Home কুরআন ও হাদিসের আলো হাদীসের আলো কানাকানি

কানাকানি

ছোট চাচ্চু মানেই যেন গল্পমানব। যখন তখন যেকোনো বিষয়ে তিনি অবিরাম গল্প বলে যেতে পারেন। না, কোনো ভূত-পেত্নীর গল্প নয়। রাক্ষস-খোক্কস, দৈত্য-দানোর আজগুবি কাহিনিও নয়। তিনি বলেন আলোকিত মানুষের গল্প। নবী-রাসূলদের জীবন থেকে খুঁজে পাওয়া সৌরভের গল্প।
আজ তিনি বলছেন জিবরাইলের গল্প!
জিবরাইলের গল্প বলার পেছনেও একটি গল্প আছে। আজ ফজরের পর উমাইর ও জুবাইর মসজিদে কুরআন পড়তে যেতে চাইছিল না। চাচ্চু তাদের বলেছিলেন, যদি কেউ জ্ঞানের খোঁজে বের হয়, ফেরেশতারা তার জন্য তাদের ডানাগুলো বিছিয়ে দেন। উমাইর বলেছিল, ফেরেশতাদের ডানা আছে? চাচ্চু জানালেন, শুধু জিবরাইল (আ)-এরই ছয় শ’ ডানা আছে। কুরআন পড়ে এলে, তাদেরকে তাঁর গল্প শোনানো হবে।
চাচ্চু বললেন, জিবরাইল হলেন প্রধান ফেরেশতা। নবী-রাসূলদের কাছে তিনি ওহি নিয়ে আসতেন। জুবাইর বলল- আগে বলো, তাঁর ডানাগুলো কেমন? চাচ্চু বললেন, তাঁর একেকটা ডানা পৃথিবীর পূর্ব থেকে পশ্চিম প্রান্ত পর্যন্ত ছড়ানো। সেগুলো থেকে প্রতিনিয়ত মণি-মুক্তা ঝরতে থাকে। তাঁর ডানার রং সবুজ, পায়ের পাতার রংও সবুজ। ফেরেশতার আকৃতিতে তাঁকে মহানবী (সা) এমনই দেখেছেন। মহানবী (সা) জিবরাইলকে মানুষের আকৃতিতেও দেখেছেন। তিনি মহানবীর কাছে দিহইয়া আল কালবি (রা)-এর রূপ ধরে আসতেন। আর দিহইয়া আল কালবি (রা) ছিলেন খুবই সুন্দর একজন মানুষ। তাকে বলা হতো বনু কালবের ইউসুফ!
উমাইর বলল, ইউসুফ (আ)-কি অনেক সুন্দর ছিলেন? চাচ্চু বললেন, হ্যাঁ। তাকে তো মিসরের মহিলারা ফেরেশতা মনে করেছিল!
জুবাইর বলল, চাচ্চু! আমার একটি কথা আছে। তবে তোমাকে একাকী বলব। কানে কানে। চাচ্চু সাফ জানিয়ে দিলেন, তোমার এমন কথা আমি শুনতে পারব না! কারণ, মহানবী (সা) বলেছেন, “যখন তিনজন একসাথে থাকবে, তখন একজনকে রেখে অপর দু’জন যেন কানে কানে কথা না বলে।” (বুখারী ও মুসলিম)
জুবাইর এবার বলল, এমন কাজ তো আমরা প্রায়ই করি। চাচ্চু বললেন, আজ থেকে আর করা যাবে না। কারণ, এতে তৃতীয়জন মনে কষ্ট পেতে পারে। ভাবতে পারে, তাকে নিয়েই কোনো কথা হচ্ছে হয়তো! এতে তৈরি হতে পারে বড়ো ধরনের ভুল বোঝাবুঝি।
উমাইর বলল- আমি কিন্তু সত্যিই কষ্ট পেতাম, যদি তোমরা আমাকে রেখে কথা বলতে! চাচ্চু বললেন, তাহলে এ কথাটা সবার মনে থাকে যেন। আজ এতটুকুই। অন্যদিন আমরা অন্য বিষয়ে গল্প শুনব ইনশাআল্লাহ।

– বিলাল হোসাইন নূরী

SHARE

Leave a Reply