একটি ঘর বানিয়ে দাও
সোফায় বসে বই পড়ছেন মুহসিনা আপু। মুনীরা-আয়েশা-মালিহা দলবেঁধে এসে বসে পড়ল পাশে। মুনীরা বলল- কী বই পড়ছ আপু? আপু বললেন- জীবনী। আমাদের মা খাদিজা (রা)-এর জীবনী। ‘আমাদের মা?’- আয়েশার কণ্ঠে বিস্ময়! আপু বললেন, মহানবী (সা)-এর স্ত্রীরা হচ্ছেন ‘উম্মাহাতুল মুমিনিন’- মুমিনদের মা! বুঝেছ? মালিহা বলল, আমরাও কিছু জানতে চাই তাঁর জীবন থেকে।
আপু বললেন, শোনো তাহলে। একবার জিবরাইল মহানবী (সা)-এর কাছে এসে বললেন- ওই যে, খাদিজা আসছেন! (তার হাতে একটি পাত্র ছিল। তাতে ছিল তরকারি, খাবার অথবা পানীয়)। তিনি আপনার কাছে এলে তাঁর রবের পক্ষ থেকে এবং আমার পক্ষ থেকে সালাম জানাবেন! আর তাকে জান্নাতে মোতির তৈরি একটি প্রাসাদের সুসংবাদ দিবেন। যেখানে শোরগোল নেই। অবসাদও নেই। (বুখারি)।
তিনজনই বলে উঠল সুবহানাল্লাহ! মালিহা বলল, আচ্ছা আপু! আমাদের জন্য কি কোনো প্রাসাদ থাকবে না?
মুহসিনা আপু বললেন, অবশ্যই। তুমি যদি জান্নাতে যাও, আল্লাহ তোমাকে দিবেন ‘উত্তম বাসগৃহ’! (সূরা আস-সফ : ১২)। তার একটি ইট রৌপ্যের, আরেকটি স্বর্ণের। মিস্কের সিমেন্ট। মুক্তা ও ইয়াকুত পাথরের কঙ্কর। জাফরানের মাটি। যারা সেখানে প্রবেশ করবে, তারা সুখী হবে- কখনো দুঃখী হবে না। চিরস্থায়ী হবে, কখনো মরবে না। তাদের কাপড় পুরনো হবে না। যৌবনও শেষ হবে না। (তিরমিজি)।
মুনীরা বলল, এগুলো পেতে হলে আমাদের কী করতে হবে?
এর উত্তর মহানবী (সা)-এর কাছ থেকেই জেনে নিই- বললেন আপু। তিনি বলেছেন, ‘জান্নাতে এমন কিছু কক্ষ রয়েছে, যেগুলোর ভেতর থেকে বাইরে এবং বাইরে থেকে ভেতরে দেখা যায়। আল্লাহ এগুলো তৈরি করেছেন তাদের জন্য- যারা মানুষের সাথে উত্তম কথা বলে। ক্ষুধার্তকে খাবার খাওয়ায়। নিয়মিত সিয়াম পালন করে। রাতে মানুষ যখন ঘুমিয়ে পড়ে, তখন সালাত আদায় করে। (মুসনাদ আহমদ)।
সবশেষে আপু বললেন, চলো দোয়া করি- ‘হে আমার প্রতিপালক! তোমার কাছে জান্নাতে আমার জন্য একটি ঘর বানাও।’ (সূরা আত-তাহরিম : ১১)। সবাই একসাথে বলে উঠল- আমিন।
– বিলাল হোসাইন নূরী