পুরো বিশ্ব হতবাক হয়ে গেছে। এমন একজন বিজ্ঞানী এভাবে নিখোঁজ হয়ে যাবে তা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছে না কেউই। সিআইডি এফবিআই থেকে শুরু করে কোনো গোয়েন্দা বাহিনীই বাদ যায়নি। ইন্টারন্যাশনাল ইমারজেন্সি ডেকেও লাভ হয়নি। কেউ বুঝতেই পারছে না ড. তুহিন কিভাবে এতো নিচ্ছিদ্র নিজস্ব নিরাপত্তাব্যবস্থার মধ্যেও অপহৃত হলো। এমনকি তাঁর সাথে মাথার চুলে সেট করা ট্রান্সমিটারও কোনো সাড়া দিচ্ছে না। তাহলে কি কাহানদের হাতেই পড়লো ড. তুহিন? তা-ই বা কী করে সম্ভব। সিসিটিভি নিষ্ক্রিয় হওয়ার আগে তো কোনো কাহানের টিকিও দেখা যায়নি। আর তা ছাড়া কাহানদের ঠেকাতে পুরো ঘরে লেজার ফেন্স তৈরি করে রাখা আছে অনেকদিন হলো। তাহলে কিভাবে সম্ভব হলো ড. তুহিনের নিখোঁজ হওয়া?
ঘটনা ঘটে আজ সকালে। ফজরের পর কুরআন পড়ছিলো প্রখ্যাত তরুণ জ্যোতির্বিজ্ঞানী ড. ফারাহ তুহিন। KAHAND-45 গ্রহের অধিবাসী কাহানদের পৃথিবী দখলের সব ষড়যন্ত্র প্রায় একা হাতে রুখে দেয়া বিজ্ঞানী ড. তুহিনকে সেদিনই বিশ্ব চিনতে পারে ভালোভাবে। পরবর্তীতে কাহানদের বন্দী উদ্ধার প্রতিরোধে তার ভূমিকা কাহানদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে দেয়। তখনই তাকে বার্তার মাধ্যমে হুমকি দিয়ে রেখেছিলো কাহানরা। এরপর থেকেই জাতীয় নিরাপত্তাব্যবস্থার অংশ হিসেবে ড. তুহিনের বাসায় বিশেষ কিছু সিকিউরিটি শিল্ডের ব্যবস্থা করা হয়েছিলো। অন্তত যথেষ্টই মনে হয়েছিলো বিজ্ঞানী ড. তুহিনের। কিন্তু আজ সকালে কুরআন পড়ার পর তুহিন ওয়াশরুমে গিয়ে আর বের না হলে তার ছোট বোন নুযহাতের নজরে প্রথম আসে ব্যাপারটা। ফজরের পরেই একটা নোট বুঝতে ভাইয়ার ঘরে ঢুকেছিলো ও। এসে দেখে ভাইয়া ওয়াশরুমে। প্রায় দুই ঘণ্টা ভাইয়ার কোনো খোঁজ না পাওয়ায় বাবাকে ওয়াশরুম ভাঙতে বলে নুযহাত। কিন্তু ততক্ষণে যা হবার হয়ে গেছে। ড. তুহিন কোথাও নেই। শুধু ওয়াশরুমের দরজায় লুকিংগ্লাসে লেগে থাকা ছোট্ট একটা পিন মেসেজ দেখতে পায় নুযহাত। সাধারণত ভাইয়া এই পিন দিয়েই কাহানদের চিহ্নিত করতো। কোনো সন্দেহ থাকে না তার, কাহানরাই তুলে নিয়ে গেছে ভাইয়াকে।
২.
আলোকিত একটা ফাঁকা ঘরে বসে আছে বিজ্ঞানী ড. তুহিন। দেয়াল খুব সম্ভবত কোনো নেটওয়ার্ক রোধক মেটাল দিয়ে তৈরি। এইমাত্রই জ্ঞান ফিরেছে তার। আবছা আলোয় কিছু মাটির মূর্তির মতো অবয়ব দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলো সে। তাকে উঠতে দেখেই কথা বলে উঠলো অবয়বগুলো থেকে কেউ যেন “হ্যালো তুহিন, কাহানদের রাজ্যে স্বাগতম। আমার ভাষা তুমি বুঝবে না বলে তোমার পৃথিবী থেকেই ট্রান্সলেটর নিয়ে এসেছি আমি। তাই আমার কথা তুমি তোমার ভাষায়ই শুনতে পাচ্ছো। কেমন লাগছে আমাদের এখানে এসে?” তুহিন প্রথমে একটু ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলো। মাটির এই অবয়বগুলোই তাহলে কাহান? কিন্তু সে তো অন্যরকম দেখেছিলো। তাই বললো, “তোমরা কাহান হওয়ার তো কথা না। আমার জানামতে কাহানরা দেখতে আমাদের পৃথিবীর কচু গাছের মতো।”
“আমি জানতাম তুমি এই প্রশ্ন করবে। আমরা কাহান নই। আমরা প্রতিবেশী গ্রহ থেকে এসেছি। একই গ্যালাক্সির আমরা। তোমাকে রুখতে পারলে আমরা দুই গ্রহ মিলে পৃথিবী দখল করতে পারবো। তখন আমরা শেয়ার করে পৃথিবীতে থাকবো- এই শর্তেই কাহানদের সাথে আমরা হাত মিলিয়েছি। তোমাকে ধরে আনার প্ল্যানটা আমাদেরই করা। আরো ভালোভাবে বললে আমারই করা।”
“তুমি কে?”
“আমি আমাদের ডিকজার গ্রহের সেনাপতি এবং টেকনিক্যাল চিফ। তোমাকে ধরে আনতে আমার সদ্য আবিষ্কৃত বাহন কাজে লাগিয়েছি। তোমাদের ভাষায় একে বলতে পারো The Invisible Flyer.
শুধু তাই না, তোমাকে যেই দড়ি দিয়ে বাঁধা হয়েছে সেটাও আমারই আবিষ্কার। এটিও অদৃশ্য। আশা করি তুমি ইতোমধ্যে বুঝেও গিয়েছো।”
কথা মিথ্যা নয়। তুহিন হাত-পা নাড়াতে কোনোভাবেই না পারলেও কোনো দড়ি বা শিকল দেখতে পায়নি ও। হঠাৎ ঘরের এক প্রান্ত খুলে গেলো। ভেতরে প্রবেশ করলো কাহানদের মতোই দেখতে একজন। লম্বা নাক, এক চোখ আর তিন পায়ের এই এলিয়েনকে দেখে চিনতে খুব অসুবিধে হলো না তুহিনের। সে তুহিনের মুখোমুখি হয়েই বললো,
“চাইলেও কারো সাথে যোগাযোগ করতে পারবে না তুমি, কারণ তোমার চুলের ট্রান্সমিটার চিপটা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে। তুমি আমাদের অনেক ক্ষতি করেছো। তার মধ্যে সবচেয়ে বড় ক্ষতি হলো আমাদের অপারেশন ইন চিফ আর সর্বাধিনায়ককে তোমার জন্যই বন্দী হতে হয়েছে। তোমাকে জিম্মি করে আমরা প্রথমে আমাদের সব বন্দী মুক্ত করে আনবো। তারপর তোমাকে শান্তির আবাসস্থল জান্নাতে পাঠানোর ব্যবস্থা করবো।” বলে ঘুটঘুট করে একটা আওয়াজ করে রুম আটকে দিয়ে চলে গেলো। তুহিন বুঝলো, এটা কাহানদের হাসি, বিজয়ের হাসি। মনে মনে তুহিনও হেসে নিলো, আত্মবিশ্বাসের হাসি।
বাঁ হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলের কাছাকাছি একটা জায়গায় তুহিন রেখে দিয়েছে তার বিশেষ যোগাযোগ মাধ্যম। তুহিন এর নাম দিয়েছে All Inside Resistent Mobile air Connector সংক্ষেপে AIRMAC। এর এক প্রান্ত ত্বকের যেকোনো অংশে রোমকূপের ভেতরে ঢুকে যায়, অন্য প্রান্ত লাগানো হয় যেকোনো কঠিন পদার্থে। তাহলেই বিশ্বের কয়েকটি গ্যালাক্সির মধ্যে এর নেটওয়ার্ক সক্রিয় হয়ে যায়। কাহানদের পাওয়া হুমকির পর থেকেই অনেক প্রচেষ্টার পর সে এই যোগাযোগের মাধ্যম আবিষ্কার করেছে। টানা কয়েকদিন না ঘুমিয়ে ঠিক করতে হয়েছে এর নেটওয়ার্ক কভারেজের অঞ্চল। নামের মতোই এটা সব ধরনের জ্যামিং প্রতিরোধক, কোনো কিছু দিয়ে এই AIRMACকে যোগাযোগ থেকে বিচ্যুত করা যাবে না। আর গোপন কিছু সর্বাধুনিক মানের Micro Laser Air Bubble Sprayer (Micro LABS) অস্ত্র কে সে লিকুইড ফ্রেমের কাভার দিয়ে পাঁচ আঙুলের নখের নিচে রেখে দিয়েছে। এখন শুধু সে আল্লাহর কাছে দোয়া ছাড়া আর কিছুই করছে না। AIRMACএর অপর অংশ যে তার ঘরের এসির রিমোট কন্ট্রোলের মধ্যে আছে। এখন তুহিনের একটাই আশা, ড. রাশিদুল বা তার বোন নুযহাত কেউ যদি তার ঘরে যায় তাহলে হয়তো রিমোট কন্ট্রোলের লাল আলোর দিকে অবশ্যই চোখ যাবে। ঐ কন্ট্রোলে কোনো মানুষের ছোঁয়া লাগলেই এখান থেকে যোগাযোগের রাস্তা খুলে যাবে তার।
৩.
মিটিং শেষ করে কেবল উঠলেন ড. রাশিদুল ইসলাম, তুহিনের বিজ্ঞান জগতের অভিভাবক। সিদ্ধান্ত শেষ পর্যন্ত নিতেই হলো, বন্দী কাহানদের মুক্তির বিনিময়ে তুহিনকে ফিরিয়ে আনা হবে। এছাড়া আর কোনো উপায়ও দেখছেন না তিনি। কাহানরা শর্ত দিয়ে দিয়েছে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বন্দীদের না ছাড়লে তুহিনের লাশ ফেরত দিয়ে যাবে কাহানদের স্পেসশিপ। শুধু তাই নয়, এবার তাদের সাথে হাত মিলিয়েছে একই গ্যালাক্সির ডিকজার গ্রহের এলিয়েনরা। যুদ্ধ হলে হয়তো পারা যেতো, কিন্তু তুহিনের জীবনের বিনিময়ে কোনো কিছুই যথেষ্ট মনে হয়নি আজকের মিটিংয়ে উপস্থিত ব্যক্তিবর্গের। তাই সর্বসম্মতিক্রমেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
কিন্তু তুহিনের এই অসহায় আত্মসমর্পণ মানতে মন চাইছে না ড. রাশিদের। তুহিনকে তিনি ছোটবেলা থেকে চেনেন। হুমকি পেয়ে বসে থাকার ছেলে তুহিন নয়। নিশ্চয়ই একটা কিছু ব্যবস্থা করে গেছে সে। হঠাৎই তাঁর মনে হলো, তুহিনের ঘরে কোনো কিছু পাওয়া যেতেও পারে, যার মাধ্যমে তুহিন কোনো নির্দেশনা দিয়ে গেছে। এখনো ২৪ ঘণ্টা সময় হাতে, একবার দেখাই যাক না- ভাবলেন ড. রাশিদ। দ্রুত তুহিনদের বাসায় গেলেন। তুহিনের বাবা দরজা খুলতেই ড. রাশিদ তুহিনের ঘরে চলে গেলেন। মনে মনে বারবার আল্লাহকে ডাকতে লাগলেন, যেন কিছু একটা পাওয়া যায়। ঘরের প্রতিটা ধুলো নেড়ে চেড়ে দেখতে লাগলেন তিনি। তখন ঘরের এক কোণে এসির রিমোটের নিচে লাল আলো জ্বলতে দেখে রিমোটটি হাতে নিলেন। মানবরক্তের স্পর্শ পেয়ে সবুজ হয়ে উঠলো রিমোটের তলদেশ। সাথে সাথে কয়েক আলোকবর্ষ দূরে কাহান গ্রহে বন্দী তুহিনের হাতের অওজগঅঈ-সঙ্কেত পেয়ে গেলো। তুহিন সাথে সাথে কথা বলে উঠলো- “আসসালামু আলাইকুম, কে?”
ড. রাশিদ আগে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করলেন। এরপর সালামের জবাব দিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন তুহিনকে “তুমি কেমন আছো? কোথায় আছো?”
“এসব প্রশ্নের উত্তর পরে হবে। আগে বলুন স্যার ওরা কোনো মাধ্যমে যোগাযোগ করেছে কিনা?”
“হ্যাঁ, কিছুক্ষণ আগেই আমাদের ২৪ ঘণ্টা সময় দিয়েছে ওদের বন্দী মুক্তি দেয়ার। নতুবা তোমাকে ওরা…”
“স্যার ওরা আমাকে এমনিও ছাড়বে না। আপনি ওদের কোনো কথায় রাজি হবেন না। এখান থেকে বের হওয়ার জন্য আমি তৈরি। আপনি ওদেরকে না করে দিন।”
“তা কি করে হয়? এইমাত্র মিটিং থেকে সিদ্ধান্ত নেয়া হলো। স্বয়ং আমেরিকার প্রেসিডেন্টও তোমার জীবনের ঝুঁকি নিতে চান না বলে ওদের শর্তে রাজি হয়েছেন। এখন…
তুহিন ড. রাশিদুলের মুখের কথা কেড়ে নিয়ে বললো, “স্যার, প্লিজ আল্লাহকে ডাকুন। আমার ইনশাআল্লাহ কিছুই হবে না। ওদেরকে কি জানিয়ে দেয়া হয়েছে আমাদের শর্তে রাজি হওয়ার কথা?”
“না, আমাকে জানানোর দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আমি এখনো বলিনি।”
“স্যার, ওদের অপারেশন ইন চিফ আর সর্বাধিনায়ক দুইজনই আমাদের পৃথিবীর সেলে বন্দী আছে। ওরা ছাড়া পেয়ে হাত মেলাবে ডিকজার গ্রহের সাথে। তারপর দুই গ্রহ মিলে পৃথিবী আক্রমণ করবে। ধ্বংস হবে লাখো মানুষের প্রাণ। কোনোভাবেই আপনারা রাজি হবেন না স্যার প্লিজ। আল্লাহকে ডাকুন। আমাকে কিছু কাজ করতে হবে স্যার। আপনি এখনই বন্দী মুক্ত করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে দিন।”
“কিন্তু মিটিংয়ে তো অন্য সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।”
“স্যার আমার কথায় ভরসা রাখুন। আমি সব ভেবেই বলছি স্যার। প্লিজ এখুনি জানিয়ে দিন।”
“ঠিক আছে বাবা, সাবধানে থেকো, মনে রেখো তোমার এই কথার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। ফি আমানিল্লাহ।”
রিমোট কন্ট্রোল আবারো লাল হয়ে গেলো। ড. রাশিদ ছুটলেন সাইবার রুমে।
৪.
গোটা রুমে লেজার নেট ছড়িয়ে রেখেছে তুহিন। নখের নিচের MicroLABSদিয়ে ঘরের চারিদিকে লেজার বাবল দিয়ে অপেক্ষা করছে সে। এতক্ষণে কাহানদের কাছে তার আর ড. রাশিদুলের কথা চলে গিয়েছে এ ব্যাপারে সে নিশ্চিত। কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে বন্দী মুক্তির অস্বীকৃতি জানানোর আগ পর্যন্ত কাহানরা কোনো পদক্ষেপ নেবে না এটা সে জানে। তাই দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইতে লাগলো।
কয়েক মুহূর্ত পর হুড়মুড় করে কিছু কাহান ঢুকলো তুহিনের বন্দিখানায়। সাথে সাথে বায়ুবন্দী লেজার বুলেটগুলো সক্রিয় হয়ে গেলো। অসহায় শিকার হয়ে মারা গেলো প্রত্যেকেই। তুহিন সাথে সাথে উঠে দাঁড়ালো। অদৃশ্য বন্ধনকে লেজার প্রয়োগে মুক্ত করে নিয়েই ছুটলো সে।
এদিকে বন্দী মুক্তিতে অস্বীকৃতি জানিয়েই কয়েক হাজার সৈন্য মাঝ আকাশে সেট করে দিতে বললেন বিজ্ঞানী ড. রাশিদ। দুই গ্রহের মাঝে বিস্তীর্ণ শূন্যতা। অপেক্ষমাণ সবাই, তুহিনের ফিরে আসার আকাক্সক্ষা নিয়ে।
তুহিন রুম থেকে বের হয়েই ছুটলো করিডোর ধরে। সেখানেও কিছু জায়গায় লেজার বাবল ছড়িয়ে দিলো। এরপর এক কাহানের কাছ থেকে পাওয়া হেড-ওয়ারলেসের মাধ্যমে কন্ট্রোলরুমে যেতে লাগলো। সেখানে বসে ছিলো ডিকজার গ্রহের সেনাপ্রধান ও কাহানদের একজন। তুহিন আসতেই তারা হাত তুলে দাঁড়ালো। মায়া হলো ড. তুহিনের। কিন্তু এদের বাঁচিয়ে রাখলে এরা শান্তিতে থাকতে দেবে না পৃথিবীকে। তাই দেরি না করে বিসমিল্লাহ বলে লেজার ফায়ার করলো তুহিন।
৫.
মহাশূন্যের মাঝে বসে আছে কয়েক হাজার সেনা। সম্মুখের অন্ধকারে হঠাৎ আলোর রেখা দেখতে পেলো তারা, কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই কাছে এসে ভিড়লো কাহানদের একটি নভোযান। সবাই প্রস্তুত হলো আক্রমণের জন্য। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে বিজ্ঞানী ড. তুহিন বেরিয়ে এলো নভোযান থেকে। তুহিন সবাইকে নিয়ে ফিরে চললো পৃথিবীতে। আসার সময় গুঁড়িয়ে দিয়ে এলো কাহানদের গবেষণাগার, আর অস্ত্রের ডিপো।
এক সপ্তাহ পর। তুহিন বসে আছে তার কক্ষে। ইতোমধ্যে কাহান সেনাপতি ও সর্বাধিনায়ককে মৃত্যুদন্ড ও বাকিদের মধ্যে অধিকাংশকেই ছেড়ে দেয়া হয়েছে। শর্ত জুড়ে দেয়া হয়েছে, এরপর পৃথিবীতে আক্রমণ করার দুরভিসন্ধি নিয়ে কেউ পৃথিবীর দিকে এলে পুরো KAHAND-45 গ্রহকেই নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হবে। মুক্তিপ্রাপ্ত কাহানরা বাস্তবতা উপলব্ধি করতে পেরে খুশি মন নিয়েই ফিরে গিয়েছে তাদের বাসভূমি KAHAND-45 এ।
তুহিনের বাসায় বেড়াতে এসেছেন মহাকাশ সেনাপ্রধান জেনারেল ইউসুফ। তুহিনের সাথে গল্প করতে করতে মনে পুষে রাখা প্রশ্নটা করেই ফেললেন তিনি- “আচ্ছা তুহিন, তুমি সম্পূর্ণ অপ্রস্তুত অবস্থায় কিডন্যাপড হয়েও সবাইকে পরাস্ত করে ফিরে এলে কিভাবে?”
“থাক না আংকেল পুরনো কথা। তার চেয়ে চলুন ক্বারী আবদুল্লাহর তেলাওয়াত শুনি। এ বছর বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ক্বারী হয়েছেন তিনি।” বলে তেলাওয়াত ছেড়ে দিলো তুহিন। গোপন বিষয় তুহিন বলতে চাচ্ছে না বলে চুপ করে তেলাওয়াতে মশগুল হয়ে যান জেনারেল। সুমধুর কণ্ঠের তেলাওয়াত বেজে চলছে তুহিনের কম্পিউটারে-
“সৎকর্মপরায়ণ বান্দারাই অবশেষে পৃথিবীর কর্তৃত্ব ও অধিকার লাভ করবে…।” (সূরা আল আম্বিয়া : ১০৫)