পাহাড়ে যাওয়ার ইচ্ছে তাদের বহুদিনের। তাদের সে সাধ পূরণ করতেই ছোট মামা হাজির হয়েছেন এবার।
হাসসান ও হামদান যেন মেঘচিল হয়ে পাহাড় চূড়ায় ভাসছে, কল্পনার রাজ্যে। তারা যাবে সাজেকের কংলাক পাহাড়ে। দেরি আর সইছে না তাদের।
হাসসান বলল, আমরা তাহলে কখন যাচ্ছি মামা?
– বৃহস্পতিবার।
– এখনো তো দু’দিন দেরি!
– হ্যাঁ। দু’দিন দেরি হলেও আমরা বৃহস্পতিবারই যাচ্ছি ইনশাআল্লাহ। কারণ, ‘মহানবী (সা.) বৃহস্পতিবার সফরে যেতে পছন্দ করতেন।’ (বুখারি)
মামা বললেন, বাংলাদেশের পাহাড় সম্পর্কে তোমরা কে কী জানো? হামদান বলল, আমাদের কাছে শোনার চেয়ে তুমিই কিছু বলো।
– আচ্ছা। শোনো তাহলে। সমতল ভূমির দেশ হলেও বাংলাদেশের বুকে মাথা উঁচুু করে দাঁড়িয়ে আছে অসংখ্য ছোট-বড় পাহাড়। এগুলোর অবস্থান হচ্ছে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ময়মনসিংহ ও কুমিল্লার লালমাই এলাকায়। বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটিকে একত্রে বলা হয় ‘পার্বত্য জেলা’।
হাসসান বলল, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় পাহাড় কোনটি, মামা?
– ময়মনসিংহের ‘গারো পাহাড়’। তবে সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ হলো ‘তাজিনডং’- যার অপর নাম বিজয়। আর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ হচ্ছে ‘কেওকারাডং’।
মামা বললেন, আজ এ পর্যন্তই! পরে আবার কথা হবে।
দু’দিন পর। তারা সত্যি সত্যি পৌঁছে গেল কংলাক পাহাড়ে। মেঘ, পাহাড় আর সবুজের অপূর্ব মিতালি যেখানে রচনা করেছে নতুন জীবনের মহাকাব্য। পাহাড়ে উঠতে উঠতে মামা বারবার বলছিলেন- ‘আল্লাহু আকবার’। দুই ভাইয়ের কৌতূহলী মন এর কারণ জানতে চাইলে তিনি জানালেন, মহানবী (সা.) যখনই কোনো পাহাড়ি উঁচু জায়গায় চড়তেন, তখন তিনবার ‘আল্লাহু আকবার’ বলতেন। আবার নামার সময় বলতেন ‘সুবহানাল্লাহ।’ (বুখারি, আবু দাউদ)
হামদান বলল, চলো আমরাও এর ওপর আমল করি। হাসসান বলল, অবশ্যই।
ফেরার পথে, বাসার কাছাকাছি এসে মামা বললেন, মহানবী (সা.) যখনই সফর থেকে ফিরতেন, প্রথমেই মসজিদে গিয়ে দু’রাকাত সালাত পড়তেন। চলো আমরাও সে কাজটাই করি। আল্লাহ আমাদের নিরাপদে ফিরিয়ে এনেছেন, এ জন্য আদায় করি তাঁর শুকরিয়া!
হাসসান বলল, ধন্যবাদ মামা! এ সফরে অনেক কিছুই শেখা হলো আমাদের।
হামদানও বলল- জাজাকাল্লাহু খাইরান, মামা।
বিলাল হোসাইন নূরী