পৃথিবীজুড়ে রয়েছে নানা রকম অদ্ভুত স্থান। কিছু কিছু স্থান আছে যেগুলো নিয়ে জল্পনা কল্পনার শেষ নেই। সেই সাথে উঠে আসে নানা রকম ভয়ানক কাহিনী যার বেশির ভাগই কল্পকথা, লোকমুখে শোনা গল্প। তেমন একটি স্থান স্কটল্যান্ডের ফিংগালস কেভ বা গুহা।
স্কটল্যান্ডের অদূরে উত্তাল সমুদ্রে স্টাফা দ্বীপপুঞ্জে ফিংগালস কেভের অবস্থান। কেউ বাস করে না সেই দ্বীপে। নাবিকেরা দ্বীপটি দেখছে হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে। এক সময় সমুদ্র নেকড়ে ভাইকিংরা এই দ্বীপের নাম রেখেছিল ফিংগালস কেভ।
উত্তাল সমুদ্রে স্টাফা দ্বীপপুঞ্জে অবস্থান। এর ভেতরে তৈরি হয়েছে অসংখ্য খিলান। এ ব্যাপারে ভূতত্ত্ববিদরা মনে করেন, আজ থেকে প্রায় ছয় কোটি বছর আগে লাভা থেকে এই গুহার সৃষ্টি। এর গলিত পাথর খড়িমাটির ওপর দিয়ে যাওয়ায় গুহাটি এই বিশেষ আকৃতি পায়।
অন্য দিকে, আয়ারল্যান্ডের জায়ান্ট, সকজওয়ে, নামের অপর স্থানের সঙ্গেও এর আশ্চর্য রকমের মিল রয়েছে। ভূতত্ত্ববিদদের মতে, এই দুই প্রাকৃতিক বিস্ময়ের মধ্যে যোগসূত্র রয়েছে। তারা মনে করেন, একই লাভাস্রোত থেকে এই দুই গুহার সৃষ্টি হয়। এমনকি দু’টি গুহার সঙ্গে সংযোগ ছিল বলেও উপকথা রয়েছে।
তবে প্রাচীনকালে আইরিশ জাতি গোষ্ঠী একে দানবের তৈরি বলেই মনে করত। গুহার ভেতরের নানা শব্দ নিয়েও ছিল নানা গুজব। তাদের ধারণা দানবরাই গুহাতে বাস করতে গিয়ে এমন শব্দ করত।
অবশ্য এখন দিন পাল্টেছে। বিজ্ঞানের উৎকর্ষতায় অনেক প্রাকৃতিক রহস্যের সমাধান মিলেছে। হাতে এসেছে অন্ধকার আর আতঙ্ককে দূর করার আধুনিক প্রযুক্তি। তারই সুবাদে স্থানটিতে এখন পর্যটকেরা ভিড় জমান।
যে দ্বীপ একসময় ভয়ঙ্কর জলদস্যুরাও এড়িয়ে চলতো, সেখানে এখন মানুষের সমাগম ঘটে।
বছরের এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে দর্শনার্থীরা গুহাটিতে ভ্রমণ করে থাকেন। গুহাটি ভ্রমণের সুবিধার্থে বেশ কিছু সংস্থা ইয়ট ভাড়া দিয়ে থাকেন।
পাশাপাশি গুহাটি ঘুরে দেখতেও গাইডের ব্যবস্থা করে থাকে। ফলে পায়ে হেঁটে গুহাটি ঘুরে দেখারও সুযোগ হয় পর্যটকদের। অবশ্য সে সবই দিনের বেলা। রাতে আদিম সেই রহস্য নিয়েই সাগরের বুকে মাথা তুলে জেগে থাকে ফিংগালস কেভ।