথায় বড় ফোঁটা, পা পিছলে যায়, অনেক সময় বোঝা যায় না এ কি শীত না হেমন্ত। এমনই এক পারত্রিক মৌলিকতা হেমন্তজুড়ে। বাংলার মাটি অত্যন্ত উর্বর বলে সামান্য পরিশ্রমেই ফলমূল ফলানো যায়। বছরে ছয়টি ঋতু পালাক্রমে প্রকৃৃতিকে আপন মনে সাজিয়ে নেয়! উপহার দেয় রূপ, রস, গন্ধে ভরা সুস্বাদু বিভিন্ন ফল। এ হেমন্তকে তাই উৎসবের ঋতু বললেও ভুল হবে না। তাই হেমন্তে বিভিন্ন ধরনের ফলের সমারোহ ঘটে। এ ঋতুর বিশেষ কিছু ফল হলো কামরাঙা, চালতা, আমলকী ও ডালিম। নারিকেল এ ঋতুর প্রধান ফল। ফলে গৃহিণীর এসময় নারিকেলের তৈরি পিঠা বানায়, আর সে কষ্ট আনন্দময় হয়ে ওঠে সকালে তা পড়শিদের মাঝে বিতরণ করে। যা আমাদের রসনায় তৃপ্তিসাধন করে। হেমন্তের শেষের দিকে গ্রামে আরেকটি দৃশ্য চোখে পড়ে। গাছিরা কুয়াশা ভেঙে ধীর লয়ে হাঁটে, তরতর করে খেজুর গাছে ওঠে। ধারাল দা দিয়ে খেজুর গাছের মাথা চেঁছে রস নামানোর আয়োজন করে। হেমন্তের মাঝখান থেকেই শুরু হয় সেসব রস জ্বাল দিয়ে গুড় বানানোর মহোৎসব। গাঁয়ের অনেক গৃহস্থ বাড়ির উঠোনে বড় উনুন তৈরি করা হয়, তার ওপর তাপাল রেখে খেজুরের রস জ্বাল দেয়া হয়। রস জ্বালের ঘ্রাণে সারা গাঁ ম ম করে। হেমন্ত তো সেই মাছ-ভাত খাওয়ারই ঋতু। দেশের অনেক বিল-ঝিল-হাওর-বাঁওড় এ সময় শুকাতে শুরু করে। আর সেসব শুকাতে থাকা জলাশয়ে ধরা পড়তে থাকে মাছ। হেমন্তে অনেক মানুষ সেসব মাছ ধরতে নেমে পড়ে বিলে-ডোবায়। নানা রকম দেশি মাছে বাজার তেতে ওঠে। আইড়, বোয়াল, চিতল, পুঁটি, ট্যাংরা- কত রকমের মাছ যে ধরা পড়ে। হাওর-বাঁওড়-বিলে তাই হেমন্তে রচিত হয় দলে দলে ধান কাটার পাশাপাশি মাছ ধরাও। মাছ ধরা শেষে ডুলাভর্তি মাছ নিয়ে বীরবেশে ঘরে ফেরে মানুষ। কৃষাণির রান্নাঘর থেকে তাজা মাছ ভাজার গন্ধ চারদিকে জানান দেয়, ‘আহা কী আনন্দ আকাশে-বাতাসে...’! গ্রামের ঘরে ঘরে এই আনন্দ প্রবহমান থাকে, জাগরূক থাকে। 

এছাড়া হেমন্তে নানা ধরনের উৎসব-পার্বণে গ্রাম-বাংলার জীবন মুখরিত থাকে। থাকে আনন্দময়। হেমন্ত কালে অনেক শীতের সবজিও উঠতে শুরু করে। আগাম বাঁধাকপি, ফুলকপি, পালংশাক, মুলা কী নেই  হেমন্তের বাজারে? একদিকে কৃষক ধান কেটে গোলায় তোলে, অন্যদিকে চৈতালি বা রবি ফসল বোনার কাজ শুরু করে। লাখ লাখ কৃষক-কৃষাণীর জীবনে যেন নেমে আসে এক অনাবিল পার্বণের আনন্দ, নতুন ধানে হয় নবান্নের উৎসব। এক কথায়, এক মহাব্যস্ততায় কাটে হেমন্তে কৃষকের দিনগুলো। হেমন্ত আসে, হেমন্ত যায়।  হেমন্ত মানেই আমরা এখন অনেকেই ভাবি নবান্নের ঋতু। কিন্তু হেমন্ত যে এক বহুরূপী প্রকৃতির শ্রেষ্ঠ এক ঋতু, সে কথা ভুলে যাই। নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়ার ঋতু হলো হেমন্ত। কখনো ঝড়-মেঘ, কখনো কুয়াশা। সবুজ ধানক্ষেতগুলো ধীরে ধীরে সোনারঙে বদলে যাওয়া। অতিথি পাখিদের আগমন শুরু। গাঁয়ে গাঁয়ে খেজুর গুড় আর পিঠার ঘ্রাণ। ঝকমকে তাজা মাছে সাজানো জেলেদের ডালা। এই তো আমাদের অনেক রূপের হেমন্তের বাংলাদেশের প্রকৃতি আর সে প্রকৃতির আশ্রয়ে আমরা একটু অন্যরকম হই হেমন্তের মানুষগুলো। মেঘমুক্ত নীল আকাশ। নীলের বাটি যেন উপুড় হয়ে পড়ে আছে হেমন্তের আকাশে। শুভ্র শরতের পর ধোয়ামোছা পরিষ্কার আকাশ মন কেড়ে নেয়। আহ! কী তৃপ্তির সুবাস বাতাস। খুব ক্ষণস্থায়ী হেমন্ত অল্প সময়ের মধ্যেই বিভিন্ন রূপে নিজেকে উপস্থাপন করে। তাই হেমন্তকে বলা হয় অনুভবের ঋতু। ম্লান, ধূসর, অস্পষ্ট। তাকে যেভাবে অনুভব করা যায়, সেভাবে দেখা যায় না। তার পরেও ঋতুর চাকায় চড়ে হেমন্ত আসে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশে, হেমন্ত আসে আমাদের চিরচেনা প্রিয় গ্রাম বাংলায়।

আপনার মন্তাব্য লিখুন
অনলাইনে কিশোরকন্ঠ অর্ডার করুন
লেখকের আরও লেখা

সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

আরও পড়ুন...

CART 0

আপনার প্রোডাক্ট সমূহ