এসো কুরআন শিখি
টেলিভিশনের সামনে খুব একটা বসা হয় না আফিফের। ভালো কিছু অনুষ্ঠান দেখে সে মাঝে-মধ্যে। তা ছাড়া, কয়েক দিন ধরে বেশ চাপ যাচ্ছে তার ওপর দিয়ে। পড়াশোনার চাপ। পড়তে পড়তে কিছুটা হাঁপিয়ে উঠেছে সে। বিকেলবেলা ভাবল- যাই, টেলিভিশনে দেখার মতো কী আছে, দেখি।
একটু পর চোখ ফিরিয়ে দেখল, দাদাও চুপচাপ এসে বসে পড়েছেন পাশে। রিমোট ঘোরাতে ঘোরাতে এক জায়গায় থামতেই হলো তাকে। সুন্দর একটি গান বাজছে-
এক হরফেই পাপড়ি খোলে দশটি নেকির ফুল
এক আয়াতেই ভাঙতে পারে লক্ষ-কোটি ভুল।
এক কিতাবের জেরিন রঙে নতুন জীবন লিখি-
এসো কুরআন শিখি!
‘এসো কুরআন শিখি’ নামের একটি অনুষ্ঠান শুরু হলো। চমৎকার। আফিফ যেন কোথায় হারিয়ে গেছে। ভাবছে- আহা! কুরআন নাজিলের জায়গাগুলো যদি ছুঁয়ে দেখতে পারতাম! যদি উড়ে যেতে পারতাম হেরাগুহায়, আরব মরুর পরতে পরতে! দাদাও দেখছেন খুব মনোযোগের সাথে, নীরবে।
অনুষ্ঠান শেষ হলে আফিফ বলল, দাদা! কুরআন শেখা এত সহজ, এত আনন্দের! এর আগে আমি এভাবে ভাবতেও পারিনি। দাদা বললেন- কুরআন অবশ্যই সহজ। আল্লাহ তায়ালাই বলেছেন- “আর আমি কুরআনকে সহজ করে দিয়েছি উপদেশ গ্রহণের জন্য। অতএব, কেউ কি আছে উপদেশ গ্রহণকারী?” (সূরা আল কামার : ২২)।
দেখো, কুরআন সহজ না হলে কি মানুষ তা স্মৃতিতে ধারণ করতে পারে? এমনকি, শিশুরাও তা হিফ্য্ করতে পারে অবলীলায়! কুরআনের কী নিরূপম মুজিজা! এ কুরআন কখনোই হারাবে না। কেউ মুছতে পারবে না এর একটি অক্ষরও! যদি কুরআনের একটি লিখিত কপিও না থাকে পৃথিবীতে, তবুও তা অবিকল এমনই থাকবে। থাকবে অগণিত মানুষের স্মৃতিতে, হৃদয়ের পাতায় পাতায়!
আফিফ বলল- জি দাদা! আমারও একটি আয়াত মনে পড়ছে। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন- “আমিই কুরআন নাজিল করেছি এবং অবশ্যই আমি তা হেফাজত করব।” (সূরা আল হিজর : ৯)।
দাদা আফিফের কপালে চুমু খেয়ে বললেন- মাশাআল্লাহ! তুমি তো কুরআন পড়তে পারোই। তবে আরও ভালো করে শিখতে হবে কিন্তু। আফিফ বলল- জি দাদা। আমার বন্ধুদেরও বলব এ কথা। আর ‘এসো কুরআন শিখি’ তাদেরও দেখতে বলব ইনশাআল্লাহ।
দাদা আফিফের দিকে হাসিমুখে তাকিয়ে রইলেন। যেন তার মুখ থেকে ছড়িয়ে পড়ছে কুরআনের সৌরভ!