বাসায় আজ অনেক মেহমান। ফুফুরা এসেছেন। ফুফাতো ভাই-বোনদের কোলাহলে সারা বাড়ি মুখরিত। বাসায় মেহমান এলে চারদিকে ঈদ ঈদ লাগে! পড়ালেখা নেই। কারো শাসন নেই। বাহ! কী সুন্দর জীবন। মুনীরা, আয়েশা ও মালিহার অনুভূতি ঠিক এমনই।
এই তিন পরীকে আজ ঘুমাতে হচ্ছে মুহসিনা আপুর সাথেই। আয়েশা বলল, ইস! বাড়িটা যদি আরও বড় হতো, তাহলে মেহমান এলেও জায়গার অভাব হতো না আমাদের। আপু বললেন- যা আছে, তা নিয়েই খুশি থাকো। এটা কি জান্নাত, যে আকাশ-জমিন পরিমাণ জায়গা প্রয়োজন তোমার?
– জান্নাত! আকাশ-জমিন! জান্নাত কি সত্যি এত বড় হবে?
– হ্যাঁ। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন- “তোমরা ছুটে চলো তোমাদের প্রতিপালকের ক্ষমার দিকে। এবং সেই জান্নাতের দিকে, যার বিস্তৃতি আকাশ ও জমিনের মতো। যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে মুত্তাকিদের জন্য।” (সূরা আলে-ইমরান : ১৩৩) যেভাবে এক অংশ কাপড়ের সাথে আরেক অংশকে জোড়া দেওয়া হয়, সেভাবে সাত আকাশ ও সাত স্তর জমিন মিলানো হলে যে জায়গা হবে, তা-ই জান্নাতের প্রশস্ততা!
মুনীরা, আয়েশা ও মালিহা বলে উঠল- সুবহানাল্লাহ!
মুহসিনা আপু বললেন- এবার একটি হাদিস শোনাই। আর তোমরা চোখ বন্ধ করে একটু কল্পনায় ডুব দাও। তাহলে হয়তো কিছুটা অনুমান করতে পারবে- জান্নাত কত বড়! মহানবী (সা.) বলেছেন- “জান্নাতে একটি বৃক্ষ আছে। কোনো ঘোড়-সওয়ার শত বছর ঘোড়া হাঁকালেও তার ছায়া শেষ হবে না।” (বুখারি)
মালিহা বলল, আল্লাহ আমাদের জন্য এত বড় নিয়ামত তৈরি করে রেখেছেন!
– হ্যাঁ! সেখানে কারও অতৃপ্তি থাকবে না। সবশেষে যে জান্নাতে যাবে, আল্লাহ তাকে বলবেন- যাও! জান্নাতে প্রবেশ করো। তোমার জন্য তা পৃথিবীর সমান এবং তার দশ গুণ! তখন সে বলবে, মালিক! আপনি কি আমার সাথে মজা করছেন? (এ কথা বলতে গিয়ে মহানবী সা. মাড়ির দাঁত প্রকাশ করে হেসে ফেলেছিলেন) এবং বলেছেন, এ হলো সর্বনিম্ন জান্নাতির অবস্থান! (বুখারি)
মুনীরা বলল, তাহলে সর্বোচ্চ জান্নাতির অবস্থান তো কল্পনাই করা যায় না!
আপু বললেন- হ্যাঁ। এসো, আমরা আল্লাহর কাছে সেরাটাই চাই- জান্নাতুল ফেরদাউস!