Home খেলার চমক এশিয়া কাপ, বিশ্বকাপ বাংলাদেশের বিশ্বজয়ের মিশন -হাসান শরীফ

এশিয়া কাপ, বিশ্বকাপ বাংলাদেশের বিশ্বজয়ের মিশন -হাসান শরীফ

দুর্দান্ত একটি বছর কাটানোর পর আরো বড় স্বপ্নের হাতছানি টাইগারদের সামনে। স্বপ্নযাত্রাটা শুরু হয়েছিল বিশ্বকাপ দিয়েই। মাঝখানে এশিয়া কাপ থাকলেও টাইগারদের আসল টার্গেট ওই বিশ্বকাপ। তবে একদিনের ফরম্যাটে নয়, টি-২০ বিশ্বকাপ। খেলা হবে প্রতিবেশী ভারতে।
বিশ্বকাপ ছাড়াও পাকিস্তান, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অবিশ্বাস্য সাফল্যের জের ধরে বাংলাদেশ এখন লাইমলাইটে। আলোর এই ঝলমলে রাস্তা থেকে টাইগাররা সরে আসতে চায় না। আর তা-ই কঠোর অনুশীলন করছে তারা। এমনকি সামনে যে এশিয়া কাপ আছে, সেটাকেও একটু কম গুরুত্ব দিয়ে। এ কারণেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট বা একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ না খেলে খেলেছে টি-২০ ম্যাচ। অবশ্য, এই ফরম্যাট একটু কম খেলা হয়েছে বলে হিসাব এখনো বুঝে ওঠা যাচ্ছে না। পরিণতিতে একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের মতো সাফল্য ধরা দিচ্ছে না। তবে ঘাটতি পুষিয়ে নিতে অনেক কিছুই করা হচ্ছে। বিপিএলও সেই লক্ষ্যেই ছিল। তারপর জিম্বাবুয়ে সিরিজ।
এশিয়া কাপ অবশ্য এবার বাংলাদেশে হওয়ার কথা ছিল না। ভারতে হবে বলে জানানো হয়েছিল। কিন্তু ভারত অপারগতা প্রকাশ করলে বাংলাদেশ এই সুযোগটি পায়। ভারত টি-২০ বিশ্বকাপের দিকেই পুরো নজর দিতে চাচ্ছে। ফলে ১৩তম এশিয়া কাপ বাংলাদেশে হচ্ছে। আবার এ নিয়ে টানা তৃতীয়বার এই সুযোগ পাচ্ছে বাংলাদেশ। এটাও একটা রেকর্ড। তবে এবারের এশিয়া কাপ প্রথমবারের মতো হবে টি-২০ ফরম্যাটে। এ দিক থেকে এটাও একটা মাইলফলক।
ঢাকায় এবারের আসর অনুষ্ঠিত হবে ২০১৬ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ৬ মার্চ পর্যন্ত। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ছাড়াও এশিয়ার দু’টি সহযোগী দেশ খেলবে এই টুর্নামেন্টে।
এর আগে ২০১২ ও ২০১৪ এশিয়া কাপের সফল আয়োজন করেছিল বাংলাদেশ। ২০১২ সালে বাংলাদেশ ফাইনালে খেললেও ২০১৪ সালে সুবিধা করতে পারেনি। তবে বাংলাদেশ বর্তমানে যে ফর্মে রয়েছে, তাতে এবার ঘরের মাঠে টাইগাররা চ্যাম্পিয়ন হয়ে গেলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
স্বপ্ন কিন্তু ২০১২ সালে ভালোভাবেই সামনে এসেছিল। মাত্র ২ রানের জন্য হাত থেকে স্বপ্নটি ফসকে গিয়েছিল। এখন যে ফর্মে রয়েছে টাইগাররা, তাতে করে শিরোপাটা তাদের হাতে ধরা দিলে সত্যিই কেউ অবাক হবে না।
এশিয়া কাপ শুরু হয়েছিল সেই ১৯৮৪ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজায়। এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ সাফল্য ভারত ও শ্রীলঙ্কার। তারা উভয়ে পাঁচবার করে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।
টি-২০ বিশ্বকাপে অবশ্য বাংলাদেশ সরাসরি মূল পর্বে খেলতে পারছে না। ১৬ দলের টি-২০ বিশ্বকাপে সরাসরি মূল পর্বে খেলা নিশ্চিত আইসিসির পূর্ণ সদস্যভুক্ত ১০ দেশের। তবে এ ১০ দেশের মধ্যে টি-২০ র‌্যাংকিংয়ের শীর্ষ ৮টি দেশ আবার সরাসরি টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় পর্ব বা সুপার টেনে খেলবে। বাকি দুই দল বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়েকে খেলতে হবে বাছাইপর্ব উতরে আসা ছয়টি দলের সঙ্গে প্রথম রাউন্ড। প্রথম রাউন্ড থেকে শীর্ষ দুই দল সুপার টেনে খেলার সুযোগ পাবে।
সুপার টেনে ওঠার লড়াইয়ে বাংলাদেশ রয়েছে ‘এ’ গ্রুপে। যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ নেদারল্যান্ডস, আয়ারল্যান্ড ও ওমান। তবে আশা করা হচ্ছে, এই পর্ব উতরাতে খুব একটা সমস্যা হবে না। সুপার টেনের দিকেই বাংলাদেশের মনোযোগ। সেখানে অবশ্য বাংলাদেশ বেশ কঠিন গ্রুপেই পড়েছে। সেখানে খেলতে হবে ভারত, পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। চারটি দলই দুর্ধর্ষ, কারো চেয়ে কেউ কম নয়। তবে টাইগাররাও বা এখন কার থেকে কম! কাজেই বুক চেতিয়ে লড়াই হবে।
‘বি’ গ্রুপে রয়েছে জিম্বাবুয়ে, স্কটল্যান্ড, হংকং ও আফগানিস্তান।
৮ মার্চ নাগপুরে প্রথম রাউন্ডের ম্যাচ শুরু হবে। প্রথম দিনে দু’টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। ৮ থেকে ১৩ মার্চ হবে প্রথম রাউন্ডের খেলা। এই রাউন্ডে বাংলাদেশের তিনটি ম্যাচ হবে ৯, ১১ ও ১৩ মার্চ। যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ যথাক্রমে নেদারল্যান্ডস, আয়ারল্যান্ড ও ওমান।
সুপার টেনে শীর্ষ আট দলের গ্রুপিং ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। গ্রুপ-১-এ রয়েছে শ্রীলঙ্কা, দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ইংল্যান্ড।
আর গ্রুপ-২-এ রয়েছে ভারত, পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। প্রথম পর্ব পেরোতে পারলে বাংলাদেশ গ্রুপ-২-এ অন্তর্ভুক্ত হবে।
দ্বিতীয় রাউন্ড বা চূড়ান্ত পর্বের খেলা শুরু হবে ১৫ মার্চ। আর ফাইনাল ম্যাচের মধ্য দিয়ে টুর্নামেন্ট শেষ হবে ৩ এপ্রিল।
ভারতের আটটি শহরে হবে ম্যাচগুলো। এগুলো হলো : ব্যাঙ্গালুরু, চেন্নাই, ধর্মশালা, মোহালি, মুম্বাই, নাগপুর, নতুনদিল্লি ও কলকাতা।
একই সময়ে অনুষ্ঠিত হবে মেয়েদের আন্তর্জাতিক টি-২০ বিশ্বকাপও। মেয়েদের টি-২০ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ থাইল্যান্ডে ইতোমধ্যে বাছাইপর্ব থেকে চূড়ান্তপর্ব নিশ্চিত করেছে। মেয়েদের টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ রয়েছে ‘বি’ গ্রুপে। যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ভারত ও পাকিস্তান।
সব ক্রিকেটেই বাংলাদেশ আবারো বাঘের গর্জনে বিশ্বকে কাঁপাবে, এটাই সবার প্রত্যাশা। সবাই প্রস্তুত টাইগারদের সেই আতঙ্ক ছড়ানিয়া গর্জন শোনার জন্য।

SHARE

2 COMMENTS

Leave a Reply