Home ভ্রমণ ঘুরে এলাম মেঘরাজ্য সাজেক থেকে -আব্দুল্লাহ আল নাসিফ

ঘুরে এলাম মেঘরাজ্য সাজেক থেকে -আব্দুল্লাহ আল নাসিফ

তখন বেলা তিনটা বাজে। সুবর্ণ এক্সপ্রেস কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে ছুটে চলছে চট্টগ্রামের উদ্দেশে।
ভ্রমণ করার জন্য আমি, আব্বু, আমার ছোটো বোন জাহরা, খালা, মুসআব, জিহান ভাইয়া, হুযাইফা ভাইয়া, নুরুল, আমার খালাতো বোন আনিসা আপু, সাথে আমার বড়ো মামা, বড়ো মামি ও মামাতো বোন সুহাইলা কে নিয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওয়ানা দিলাম।
ট্রেন বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন ছাড়িয়ে ঝক ঝকা ঝক শব্দ করে গাজীপুর হয়ে আখাউড়া পেরিয়ে কুমিল্লার লাকসামে প্রবেশ করল। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ট্রেন ফেনীতে ঢুকে পড়ল।
ধীরে ধীরে রাত নয়টার দিকে ট্রেন চট্টগ্রাম স্টেশনে গিয়ে থামল। আমার আম্মু আগে থেকেই চট্টগ্রামে ছিল। আমার আম্মু আইআইইউসির টিচার। তাই আগে থেকেই আমাদের জন্য সব কিছু প্রস্তুত করে রাখা হয়েছিল। তারপর বাসায় পৌঁছে সবাই হাতমুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে ওযু করে এশার নামাজ পড়ে আমরা সবাই খেতে বসলাম। তারপর সবাই ঘুমিয়ে পড়ল।
পরের দিন শুক্রবার, ফজরের সালাত আদায় করার পর, আব্বু একটা ১৪ সিটের মাইক্রো ভাড়া করার জন্য বের হলেন। আমরা সবাই খেয়ে দেয়ে নিলাম। তারপর, আমরা সবাই রেডি হয়ে গুলিয়াখালি সি-বিচের উদ্দেশে রওয়ানা দিলাম। গুলিয়াখালি যাওয়ার পথেই তো আম্মুর বিশ্ববিদ্যালয়, তাই সবাই ভাবল একটু দেখেই যাই। পরিদর্শনের পরে আমরা সবাই আবার গুলিয়াখালির দিকে যেতে লাগলাম।
গুলিয়াখালি পৌঁছে, আমরা গাড়ি থেকে নামলাম। তারপর, আস্তে আস্তে সমুদ্রের দিকে হেঁটে যেতে লাগলাম। গাড়ি থেকে নেমে সাগরের দিকে যাওয়ার যে পথ, তা এতই কর্দমাক্ত, যে পা দিলেই হাঁটু সমান কাদার ভেতর পা দেবে যায়। পিচ্চিদের মধ্যে ছিল মুসআব ও সুহাইলা। তারা দুইজন তো আর কাদার ভেতর দিয়ে হেঁটে যেতে পারবে না, তাই মুসআব উঠল তার খালুর ঘাড়ে আর সুহাইলা উঠল তার আব্বু অর্থাৎ, আমার মামার ঘাড়ে। এদিকে আমি, জিহান ভাইয়া, নুরুল, হুযাইফা ভাইয়া, আনিসা আপু আর জাহরা জুতা খুলে কাদার ভেতর নেমে পড়লাম। বিশ মিনিট ধরে কাদাপথ পাড়ি দিয়ে এবার আমরা সমুদ্রের পানি ছুঁইতে পারলাম। এ সময় আম্মু, খালা ও মামি আস্তে আস্তে করে কাদাপথ পাড়ি দিচ্ছেন।
সাগরে এসে সবাই লাফালাফিতে ব্যস্ত। কেউ ব্যস্ত ছবি তোলায়, কেউ ব্যস্ত ভিডিওতে। জাহরা, মুসআব ও সুহাইলা বালির ওপর বিভিন্ন কিছু লিখছে, বালি জমা করে তা দিয়ে ঢিবি বানাতে চাচ্ছে, কিন্তু সাগরের ঢেউ এসে তাদের ঐসব জিনিস চুরমার করে দিয়ে যাচ্ছে। অনেকক্ষণ লাফালাফির পর, এবার আমরা সবাই আবারও সেই কাদাপথ পাড়ি দিয়ে শুধু পা ধুয়ে নিলাম। সমুদ্রে লাফালাফি করে সবার খুব পানি পিপাসা লেগেছে। তাই সবাই পানি পান করে নিলো।
পানি পান করার পর সবাই গাড়িতে উঠল। গাড়িতে উঠেই সবাই ঘুম। বারোটার দিকে আমরা বাসায় গিয়ে নামলাম। যারা জুমার নামাজে যাবে, তারা আগে গোসল করে নিয়ে জুমার নামাজে চলে গেল।
এরপর গোসল করতে যারা বাকি ছিল তারা সবাই গোসল করে নিলো। জুমার নামাজ থেকে ফিরে সবাই খাওয়া শেষ করল। এবার আবার, সবাই ব্যাগ গুছিয়ে নিয়ে মাইক্রোতে উঠে পড়লাম। মাইক্রোতে করে অক্সিজেন মোড়ে যাচ্ছি। অক্সিজেন মোড়ে পৌঁছে আমরা মাইক্রো ছেড়ে দিয়ে বিকাল চারটার বাসে উঠলাম। চট্টগ্রাম থেকে খাগড়াছড়ি যাওয়ার জন্য শান্তি পরিবহনটাই বেটার, তাই আমরা শান্তি পরিবহনেই উঠলাম।
বাস চলছে খাগড়াছড়ির উদ্দেশে, এমন সময় বাস যানজটে আটকে গেল। ট্রাক উল্টে যাওয়ার কারণে যানজট বেঁধে গিয়েছিল। প্রায় দুই ঘণ্টা পর রাস্তার যানজটের সমাধান হলো। বাস চলছে পর্বতী রাস্তায়। ধীরে ধীরে আলুটিলা পাহাড়ে বাস উঠতে শুরু করল। আলুটিলা থেকে নেমে শহরে পৌঁছে আমরা বাস থেকে নামলাম। হোটেল হিল টাচ্ নামক একটি হোটেলে তিন রুম ভাড়া করলাম। সেখান থেকে হাতমুখ ধুয়ে ওযু করে সালাতুল এশা আদায় করে নিলাম। তারপর, খাবার হোটেলে গিয়ে আলুভর্তা, ডাল, ভাত, মুরগির গোশত, রুই মাছ দিয়ে রাতের আহার শেষ করলাম। আহার শেষ করে হেঁটে হেঁটে থাকার হোটেলে গিয়ে রাত সাড়ে দশটার দিকে সবাই ঘুমিয়ে পড়লাম।
পরের দিন শনিবার, ভোরবেলা উঠে সালাতুল ফজর আদায় করে নিলাম ও গোসল করে নিলাম। ঢাকা থেকে খালু জুমার নামাজ পড়িয়ে নাইট কোচে করে খাগড়াছড়ির উদ্দেশে রওয়ানা দিয়ে শনিবার ভোর ছয়টার দিকে এসে আমাদের সঙ্গে মিলিত হলেন। খালু এসে তাড়াতাড়ি করে গোসল করতে লাগলেন আর আব্বু আর মামা চান্দের গাড়ি রিজার্ভ করে নিয়ে এলেন। সাজেক যাওয়ার চান্দের গাড়িই ভালো। কেননা, চান্দের গাড়ি সহজে পাহাড়ে চলতে পারে।
চান্দের গাড়িতে করে খাবার হোটেলে গেলাম। কেউ খেল পরোটা, ডালভাজি, দুধ চা আবার কেউ খেল খিচুড়ি। দুই হোটেলের বিল পরিশোধ করলাম। এবার, গাড়ি পুরো দমে সাজেকের রাস্তায় চলা শুরু করল। সাজেকের অবস্থান রাঙ্গামাটি জেলায় হলেও খাগড়াছড়ি থেকে সড়কপথে যাওয়াই বেশি সুবিধাজনক। খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক পর্যন্ত ৬২ কিলোমিটার পিচঢালা রাস্তা। সাজেক বর্তমানে বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে বেশ খ্যাতি অর্জন করেছে।
আস্তে আস্তে করে বন্ধুর রাস্তা দিয়ে চলতে চলতে গাড়ি সম্প্রীতি নামক ক্যান্টিনের পাশে থামল। শুধু আমাদের গাড়ি নয়, সব গাড়িকেই এখানে থামতে হবে। কেননা, এখানে সেনাবাহিনী সব গাড়ি চেক আপ করে ও সব গাড়িগুলোর একেবারে সামনে, পিছনে ও মাঝখানে তাদের গাড়ি রেখে সমস্ত গাড়িকে নিরাপদে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এখান থেকেই সাজেকে যাওয়ার পথের প্রচুর উঁচু-নিচু রাস্তা শুরু হয়েছে। এভাবে করে দুপুর বারোটার দিকে গাড়ি সাজেকের সর্বোচ্চ উচ্চতায় পৌঁছে গেল।

আমরা যে হোটেলে উঠেছিলাম তার নাম প্যারাডাইজ সাজেক। এ হোটেল ছাড়াও আরও অনেক হোটেল রয়েছে। সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে দু’টি হোটেল রয়েছে একটি সাজেক রিসোর্ট আরেকটি রুনময়। সাজেক ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ১৮৭৫ ফুট ওপরে। রুইলুই পাড়া, কংলাক পাড়া ও হামারিপাড়া মিলে সাজেক গঠিত। সাজেক যাওয়ার উপযুক্ত সময় হলো বর্ষাকাল ও শীতকাল। এসময় গেলে মেঘের আনাগোনা দেখা যায়। সাজেকে রয়েছে তিনটি হেলিপ্যাড। সাজেকের রুইলুই পাড়া থেকে ট্রেকিং করে কংলাক পাহাড়ে যাওয়া যায়। সাজেকের সর্বোচ্চ চূড়া কংলাক। সাজেকে সর্বত্র মেঘ, পাহাড় আর সবুজ। সাজেক বাংলাদেশের সবচেয়ে বড়ো ইউনিয়ন। যার আয়তন ৭০২ বর্গমাইল। সাজেককে রাঙ্গামাটির ছাদও বলা হয়। কেননা, সাজেক থেকে রাঙ্গামাটির প্রায় সব কিছুই দেখা যায়। বাঘাইছড়ি উপজেলার উত্তরাংশ জুড়ে সাজেকের অবস্থান। সাজেক ইউনিয়নে যোগাযোগের প্রধান সড়ক দীঘিনালা-সাজেক সড়ক ও বাঘাইছড়ি-সাজেক সড়ক। যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম চান্দের গাড়ি ও মোটরসাইকেল। ২০১১ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী সাজেক ইউনিয়নের লোকসংখ্যা ২৩,২০৫ জন। সাজেকে বসবাস করে মূলত লুসাই, পাংখোয়া ও ত্রিপুরা। এছাড়াও নানা নৃ-গোষ্ঠীরা বসবাস করে।
সাজেক সম্পর্কে তো অনেক কথাই বললাম তাহলে এবার গল্পে ফিরে যাই। সাজেক গিয়ে আমরা যে হোটেলে উঠলাম তার নাম প্যারাডাইজ সাজেক। সেটাতো আগেই বলেছি। হোটেলে তিন রুম ভাড়া করলাম। প্রায় ঘণ্টা দুয়েক বিশ্রাম নিয়ে দুপুরের খাবারের অর্ডার করলাম। তারপর, সালাতুল জোহর আদায় করে তিনটার দিকে খাবার হোটেলে খেতে গেলাম। খাবার মেনুতে ছিল আলুভর্তা, ডাল, ভাত, মুরগির গোশত ও সবজি। আমরা যে হোটেলে খেয়েছিলাম তার নাম শান্তা হোটেল। খাওয়া শেষ করে তিন বোতল পানি কিনে আবার থাকার হোটেলে ফিরে এলাম।

এবার, অন্য আরেক জায়গাতে যাওয়ার পালা। তার নাম কংলাক পাহাড়। তাই চান্দের গাড়ি নিয়ে ড্রাইভারকে আসতে বলা হলো। গাড়ি চলে আসার পর সবাই গাড়িতে উঠে পড়ল। কেউ যদি গাড়ির ছাদে উঠে বসতে চায়, তাহলে সে গাড়ির ছাদে বসতে পারে। তাই আমি, নূরুল, জিহান ভাইয়া, হুযাইফা ভাইয়া গাড়ির ছাদে উঠে বসলাম। গাড়ি থেকে আমরা কংলাকের পাদদেশে নেমে গেলাম। সেখান থেকে বাঁশ কিনে একেক জনের কাছে একেকটি বাঁশ দিয়ে সবাই একত্রে কংলাক জয়ের জন্য কংলাকের চূড়ার দিকে উঠতে শুরু করলাম। উঠার সময় বাঁশের প্রয়োজন তেমন একটা লাগে না, কিন্তু নামার সময় বাঁশ একটি অপরিহার্য উপাদান। তাই বাঁশ নেয়াটাই ভালো। এভাবে আমরা কংলাকের চূড়ায় পৌঁছে গেলাম। সেখানে সালাতুল আসর আদায় করে আমরা উপজাতিদের দোকানে চা খেলাম। কেউ খেল রংচা, কেউ খেল দুধ চা আবার কেউ খেল তেঁতুল চা। সাজেকে চা খাওয়ার পাত্র হিসেবে দু’টি জিনিস ব্যবহার করা হয়। একটি চায়ের কাপ, অন্যটি বাঁশ। কেউ ইচ্ছা করলে বাঁশেও খেতে পারে আবার কাপেও খেতে পারে। চা খাওয়া শেষ করে পাহাড় থেকে নেমে গাড়িতে উঠলাম। গাড়ি আমাদের সাজেকের হেলিপ্যাডের একটিতে নিয়ে গেল। একটা কথা বলে দেই যে, হেলিপ্যাডটি তৈরি করা হয়েছে শুধুমাত্র সেনাবাহিনীদের জন্য। সাজেকের সব জায়গা সেনাবাহিনীর পর্যবেক্ষণে রয়েছে। হঠাৎ যদি কোনো সেনাবাহিনী গুরুতর অসুস্থ হয়ে যায়, তাহলে চিকিৎসার জন্য তাদেরকে হেলিকপ্টারে করে নিয়ে যাওয়া হয়। হেলিপ্যাডের পাশে একটা মসজিদ আছে, সেখানে আমরা সালাতুল মাগরিব আদায় করে নিলাম। তারপর হেলিপ্যাডে বসে ঝালমুড়ি খেলাম। আশ্চর্যজনক ব্যাপার হলো, সাজেকে দিনের বেলায় প্রচণ্ড গরম, আর রাতে এত শীত যে লেপ গায়ে না দিলে হয় না। আর থাকার হোটেলে রীতিমতো লেপও রয়েছে।
হেলিপ্যাডে কিছুক্ষণ থাকার পর আমরা আবার গাড়িতে উঠলাম। এবার গিয়ে হোটেলে নামলাম। কিছুক্ষণ জিরিয়ে আবার সবাই এশার নামাজ পড়ে খাবার হোটেলে খাবার অর্ডার করলাম। তারপর সবাই হাঁটতে বের হলাম। হাঁটতে হাঁটতে আমরা একটা পার্কে গিয়ে পৌঁছালাম। কিছুক্ষণ অবস্থান করে এবার খাবার হোটেলের দিকে যেতে লাগলাম। হোটেলে পৌঁছে সবাই চেয়ারে বসে পড়লাম। সাজেকের সকল খাবার হোটেলগুলোতে রাতে রয়েছে সাজেকের অন্যতম খাবার ব্যাম্বু চিকেন। তল্লা বাঁশ কেটে ধুয়ে তার ভেতর মুরগির গোশত ও মসলাপাতি দিয়ে সেটাকে সিদ্ধ করলেই ব্যাম্বু চিকেন তৈরি হয়ে যায়। পরে সেটাকে বাঁশ অথবা বাটিতে পরিবেশন করা হয়। তারপর আমরা খাবার হোটেল থেকে খেয়ে থাকার হোটেলে ফিরে গেলাম এবং ঘুমিয়ে পড়লাম।
পরের দিন ভোরে উঠে ফজরের নামাজ আদায় করে নিলাম। ফজরের নামাজ পড়ে কেউ আর ঘুমালাম না। কেননা, সাজেক ভ্রমণ উপভোগ করার জন্য ভোরের এই সময়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ সময় সাজেকের পূর্বদিক থেকে সূর্যোদয় উপভোগ করা যায়। শীতকাল ও বর্ষাকালে মাঝে মাঝে মেঘ এসে ধরা দেয়। মেঘের আড়াল দিয়ে সূর্যের উদয় হয়। এজন্য আমরা সেই সূর্যোদয়ের মনোরম দৃশ্য উপভোগ করলাম, হাঁটাহাঁটি করলাম, সাজেকের ঐতিহ্যবাহী ‘লুসাই গ্রাম’ ঘুরে দেখলাম। এক পর্যায়ে সকাল আটটা বেজে গেল। রাতেই খাবার হোটেলে সকালের খাবারের অর্ডার করা ছিল। তাই তাড়াতাড়ি করে হোটেলে গিয়ে খিচুড়ি, ডিম ভুনা, মুরগির গোশত ও তেঁতুলের চাটনি দিয়ে সকালের আহারাদি শেষ করলাম। তারপর থাকার হোটেলে ফিরে ব্যাগ গুছিয়ে নিলাম। চান্দের গাড়িকে আসতে বলা হলো। চান্দের গাড়িতে সব ব্যাগ উঠিয়ে নিলাম এবং থাকার হোটেলের বিল পরিশোধ করলাম। এবার সবাই চান্দের গাড়িতে উঠে সাজেকের আরো কয়েকটি জায়গা ঘুরে দেখে গ্রুপ ফটো তুলে সাজেক থেকে বিদায় নিলাম।

SHARE

Leave a Reply