Home দেশ-মহাদেশ জার্মানি ইউরোপের প্রধান শিল্পোন্নত দেশ । মুহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম

জার্মানি ইউরোপের প্রধান শিল্পোন্নত দেশ । মুহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম

জার্মানি ইউরোপের প্রধান শিল্পোন্নত দেশ । মুহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম
জার্মানির তৈরি মার্সিডিস গাড়ি

জার্মানি ইউরোপের অন্যতম প্রধান শিল্পোন্নত দেশ। সরকারিভাবে দেশটিকে বলা হয় সংযুক্ত প্রজাতন্ত্রী জার্মানি। এটি ১৬টি রাজ্য নিয়ে গঠিত একটি সংযুক্ত ইউনিয়ন। এ দেশের সীমান্তে রয়েছে উত্তরে উত্তর সাগর, ডেনমার্ক ও বাল্টিক সাগর, পূর্বে পোল্যান্ড ও চেক প্রজাতন্ত্র, দক্ষিণে অস্ট্রিয়া ও সুইজারল্যান্ড এবং পশ্চিমে ফ্রান্স, লুক্সেমবুর্গ, বেলজিয়াম এবং নেদারল্যান্ডস। জার্মানির ইতিহাস জটিল এবং এর সংস্কৃতি সমৃদ্ধ। ১৮৭১ সালের আগে এটি কোনো একক রাষ্ট্র ছিল না। ১৮১৫ থেকে ১৮৬৭ সাল পর্যন্ত জার্মানি একটি কনফেডারেসি এবং ১৮০৬ সালের আগে এটি অনেকগুলি স্বতন্ত্র ও আলাদা রাজ্যের সমষ্টি ছিল।
এ দেশের উত্তরে উত্তর সাগর ও বাল্টিক সাগরের উপকূলীয় নিম্নভূমি থেকে মধ্যভাগের ঢেউ খেলানো পাহাড় ও নদী উপত্যকা এবং তারও দক্ষিণে ঘন অরণ্যাবৃত পর্বত ও বরফাবৃত আল্পস পর্বতমালা দেশটির ভূ-প্রকৃতিকে বৈচিত্র্যময় করেছে। দেশটির মধ্য দিয়ে ইউরোপের অনেকগুলি প্রধান নদী যেমন রাইন, দানিউব, এলবে প্রবাহিত হয়েছে এবং দেশটিকে একটি বাণিজ্যিক কেন্দ্রে পরিণত করতে সাহায্য করেছে।

জার্মানি ইউরোপের প্রধান শিল্পোন্নত দেশ । মুহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম
মিউনিখ নগরী

আয়তনের দিক দিয়ে জার্মানি ইউরোপের সপ্তম বৃহত্তম রাষ্ট্র। আয়তন ৩ লাখ ৫৭ হাজার ২২ বর্গ কিলোমিটার। জনসংখ্যা ৮ কোটি ৪ লাখ ৫৭ হাজার ৭৩৭ জন। জার্মানি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সবচেয়ে জনবহুল দেশ। সারা পৃথিবীতে জার্মানি ১৫তম জনবহুল দেশ। প্রতি বর্গকিলোমিটারে ২৩২ জন অধিবাসী বাস করে। জার্মানির সরকারি ভাষা জার্মান। এ ছাড়াও প্রচলিত আছে আরবি, গ্রিক, ইতালীয়, কুর্দি এবং তুর্কি ভাষা। জাতিগত গ্রুপের মধ্যে রয়েছে জার্মান ৮৭.২ শতাংশ, তুর্কি ১.৮ শতাংশ, পোলিশ ১ শতাংশ, সিরীয় ১ শতাংশ এবং অন্যান্য ৯ শতাংশ। এ দেশের নাগরিকদের ৫৭.২ শতাংশ খ্রিস্টান, ৫ শতাংশ মুসলিম, ৯ শতাংশ অন্যান্য ধর্মাবলম্বী এবং ৩৭ শতাংশ কোন ধর্মই পালন করে না।
জার্মানিতে নগরায়ণের হার অত্যন্ত উঁচু। বার্লিন দেশের রাজধানী ও বৃহত্তম শহর। অন্যান্য প্রধান শহরগুলোর মধ্যে রয়েছে হামবুর্গ, মিউনিখ, কলং, স্টাটগার্ট, ডাসেলডর্ফ, লিপজিগ, ড্রেসডেন, ব্রেমেন, হান্নোভার ও নুরেমবার্গ।

জার্মানি ইউরোপের প্রধান শিল্পোন্নত দেশ । মুহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম
জার্মানির তৈরি মার্সিডিস গাড়ি

জার্মানরা পশ্চিমা সংস্কৃতিতে বহু অবদান রেখেছে। জার্মানিতে বহু অসাধারণ লেখক, শিল্পী, স্থপতি, সঙ্গীতজ্ঞ এবং দার্শনিক জন্মগ্রহণ করেছেন। এদের মধ্যে সম্ভবত ইয়োহান সেবাস্টিয়ান বাখ ও লুডভিগ ফান বেটোফেন সারা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি পরিচিত। ফ্রিডরিশ নিৎসে, ইয়োহান ভোলফগাং ফন গোটে এবং টমাস মান জার্মান সাহিত্যের দিকপাল। হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার জনক ডা. স্যামুয়েল হ্যানিম্যানও জার্মানিতে জন্মগ্রহণ করেন। এ কারণে জার্মান ভাষায় জার্মানিকে প্রায়ই বলা হয়ে থাকে “ডাস লাণ্ড ড্যার ডিখটার উন্ড ডেনকার”, যার অর্থ হচ্ছে “কবি ও চিন্তাবিদদের দেশ”।
বিশ্বের অন্যতম প্রধান শিল্পোন্নত দেশ জার্মানির অর্থনীতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের পরে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম। জার্মানি লোহা, ইস্পাত, যন্ত্রপাতি, সরঞ্জাম এবং মোটরগাড়ি রপ্তানি করে। জার্মানি ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যতম প্রধান অর্থনৈতিক চালিকাশক্তি। জার্মানির মুদ্রার নাম ইউরো।
জার্মানি ১৯৫৭ সালে ইউরোপীয় অর্থনৈতিক সম্প্রদায় এবং ১৯৯৩ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। জার্মানি শেনজেন এরিয়ার অংশ এবং ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত ইউরোজোনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা। জার্মানি জাতিসংঘ, ন্যাটো, জি৭, জি২০ ও ওইসিডির সদস্য।
জার্মানি ফেডারেল, সংসদীয় ও প্রতিনিধিত্বশীল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। এ দেশের সংবিধান মূলত ফেডারেল জার্মানির মূল আইন বা গ্রান্ডগেযেটস নামে পরিচিত। জার্মানির রাষ্ট্রপ্রধান হলেন প্রেসিডেন্ট (বর্তমানে ফ্রাংক-ওয়ালটার স্টেইনমিয়ার), যিনি বানডেসটাগ ও প্রত্যেক রাষ্ট্রের সমসংখ্যক প্রতিনিধি নিয়ে গঠিত সম্মিলিত সভার মাধ্যমে নির্বাচিত হন। জার্মানির সরকারব্যবস্থায় সরকারের প্রধান হলেন চ্যান্সেলর (বর্তমানে অ্যাঞ্জেলা মারকেল), যিনি সংসদীয় গণতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রীর মত বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করে থাকেন। ফেডারেল আইন তৈরির ক্ষমতা থাকে নিম্নকক্ষ বানডেসটাগ ও উচ্চকক্ষ বানডেসরাট নামে সংসদের দুইটি সভার মধ্যে যারা মিলিতভাবে একটি অদ্বিতীয় আইন প্রণয়নকারী পরিষদ তৈরি করে। বানডেসটাগ সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত হয় অপরদিকে বানডেসরাট হলো ষোলটি ফেডারেল রাজ্যের সরকারের প্রতিনিধি। প্রত্যেকটি রাষ্ট্রের সরকার তাদের প্রেরিত প্রতিনিধি নিয়োগ ও অপসারণের ক্ষমতা রাখে। জার্মানির প্রধান রাজনৈতিক দল হলো খ্রিষ্টান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন ও সোস্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি অব জার্মানি। তা ছাড়াও মুক্ত গণতান্ত্রিক দল নামে একটি ছোট রাজনৈতিক দল রয়েছে।

জার্মানি ইউরোপের প্রধান শিল্পোন্নত দেশ । মুহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম
লোরলেইতে গ্রীষ্মকালে রাইন উপত্যকা

ধারণা করা হয় সুপ্রাচীন নর্ডীয় ব্রোঞ্জ যুগ অথবা প্রাক-রোমান লৌহ যুগে জার্মানিতে আদি জাতিগোষ্ঠীগুলোর বসবাস শুরু হয়েছে। দক্ষিণ স্ক্যান্ডিনেভিয়া এবং উত্তর জার্মানি থেকে এই গোষ্ঠীগুলো দক্ষিণ, পূর্ব ও পশ্চিম দিকে বসতি স্থাপন শুরু করে খ্রিস্টপূর্ব প্রথম শতাব্দীতে। এই সম্প্রসারণের ফলে তারা গলের কেল্টীয় গোষ্ঠী এবং পূর্ব ইউরোপের ইরানীয়, বাল্টিক ও স্লাভিক গোষ্ঠীগুলোর সান্নিধ্যে আসে। জার্মানির সেই প্রাচীন ইতিহাস সম্বন্ধে খুব অল্পই জানা গেছে।
অগাস্টাসের রাজত্বকালে রোমান জেনারেল পুবলিয়াস কুইঙ্কটিলিয়াস ভ্যারাস জার্মানিয়াতে (রাইন থেকে উরাল পর্যন্ত অঞ্চলকে রোমানরা মাঝে মধ্যেই এই নামে ডাকতো) আগ্রাসন চালানো শুরু করে। এই আগ্রাসন চলাকালেই জার্মানির গোষ্ঠীগুলো রোমানদের যুদ্ধকৌশল সম্বন্ধে জানতে পারে। এই গোষ্ঠীগুলো নিজেদের স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখেই রোমান যুদ্ধ কৌশলের অনেকাংশ রপ্ত করতে সক্ষম হয়। ৯ খ্রিস্টাব্দে টেউটোবুর্গ বনের যুদ্ধে জার্মানির চেরুস্কান নেতা আরমিনিউস, রোমান জেনারেল ভ্যারাসের নেতৃত্বে পরিচালিত নয় লেজিয়নের এক সৈন্যদলকে পরাজিত করে। এর ফলে আধুনিক জার্মানি তথা রাইন এবং দানিয়ুব রোমান সাম্রাজ্যের বাইরেই থেকে যায়।
বর্তমান জার্মানি অঞ্চলটি ৮৪৩ খ্রিস্টাব্দে ক্যারোলিঙ্গিয়ান সাম্রাজ্যের বিভাজনের ফলে সৃষ্টি হয়। সাম্রাজ্যটিতে ফ্রান্সও অন্তর্ভুক্ত ছিল। এরপর বহু শতাব্দী যাবৎ জার্মানি ছিল দুর্বলভাবে একত্রিত জমিদারিভিত্তিক কতগুলি দেশের সমষ্টি। ১৬শ শতকের পর থেকে জার্মান রাষ্ট্রগুলি ইউরোপের যুদ্ধ ও ধর্মীয় সংঘাতে ক্রমশ বেশি করে জড়িয়ে পড়তে শুরু করে। ১৯শ শতকের শুরুতে ফ্রান্স জার্মান রাষ্ট্রগুলি দখল করলে জাতিগতভাবে একত্রিত এক জার্মানির জন্য জনমত প্রবল হয় এবং ১৮১৫ সালে প্রুশিয়ান-প্রভাবিত জার্মান রাষ্ট্রগুলি একটি কনফেডারেশন গঠন করে, যা ১৮৬৭ সাল পর্যন্ত স্থায়ী ছিল।

জার্মানি ইউরোপের প্রধান শিল্পোন্নত দেশ । মুহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম
জার্মান ডিজার্ট কেক ‘ব্ল্যাক ফরেস্ট গ্যাটিউ’

১৮৭১ সালে অটো ফন বিসমার্কের অধীনে একত্রিত হবার পর জার্মানিতে দ্রুত শিল্পায়ন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ঘটে। বিংশ শতাব্দীর শুরুতে জার্মানি ইউরোপে আধিপত্য স্থাপনের চেষ্টা চালালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সূত্রপাত হয়। ১৯১৮ সালে যুদ্ধে জার্মানির পরাজয় ঘটলে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। এর উগ্র জাতীয়তাবাদী প্রতিক্রিয়ার ফলে নাৎসি পার্টির আবির্ভাব ঘটে। নাৎসি পার্টি ১৯৩০-এর দশকে আডলফ হিটলারের নেতৃত্বে ক্ষমতায় আসে। ১৯৩৯ সালে জার্মানির আগ্রাসনের ফলে দ্বিতীয়বারের মত বিশ্বযুদ্ধ হয়।
১৯৪৫ সালে মিত্রশক্তি যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন জার্মানিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পরাজিত করে। মিত্র দেশগুলি দেশটিকে চারটি অঞ্চলে ভাগ করে: ব্রিটিশ, ফরাসি, মার্কিন ও সোভিয়েত সেনারা একেকটি অঞ্চলের দায়িত্বে ছিল। সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং পশ্চিমা শক্তিগুলির মধ্যকার মিত্রতা ১৯৪০-এর দশকের শেষে ভেঙে গেলে সোভিয়েত অঞ্চলটি জার্মান গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র তথা পূর্ব জার্মানিতে পরিণত হয়। পশ্চিমা-নিয়ন্ত্রিত বাকি তিন অঞ্চল একত্রিত হয়ে পশ্চিম জার্মানি গঠন করে। যদিও জার্মানির ঐতিহাসিক রাজধানী বার্লিন পূর্ব জার্মানির অনেক অভ্যন্তরে অবস্থিত ছিল, তা সত্ত্বেও এটিকেও দুই দেশের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়। কিন্তু পূর্ব জার্মান নাগরিকরা লাখে লাখে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ ও গণতান্ত্রিক পশ্চিম জার্মানিতে অভিবাসী হওয়া শুরু করলে ১৯৬১ সালে পূর্ব জার্মানি সরকার বার্লিনে একটি প্রাচীর তুলে দেয় এবং দেশের সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার করে।
১৯৮৯ সালে পূর্ব ও পশ্চিম বার্লিনের বাসিন্দারা বার্লিন প্রাচীর ভেঙে ফেলে। এই ঘটনাটিকে পূর্ব ইউরোপে সাম্যবাদের পতন ও জার্মানির পুনঃএকত্রীকরণের প্রতীক হিসেবে গণ্য করা হয়। আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে ১৯৯০ সালের ৩রা অক্টোবর দুই জার্মানি একত্রিত হয়ে জার্মান ফেডারেল প্রজাতন্ত্র গঠন করে।

জার্মানি ইউরোপের প্রধান শিল্পোন্নত দেশ । মুহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম
ডার্মস্টাটে ইউরোপীয় মহাকাশ অপারেশন সেন্টারের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ

উদ্ভিদতাত্ত্বিক ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্যানুযায়ী জার্মানি বোরিয়াল জগতের অন্তর্গত সারকামবোরিয়াল রিজিওনের আটলান্টিক ইউরোপিয়ান ও সেন্ট্রাল ইউরোপিয়ান এই দু’টি অঞ্চলে বিভক্ত। জার্মানি অঞ্চলকে দুটি বাস্তুঅঞ্চলে ভাগ করা যেতে পারে, ইউরোপিয়ান মেডিটেরিয়ান পার্বত্য মিশ্র বনভূমি অঞ্চল এবং উত্তর-পূর্ব আটলান্টিক মহীসোপান অঞ্চল। জার্মানিতে চাষাবাদযোগ্য কৃষিজমির পরিমাণ ৩৩ শতাংশ, স্থায়ী চারণভূমি ১৫ শতাংশ এবং বনভূমির পরিমাণ ৩১ শতাংশ। সাধারণত মধ্য ইউরোপের প্রাণী এবং উদ্ভিদই জার্মানিতে দেখা যায়। মোট বনভূমির এক তৃতীয়াংশ জুড়ে আছে বিচগাছ (মসৃণ কাণ্ড ও পত্রবিশিষ্ট একজাতীয় লম্বা গাছ), ওকগাছ এবং অন্যান্য পর্ণমোচী বৃক্ষ। সরলাকৃতির বৃক্ষসমূহ পাওয়া যায় উচ্চপর্বত ভূমিতে এবং বেলে মাটিতে পাইন আর লার্চ গাছের আধিক্য আছে। বিভিন্ন ফুল, ফার্ন, ফাঞ্জাই ও মসের বহু প্রজাতি জার্মানিতে পাওয়া যায়। উত্তরসাগর এবং নদীগুলোতে প্রচুর পরিমাণে মাছ পাওয়া যায়। হরিণ, বন্য শুয়োর, শিয়াল, ব্যাজার, খরগোশ এবং ভোঁদড় পাওয়া যায়। হেমন্ত এবং বসন্তে বহু অতিথিপাখি জার্মানিতে আসে। ওয়াডেন সি ন্যাশনাল পার্ক, জাসমুন্ড ন্যাশনাল পার্ক, ফরপোমার্ন লেগুন এরিয়া ন্যাশনাল পার্ক, মুইরিস ন্যাশনাল পার্ক, লোয়ার অডার ভ্যালি ন্যাশনাল পার্ক, হার্জ ন্যাশনাল পার্ক, স্যাক্সন সুইজারল্যান্ড ন্যাশনাল পার্ক এবং ব্যাভারিয়ান ফরেস্ট ন্যাশনাল পার্কসমূহ জার্মান ন্যাশনাল পার্কের মধ্যে অন্যতম। জুওলজিক্যাল গার্ডেন, পাখিশালা, অ্যাকুরিয়াম ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ পার্কের জন্য জার্মানি সুপরিচিত। একক দেশের হিসেবে জার্মানিতেই পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি চিড়িয়াখানা ও অ্যানিম্যাল পার্ক আছে, যার সংখ্যা ৪০০। বার্লিনের জুওলজিশার গার্ডেন জার্মানির সবচেয়ে প্রাচীন চিড়িয়াখানা এবং বিশ্বের একক বৃহত্তম প্রাণিসংগ্রহশালা।
ফুটবল জার্মানদের জাতীয় খেলা। ফুটবল খেলার সবচেয়ে বড় আসর ফিফা বিশ্বকাপে জার্মানি চারবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এ ছাড়াও ক্লাব ফুটবলে জার্মান দল বায়ার্ন মিউনিখ তাদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেছে। তা ছাড়া খেলাধুলার আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও জার্মানিরা সবসময় তাদের শ্রেষ্ঠত্ব দেখিয়ে চলেছে। যেমন গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকের সর্বমোট পদক তালিকায় জার্মানি বরাবরই বেশ ভালো অবস্থানে থাকে।
জার্মানির অন্যান্য জনপ্রিয় খেলাধুলার মধ্যে রয়েছে শীতকালীন ক্রীড়া, মুষ্টিযুদ্ধ, বাস্কেটবল, ভলিবল, আইস হকি, টেনিস, ঘৌড়দৌড় ও গলফ। তা ছাড়া জার্মানি বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় মোটর স্পোর্টসের দেশ।

SHARE

Leave a Reply