Home ধারাবাহিক উপন্যাস উন্নত চরিত্রের সন্ধানে -আমিনুল ইসলাম ফারুক

উন্নত চরিত্রের সন্ধানে -আমিনুল ইসলাম ফারুক

(দ্বিতীয় অংশ)
মানব চরিত্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো সততা। সততাকে চরিত্রের মেরুদণ্ডও বলা যেতে পারে। সততা, ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব যেমন বৃদ্ধি করে তেমনি দল ও প্রতিষ্ঠানের উৎকর্ষতা বৃদ্ধিতে মুখ্যত ভূমিকা রাখে। সৎপথে উপার্জিত তোমার অল্প সম্পদের দামও অবৈধভাবে উপার্জিত কোটি টাকার সম্পদের থেকে বেশি।
সৎলোক সাতবার বিপদে পড়লেও আবার উঠে দাঁড়ায় কিন্তু অসৎ লোক একবার বিপদে পড়লে চিরতরে নিপাত যায়। সততা শব্দটিরই আলাদা একটা শক্তি আছে। এই শক্তিই একজন মানুষকে অনেক দূর এগিয়ে নেয়। অথচ এই সততা দুর্বল চরিত্রের মানুষ থেকে আশা করতে নেই। এ সম্পর্কে মার্কিন উদ্যোক্তা ও অর্থনীতিবিদ ওয়ারেন বাফেট একটি সুন্দর কথা বলেছেন, ‘সততা খুবই দামি একটা উপহার। তা কখনই সস্তা লোকের থেকে আশা করবেন না।’
মানব চরিত্রের সবচেয়ে ঘৃণিত এবং দুর্বল দিক হলো অহংকার করা। যারা নিজের মূল্য জানেন কেবল তারাই অহংকার করতে পারেন। যারা নিজের মূল্যই না জানবেন, তার পক্ষ থেকে অপরেকে মূল্যায়নের আশা করা অর্থহীন। অহংকারীদের পরিণতি যে কত ভয়ঙ্কর হবে সে ব্যাপারে আল্লাহ্ তায়ালা বলেছেন-
‘যাদের অন্তরে সামান্য পরিমাণ অহংকার থাকবে তারা অপমানিত হয়ে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।’ (কুরআন-২৩:৬০)
আল্লাহ্ তায়ালা হাদিসে কুদসিতে অন্যত্র বলেছেন, ‘অহংকার হচ্ছে আমার চাদর, এটা নিয়ে যেন কেউ টানাটানি না করে।’ (মুসলিম ১৬/১৭৩)
এরপরও অনেক বিদ্বানকে দেখা যায় অহংকার করতে কিন্তু বিদ্যার শেষ কোথায়? আল্লামা শেখ সাদীর (১২১০-১২৯১) মতো অত বড় জ্ঞানী বলতেন, ‘আমি জ্ঞান সমুদ্রের তীরে নুড়ি কুড়িয়ে বেড়াচ্ছি। আমি সব সময় স্বীকার করি যে, আমি কিছুই জানি না। সারাজীবন তিল তিল করে জ্ঞান আহরণ করে জীবন সায়াহ্নে এসে বুঝতে পেরেছি, জ্ঞানের হাজার ভাগের একভাগও অর্জন করতে পারিনি।’ অথচ শেখ সাদীর সময়কালে তাঁর সমসাময়িক জ্ঞানী দ্বিতীয় আরেকজন ব্যক্তি ধরাপৃষ্ঠে উপস্থিত ছিলেন না। বেঁচে থাকাকালীন পুরো সময়টা তিনি জ্ঞানার্জন এবং জ্ঞান বিতরণে কাটিয়ে দিয়েছিলেন।
আমরা সচরাচর যাদেরকে পণ্ডিত বা জ্ঞানী বলে মনে করি, তাদের বই পড়ে আত্মস্থ করবার ক্ষমতা এবং সেটা ধরে রাখবার ক্ষমতা সাধারণের থেকে অনেক বেশি। তারা সাধারণ কোনো কথা বলেন না; যা বলেন তা সবই অসাধারণ এবং মৌলিক কথা। তত্ত্ব এবং তথ্য দিয়ে কথা বলেন। আবার যদি কেউ বিজ্ঞানের কোনো সূত্র আবিষ্কার করেন দেখা যায় তা পরবর্তীকালে নতুন সূত্র বের হওয়ায় সে সূত্র অচল হয়ে গিয়েছে। জ্ঞান অনন্ত এবং পরিবর্তনশীল। তাই প্রকৃত জ্ঞানী জ্ঞানের অহঙ্কার করেন না বরং তার পরিবর্তে জ্ঞান বিতরণ করেন। মনে রাখবে, আত্মপ্রচার নয় জ্ঞান প্রচারই প্রভুর সেবা।
চরিত্র গঠনের আরেকটি দিক হলো শ্রদ্ধা। পিতা-মাতা গুরুজন এবং বড়দের প্রতি শ্রদ্ধা জাগিয়ে রাখতে হবে। প্রবাদে আছে ‘Courtesy begets courtesy’ অর্থাৎ ভদ্র ব্যবহার পেতে হলে ভদ্র ব্যবহার করতে হয়। সালামের মতো এত সুন্দর ঈড়ঁৎঃবংু সারা পৃথিবীতে আর নেই। সালামের মাধ্যমে বড়দের শ্রদ্ধা জানানোর সাথে সাথে তুমি নিজেকেও শ্রদ্ধা জানালে। তুমি মানুষকে সালাম এই জন্য দিলে যে, তোমার মধ্যে শিক্ষা আছে, সংস্কৃতি আছে, মূল্যবোধ আছে। বিশেষ করে পিতা-মাতার প্রতি শ্রদ্ধাটা অন্যের থেকে একটু বেশি থাকা চাই। মায়ের প্রতি ভালোবাসা চরিত্রের সবচেয়ে শক্তিশালী দিক। অনেকেই বলে আমার জীবনে উন্নতি নেই, টাকা নেই, পয়সা নেই, সম্মান নেই। যা রোজগার করি তাতে বরকত নেই। শুধু নেই আর নেই। কিন্তু আমি জানতে চাই তোমার মা দুনিয়ায় বেঁচে আছেন তো? পৃথিবীতে যার শুধু মা বেঁচে আছেন সে গরিব নয় বরং পৃথিবীর মধ্যে শ্রেষ্ঠ ধনী। তোমার মায়ের সন্তুষ্টি তোমাকে সাফল্যের স্বর্ণ শিখরে পৌঁছে দিতে পারে। একইভাবে তোমার মায়ের অসন্তুষ্টি তোমাকে ব্যর্থতার অতল গহিনে হারিয়ে দিতে পারে। বাসা থেকে বের হবার সময় মায়ের কাছ থেকে দোয়া নিয়ে বের হবে। নতুন কোনো গাছে ফল ধরেছে মাজার কিংবা মসজিদে নয়, মাকে তৃপ্তিসহকারে খেতে দাও। চাকরির প্রথম বেতন পেয়েছ মায়ের হাতে তুলে দাও। তুমি যেখানে থাকো, যেভাবে থাকো মাকে সন্তুষ্টি রাখতে চেষ্টা করো। দেখবে আরশের মালিক খুশি হয়ে গেছেন। এই দুনিয়ায় তোমার সবচেয়ে বড় পীর তোমার মা। মর্ত্যে মা সবচেয়ে বড়। বাবার অবস্থান স্বর্গের চেয়েও উঁচুতে।
আমার সমগ্র জীবনে মাতৃভক্ত সন্তানের খারাপ হতে দেখিনি; দেখেছি তুমুল বিপর্যয়ের মুখে কাকতালীয়ভাবে রক্ষা পেয়ে যেতে। তুমি মহাপুরুষ বায়জিদ বোস্তামিকে শ্রদ্ধা করো কিন্তু তাঁর আদর্শ তোমার চরিত্রে ফুটিয়ে তুলতে চেষ্টা করবে না, এই শ্রদ্ধা করাটা এক ধরনের ভণ্ডামি, বাতুলতা এবং তোমার বিবেকের সাথে প্রতারণার শামিল। শ্রদ্ধা, সৌজন্যতা ও বিদ্যা এই তিন বস্তু দান করলে ফুরিয়ে যায় না বরং তা শতগুণ হয়ে ফিরে আসে।
মানব চরিত্রের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে অন্যকে ক্ষমা করে দেওয়া। অন্যকে ক্ষমা করে দিতে পারা মানুষের মান-মর্যাদা কমায় না বরং অনেকাংশে বাড়িয়ে দেয়। কাউকে ক্ষমা করে একজন সাধারণ মানুষও পরিণত হতে পারে অসাধারণ মানুষে। কেউ ক্ষমা করে দিয়ে বড় হয় আবার কেউ বড় হয় ক্ষমা পেয়ে। পৃথিবীতে প্রতিশোধ গ্রহণের মাধ্যমে তুমি যতটা অর্জন করতে পারবে তারচেয়েও বেশি অর্জন করতে পারবে ক্ষমা প্রদর্শনের মাধ্যমে। চরিত্রের সর্বোত্তম ব্যবহারকারী মানুষ তারাই যারা ক্ষমাশীল এবং ধৈর্যশীল। খোদ মহান আল্লাহ্ তায়ালা নিজে ক্ষমাকারী এবং তিনি ক্ষমাকারীকে ভালোবাসেন। তিনি তাঁর এই বিশেষ গুণ বান্দার মাঝে ছড়িয়ে দিতে চান। তাইতো আল্লাহ তায়ালা বলেছেন,
‘যারা সুসময়ে এবং দুঃসময়ে আল্লাহর পথে ব্যয় করে, ক্রোধ সংবরণ করে এবং মানুষকে ক্ষমা করে, আল্লাহ্ তাদেরকে ভালোবাসেন।’ (কুরআন ৩ : ১৩৪)
সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে অকুণ্ঠচিত্তে অবস্থান নিতে পারা তোমার চরিত্রের শক্তিমত্তার পরিচায়ক। তোমার সাময়িক ক্ষতি হলেও সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে অবস্থান নিতে ভয় পাবে না। কোনো কোনো সময় তোমার সত্য বলার কারণে গোটা পৃথিবী অশান্ত হয়ে উঠতে পারে, গোটা পৃথিবী তোমার বিরুদ্ধে চলে যেতে পারে তারপরও অন্যায়ের কাছে ধরাশায়ী হবে না। যাদের চারিত্রিক শক্তি সূর্যের ন্যায় তেজোদীপ্ত এবং নৈতিকতার মানদণ্ডে দৃঢ় শুধুমাত্র তারাই সত্যের পক্ষাবলম্বন করে টিকে থাকতে পারে। দুর্বলচিত্ত ও তেলাপোকা স্বভাবের মানুষ কখনও সত্যের পক্ষে অবস্থান নিতে পারে না। কিছু মানুষ আছে নিরপেক্ষতার ভান ধরে মাঝামাঝি থাকার কথা বলে। অথচ নিরপেক্ষতার অর্থ মাঝামাঝি থাকা নয়। নিরপেক্ষতার অর্থ হলো সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে অবস্থান নেয়া। ভালো-মন্দ, সত্য-মিথ্যা, আলো-আঁধার এবং জীবিত-মৃত এর মধ্যে মাঝামাঝি বলে কিছু নেই। তোমাকে যে কোনো একটির পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করতে হবে। সুতরাং সত্যের পক্ষে থাকাটাই হলো প্রকৃত অর্থে নিরপেক্ষতা। তুমি উন্নত চরিত্রের অধিকারী হতে চাইলে অবশ্যই সত্যকে সত্য হিসেবে প্রকাশের মানসিকতা থাকতে হবে। আগুন দিয়ে যেমন খাঁটি লোহা চেনা যায় তেমনি তোমার মানসিক দৃঢ়তা দিয়েও চরিত্রের মান নির্ধারণ করা যায়।
চরিত্রের আরও দুটো দিক হলো আত্মসমালোচনা এবং দূরদৃষ্টি। চরিত্রের এই দুটো দিক মানুষের জীবনধারাকে গতিশীল করে তোলে। আত্মসমালোচনা হচ্ছে নিজের কাজের গঠনমূলক সমালোচনা নিজে করা। তোমার কাজে ক্রমবর্ধমান উন্নতি করতে চাইলে প্রতিদিনকার কাজ নিয়ে প্রতিদিনই আত্মসমালোচনা করা উচিত। রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে সারাদিনের কাজ নিয়ে আত্মসমালোচনা হতেই হবে। দৈনিক একটি করে হলেও ভালো কাজ করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। খারাপ অভ্যাসগুলোর তালিকা তৈরি করে একটি একটি করে ক্রমান্বয়ে বাদ দিতে হবে। মনের দৃষ্টিকে প্রসারিত করে ভবিষ্যৎ দেখতে হবে। জীবনের শুরুতে স্রোতের অনুকূলেই চলা উচিত। জীবনের শুরুতে স্রোতের প্রতিকূলে চলতে গিয়ে দিকভ্রান্ত হয়ে পড়লে হয়তো সারাজীবনে আর কোনো পথ খুঁজে নাও পেতে পারো। সেজন্য সঠিক চিন্তাশক্তির প্রয়োগে ভালো-মন্দ বিচার করে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। তবে সত্য-মিথ্যা বিচার না করে শুধু স্রোতের অনুকূলে চলা বোকামি এবং ব্যক্তিত্বহীনতার পরিচয়। যা সত্য তা অকপটে স্বীকার করা এবং মিথ্যা থেকে বেঁচে থাকাই উত্তম চরিত্রের শর্ত।
তোমাকে ধরে নিতে হবে, সবাইকে তুমি খুশি করতে পারবে না। অন্যায় কাজ করে কাউকে খুশি করতে চাওয়া মহাভণ্ডামি। সঠিক সময়ে ভুল সিদ্ধান্ত, সিদ্ধান্তহীনতার চেয়ে উত্তম। সিদ্ধান্তের জন্য কালক্ষেপণ করা দুর্বল ব্যক্তিত্বের পরিচায়ক। সব কাজে প্রয়োজনীয় এবং সঠিক মনোযোগ দেওয়াটা জরুরি। যেখানে যতটুকু দরকার তাই করবে, বেশি বেশি করাটা হালকা ব্যক্তিত্বের বহিঃপ্রকাশ। এ প্রসঙ্গে ইলমার জি লেটারম্যান বলেছেন- ”Personality can open doors but only Character can keep them open’. আব্রাহাম লিঙ্কন বলেছেন–‘Character is like a tree and reputation like shadow. The shadow is what we think of it ; the tree is the real thing.’

দার্শনিক আন্দ্রে মিউরাস বলেছেন-‘If you create an act, you create a habit. If you create a habit, you create a character. If you create a character, you create a destiny.’
আলবার্ট আইনস্টাইন আরেকটি দারুণ কথা বলেছেন- ‘Weakness of attitude becomes weakness of character.’
আসলেই তাই। যারা দুর্বল চিন্তা-চেতনা লালন করেন তাদের চরিত্রে দুর্বল স্বভাবগুলোই বেশি দৃশ্যমান। জীবনে দুটো বিষয়কে পাশাপাশি রাখতে হবে এবং সময় মতো তার সমন্বয় ঘটাতে হবে। চিন্তা করা এবং সে অনুযায়ী কাজ করে যাওয়া। তুমি চিন্তার সাথে কাজের মিথস্ক্রিয়া ঘটাতে পারলে জীবন এগিয়ে যাবেই। তবে যা করবে সবকিছু একাগ্রতার সাথে করতে হবে। আধা আধা বলে কিছু নেই। ধরি মাছ না ছুঁই পানি এটা এক ধরনের কূটকৌশল। যারা এটা করে তারা কেউ জনপ্রিয় হয় না। এ ধরনের তেলাপোকা স্বভাবের মানুষদের কেউ পছন্দ করে না।
একটু খেয়াল করলে দেখবে, সমাজে কিছু মানুষ আছেন- যাদের কাছে আসলেই নিজেকে সুখী মনে হয়, সব কাজকে সহজ মনে হয়। নিজেকে নিরাপদ মনে হয়। তাদের সংস্পর্শে গেলে নিজের সাহস, উদ্দীপনা, উৎসাহ বেড়ে যায়। এরাই হলো উন্নত চরিত্রের অধিকারী মানুষ। এ লোকগুলোই হলো আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বের অধিকারী, এরাই প্রকৃতপক্ষে সফল মানুষ। বলো মানুষ হিসেবে এরচেয়ে বড় সফলতা আর কী হতে পারে যে, মানুষ তোমাকে পছন্দ করছে। সব সময় তোমার সান্নিধ্য পছন্দ করছে। আসল কথা হলো অন্যের মন যারা জয় করতে পারে তারাই প্রকৃতপক্ষে উন্নত চরিত্রের অধিকারী মানুষ। অন্যের মাঝে যারা সুখ, শান্তি ও আনন্দকে সঞ্চারিত করতে পারে তারাই আসল মানুষ। ভ্রু কুঁচকে, মুখ গোমড়া করে কথা বলে লাভ কী? আল্লাহর দেওয়া এত নির্মল হাসিটা হাসতে দোষ কোথায়?
উন্নত চরিত্র গঠনের আরেকটা দিক হলো তেজস্বী হওয়া। আত্মসম্মানকে সবার ওপরে স্থান দেওয়া। চরিত্রে তেজস্বিতা ও আত্মসম্মানবোধ না থাকলে কেউ বড় মাপের মানুষ হতে পারে না। শুধু লেখাপড়া শিখেই বড় মানুষ হওয়া যায় না। বড় চাকরি করলেই মানুষ বড় হয় না। অঢেল সম্পত্তির মালিক হয়েও বড় মানুষ বলে সম্মান পাওয়া যায় না। বড় মানুষ হিসেবে সম্মান পেতে হলে চাই বড় চরিত্র। কুসুমের মতো নির্মল চরিত্র। এই বড় চরিত্র অর্জন করতে ভদ্রতা লাগে। আর ভদ্র আচরণ করতে শিক্ষা লাগে, নৈতিকতা লাগে, মনুষ্যত্ব লাগে। অথচ অভদ্র আচরণ করতে অজ্ঞতাই যথেষ্ট।
দেখো, পৃথিবীটা একটা রঙ্গমঞ্চ। বিশাল এই পৃথিবীতে দূর মহাকাশের নক্ষত্রের আলো এসে আলোকিত করে। আমরা এই আলোকিত পৃথিবীর রঙ্গমঞ্চের প্রদর্শনীতে অংশ নিচ্ছি মাত্র। এর সময়কাল একেবারেই ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র। কিন্তু ক্ষুদ্র সময়ের এই প্রদর্শনীতে ৯৫% মানুষ দুনিয়া দেখতে আসে, আর ৫% মানুষ দুনিয়াকে দেখাতে আসে। খারাপ পরিস্থিতিতে কিছু মানুষ ভেঙে পড়ে আবার কিছু মানুষ রেকর্ড ভেঙে ফেলে। যারা রেকর্ড ভেঙে ফেলে তাদেরকে দেখে সারা দুনিয়া অনুপ্রেরণা নেয়। আবার কিছু মানুষ আছে, যারা পৃথিবীর এই ভিড়ে নিজেকে হারিয়ে ফেলে আবার কিছু মানুষ কোথাও গেলে ভিড় জমে যায়। তো এই পৃথিবীতে তোমার আগমন দুনিয়া দেখা নাকি দুনিয়াকে দেখানো? ভেঙে পড়া নাকি ভেঙে ফেলা? অগণন মানুষের ভিড়ে নিজেকে হারিয়ে ফেলা নাকি কোথাও গিয়ে ভিড় জমানো? তোমাদের কাছে এই তিনটি প্রশ্ন রেখে আজ এখানেই শেষ করছি। সবাই ভালো থাকবে, সুস্থ থাকবে। আল্লাহ্ হাফিজ।

SHARE

Leave a Reply