ছোট চাচার মুখে একের পর এক গল্প শুনে সবাই হেসে কুিট কুটি। কৃপণের গল্প। পৃথিবীতে কত রকমের কৃপণ আছে। সব কৃপণের গল্পই রসালো। ছোট চাচার গল্পের আসরে তাই ভীষণ হাসির রোল।
জারিন বলল, চাচ্চু আমিও এক কৃপণের গল্প জানি। বেশ! বলো তাহলে। জারিন বলতে শুরু করলÑ ‘এক কৃপণ লোক কখনোই কিছু দান করত না। একদিন সে দানশীল ব্যক্তির মর্যাদা সম্পর্কে জানতে পারল। তার মন নরম হয়ে এলো। ভাবল, এখন থেকে সে গরিব-দুঃখীদের পাশে দাঁড়াবে। তো, পাঁচ টাকার একটি কয়েন হাতে নিয়ে একদিন সে বের হলো। কিন্তু কোনো গরিব লোকই সে খুঁজে পেল না। এদিকে দীর্ঘ সময় ধরে কয়েনটি হাতের মুঠোয় থাকায় তা ঘামে ভিজে গেল। লোকটি তখন চিৎকার করে বলল, ও রে আমার কয়েন! তোমাকে দান করে দেব বলে তুমি কাঁদছো? আমাকে ছেড়ে যেতে তোমার কষ্ট হবে? না, এ হতে পারে না। কয়েনটি পকেটে রেখে কৃপণ লোকটি তখন বাড়ির পথে হাঁটা শুরু করল!’
এ গল্প শুনে তো সবার সাথে চাচ্চুও হেসে অস্থির। চাচ্চু বললেন, এর চেয়েও বড় এক কৃপণের গল্প শোনাব এখন। ‘এক লোক মহানবী (সা)-এর কাছে এসে বলল, আমার বাগানে অমুক ব্যক্তির একটি খেজুর গাছ আছে, যা আমাকে কষ্ট দেয়। মহানবী (সা) তখন খেজুর গাছের মালিককে ডেকে পাঠালেন। বললেন, গাছটি আমার কাছে বিক্রি করে দাও। লোকটি বলল, না। তাহলে আমাকে দান করে দাও। সে এবারও বলল, না। না হয় জান্নাতের একটি খেজুর গাছের বিনিময়ে গাছটি আমার কাছে বিক্রি করো। লোকটি এবারও না বলল! মহানবী (সা) তখন তাকে বললেন, আমি তোমার চেয়ে বড় কৃপণ আর দেখিনি।’
মাহির বলল, সত্যিই তো চাচ্চু! স্বয়ং মহানবীর প্রস্তাব যে ফিরিয়ে দিতে পারে, সে তো সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ কৃপণ! চাচ্চু বললেন, আরে! গল্প তো শেষই হয়নি। ঐ ব্যক্তির চেয়েও কৃপণ লোক আছে! জুমানা বলল, কী বলো, জান্নাতের খেজুর গাছের বিনিময়েও যে লোক পৃথিবীর সামান্য খেজুর গাছ ছাড়তে পারে না, তারচেয়েও বড় কৃপণ আছে? চাচ্চু বললেন, হ্যাঁ! ঐ লোকটিকেই মহানবী (সা) সবশেষে বলেছেন, ‘যে সালাম দিতে কৃপণতা করে, সে তোমার চেয়েও অধিক কৃপণ।’ (আহমদ, বায়হাকী)
সবার কৌতূহল ভাঙল। চাচ্চু বললেন, বুঝলে তো, সালাম কত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমরা কখনোই সালাম দিতে কৃপণতা করব না। সবাই সমস্বরে বলে উঠলÑ ইনশাআল্লাহ!
বিলাল হোসাইন নূরী