সকল প্রশংসা তাঁর
‘প্রশংসা তোমার সব দিগন্তে শুনি নিরন্তর’- এ গানটি ভীষণ প্রিয় নাজিমের। প্রায় সময়ই এ গান সে গুনগুন করে গেয়ে বেড়ায়। সেদিন বিকেলবেলা, কম্পিউটারে ফুল ভলিউমে এ গান বেজেই চলছিল। নাজিম চোখ বন্ধ করে যেন হারিয়ে গেছে মুগ্ধতার সবুজ অরণ্যে। বাবার চোখে ধরা পড়ল এ মধুর দৃশ্য। বাবাও পাশে বসে শুনতে লাগলেন। নাজিম চোখ খুলে হঠাৎ বাবাকে দেখে চমকে উঠল। বাবা বললেন, এ গান তো আমারও প্রিয়। চলো, আমরাও আল্লাহর প্রশংসা আদায় করি- আলহামদুলিল্লাহ।
বাবা বললেন, মহানবী (সা) বলেছেন- সবচেয়ে উত্তম দোয়া হচ্ছে ‘আলহামদুলিল্লাহ’। (তিরমিজি)। আর তা মিজান পূর্ণ করে দেয়। (মুসলিম)।
নাজিম বলল, বাবা! মানুষ একে অপরের প্রশংসা কিভাবে করবে?
বাবা জানালেন- একবার একলোক মহানবী (সা)-এর সামনে অপর একজনের খুব প্রশংসা করল। তখন তিনি বললেন, তোমার ধ্বংস হোক! তুমি তো তোমার ভাইয়ের গলা কেটে ফেলেছ (কথাটি তিনি তিনবার বললেন)! তোমাদের কেউ যদি কারো প্রশংসা করতেই চায়, তাহলে সে যেন বলে- ‘আমি অমুকের ব্যাপারে এরূপ ধারণা করি, তবে আল্লাহই ভালো জানেন’। (এ কথাও তখন বলবে), যখন বুঝতে পারবে লোকটি বাস্তবেই অনুরূপ। আর কাউকে পূত-পবিত্র আখ্যায়িত করতে গিয়ে আল্লাহর ওপর বাড়াবাড়ি করবে না। (বুখারি, মুসলিম)।
নাজিম বলল, আমাদের দেশে তো বিভিন্ন মিছিলে এবং সভায় একটা কথা প্রায়ই শোনা যায়- ‘অমুক নেতার চরিত্র, ফুলের মতো পবিত্র’!
বাবা জানালেন, এগুলো খুবই জঘন্য কথা। একবার এক লোক দাঁড়িয়ে একজন নেতার প্রশংসা করতে শুরু করল। মিকদাদ (রা) তার মুখে মাটি ছুড়ে মারলেন এবং বললেন, রাসূল (সা) আমাদেরকে অতিমাত্রায় প্রশংসাকারীদের মুখে মাটি ছুড়ে মারতে নির্দেশ দিয়েছেন। (মুসলিম)। সুতরাং আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো প্রশংসা করতে হলে বুঝে-শুনে শব্দচয়ন করতে হবে।
চলো, আমরা আবারও বলি- আলহামদুলিল্লাহ!
সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য!
– বিলাল হোসাইন নূরী