জ্যামের শহর ঢাকা, চলে না গাড়ির চাকা। রাজধানীবাসীর প্রতিদিনের আক্ষেপ এটা। ধরো- এমনি এক দীর্ঘ জ্যামে আটকা পড়েছো তুমি। এদিকে স্কুলে যেতে দেরি হয়ে যাচ্ছে অথবা বৃষ্টিতে রাস্তায় এমন পানি জমে গেছে যে কোনটা রাস্তা আর কোনটা ফুটপাথ কিছুই বুঝতে পারছো না। এমন সময় একটা সুইচ টিপলে, আর গাড়ি উড়তে শুরু করল। কেমন হতো তাহলে? স্বপ্নের মতোই মনে হচ্ছে, তাই না? কিন্তু এটা এখন আর স্বপ্ন নয়, বাস্তবে রূপ নিয়েছে। প্রযুক্তি বিষয়ক গণমাধ্যম টেকক্রাঞ্চ এমনটিই জানিয়েছে।
উড়–ক্কু যান আসছে এ রকম খবর অনেকদিন আগে থেকেই বিভিন্ন গণমাধ্যমে শোনা যাচ্ছিল। গুগল, উবারের মতো বড় বড় নামধারী সংস্থাগুলো শুধু গাড়ির নকশাই করে গেছে, বাস্তব রূপ দিতে পারেনি। কিন্তু সম্প্রতি এক গাড়ি প্রদর্শনীতে এরোমোবিল যা করে দেখালো তাতে চোখ কপালে উঠেছে অনেকেরই। সুইচ চাপলেই দুটি দরজা দুপাশে ডানার মতো খুলে যাবে, এর পরই উড়তে শুরু করবে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ২০২০ সালের মধ্যেই রাস্তায় দেখা যাবে উড়ন্ত গাড়িগুলোকে।
তবে সবার এই গাড়ি চালানোর সৌভাগ্য হবে না। এরোমোবিলের প্রধান যোগাযোগ কর্মকর্তা জানান, ‘এই যান চালাতে গেলে একই সঙ্গে তাকে ড্রাইভার এবং পাইলট হতে হবে। এখন পর্যন্ত ইউরোপে এই যান চালানোর অনুমতি পাওয়া গেছে। তবে আমেরিকাতেও তা চালু করার ব্যাপারে কথাবার্তা চলছে। আর আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য হচ্ছে চীন।’
তারা জানায়, রাস্তায় চলাচলের জন্য প্রথমে ৫০০টি গাড়ি তৈরি করবে। গাড়ির মডেল অনুযায়ী যার দাম পড়বে ১৩ লাখ থেকে ১৬ লাখ ডলারের মধ্যে। গাড়িটি রাস্তায় যেমন দুরন্ত গতিতে চলবে, তেমনি আকাশেও উড়বে স্বাচ্ছন্দ্যে। গাড়িটিকে উড়ানোর জন্য একটি সুইচ রয়েছে। তিন মিনিটের ব্যবধানে যা গাড়িকে উড়ন্ত গাড়িতে পরিণত করবে। গাড়ির দুইটি দরজা পরিণত হবে ডানায়। রাস্তায় গাড়িটির গতিবেগ হবে ঘণ্টায় ১৭৭ কিলোমিটার আর আকাশে গাড়িটির গতিবেগ হবে ৩৬০ কিলোমিটার।
উবার ও গুগলও উড়ন্ত গাড়ি নিয়ে আসার ঘোষণা দিয়েছে। তবে গুগল এবং উবারের গাড়িগুলো হবে হেলিকপ্টারের মতো। অর্থাৎ এরা হেলিপ্যাডের মতো নির্দিষ্ট জায়গা থেকে উড়বে আবার নির্দিষ্ট জায়গাতে গিয়েই নামবে। এরোমোবিলের গাড়িগুলো সেরকম নয়। যেকোনো জায়গা থেকে উড়ে, আবার যেকোনো জায়গায় নামতে পারবে নতুন এই যান। তবে কবে নাগাদ এ গাড়ি আমাদের দেশে আসবে সেটা অবশ্য ভাবার বিষয়।