এশার নামাজ পড়ে রাজিব ও সাজিদ মসজিদ থেকে বের হয়ে বাড়ির দিকে যাচ্ছিল। হঠাৎ তারা দু’জনেই কিছু আলোকরশ্মি নিচে পড়তে দেখল। মাটিতে পড়ার সাথে সাথেই একটি জোরালো শব্দ হলো। তারা দু’জনে দেরি না করে সে স্থানে গেল কী ঘটেছে দেখার জন্য। তারা দেখলো একটি লোক উপুড় হয়ে পড়ে আছে। অজ্ঞান সে। সাজিদ রাজিবকে বললো, লোকটি বেঁচে আছে, হাসপাতালে নিতে হবে। কিন্তু তারা যখন লোকটিকে উঠাতে যাবে তখন দেখলো লোকটির ওজন হবে মাত্র ২০-২৫ কেজি। সাজিদ ও রাজিব ভয়ে তাকে ছেড়ে দিল। সাজিদ ও রাজিব তারা কেউই ভূত আছে বলে বিশ^াস করে না। কিন্তু তারপরও এ দৃশ্য দেখে হতবিহবল হয়ে পড়েছে। তাই তারা লোকটিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য কিছু মানুষ ডাকল। অবশেষে তারাই তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেল। ইতোমধ্যে সাজিদ ও রাজিব তাকে দেখার জন্য হাসপাতালে গেল। ডাক্তাররা তার পালস পরীক্ষা করতে লাগলেন। রাজিব তার পাশে গিয়ে বসলো। হঠাৎ রাজিবের হাত রোগীর গায়ে পড়ল, সেখান থেকে নানা রকম আলোকরশ্মি ছড়িয়ে পড়ল। আংটি থেকে আলোর বিচ্ছুরণ ঘটেছে কি না তা দেখার জন্য আংটিতে চাপ দিল, আবার একই ঘটনা ঘটল। আঁতকে উঠল সবাই। হঠাৎই দরজা খুলে গেল এবং দু’জন সুুদর্শন যুবক তাদেরকে সালাম দিল। তারা বলল, আমরা কী এই রোগীকে একটু দেখতে পারি? রাজিব বলল, অবশ্যই দেখতে পারেন। তারপর তাদের ব্যাগ থেকে তারা একটি যন্ত্র বের করল এবং একটা বোতামে চাপ দিল। যন্ত্রটি থেকে একটি আলোকরশ্মি রোগীর হার্টে গিয়ে আঘাত করল। রোগী সাথে সাথেই সুস্থ হয়ে উঠল। এবং বলল, ‘আলহামদুলিল্লাহ’। তারপর তারা বলতে শুরু করল, আমরা সৌরজগতের একটি ছোট গ্রহের বাসিন্দা। আমরা বিভিন্ন গ্রহে ভ্রমণ করি। রোগীটি বলল, আমি পৃথিবীতে ভ্রমণ করতে বেরিয়ে ছিলাম। কিন্তু আমার আংটিটি সচল না করেই আমি ভ্রমণ করতে নেমেছিলাম। হঠাৎ আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি। যদি তোমাদের হাত এ আংটিতে না লাগত তাহলে তারা আসতে পারত না। এই আংটিটির মধ্যে অনেক জিনিস রয়েছে। এটির মধ্যে একটি কোড সংরক্ষিত থাকে। সেই কোড থাকে আমাদের গ্রহের স্যাটেলাইটগুলোতে। যখনই আমরা কোন বিপদে পড়ি, তখন এই আংটির কোড ব্যবহার করে আমাদের গ্রহের প্রাণীরা আমাদের অবস্থান কোথায়, কোন সমস্যা তা বলতে পার। তাদের কাছ থেকে বিদায় নেয়ার সময় তারা হাসপাতাল ঘুরে ঘুরে দেখল। এবং বলল, এখানে এরা কিসের রোগী। রাজিব উত্তর দেয়, এরাও হার্টের সমস্যায় ভুগছে। আপনারা কি তাদের ভালো করতে পারবেন? অবশ্যই পারব ‘ইনশাআল্লাহ’। তারপর তারা তাদের সেই যন্ত্রটি বের করল এবং নির্দিষ্ট বোতাম চাপল, সাথে সাথে কতকগুলো আলোকরশ্মি তাদের হার্টে আঘাত করলে তারাও সুস্থ হয়ে উঠল। শেষে তারা রাজিবকে একটি কলম উপহার হিসেবে দিল। এবং এটার বিশেষত্ব তাকে বলে গেল। তারা তাদের সহকর্মীকে নিয়ে তাদের গ্রহে চলে গেল। রাজিব সেদিন ঘুমানোর আগে কলমটিকে দেখল। কিছুক্ষণের মধ্যেই কলমের মাথায় আলো জ্বলে উঠল। সে তাদের কথা অনুযায়ী কলমের জ্বলন্ত বাতিটিকে চাপ দিল, সেটি সাথে সাথে একটি আলোকপর্দায় রূপ নিল। সেখানে সেই তিনজনকে দেখতে পেল। সকল কথোপকথন শেষে তারা বলল, আগামী ৫ দিন পর তাকে ঠিক রাত ১২টার সময় তাদের বাড়ির ছাদে থাকতে। একদিন যায়, দু’দিন যায়, পাঁচ দিনের দিন সে ১২টা বাজার ৫ মিনিট আগে তাদের বাসার ছাদে অবস্থান করল। ১২টা বাজতেই নিঃশব্দে একটি যান তাদের ছাদে এসে থামল। হঠাৎ ক্লিক করে দরজা খুলে গেল। যানটির ভেতরে একটি ছোট বাতি ছিল। সে সামনে এগোতে যাবে, ঠিক এমন সময় একটি সৌন্দর্যমন্ডিত কার্পেট তার সামনে এলো। তাকে আর হাঁটতে হলো না। কার্পেট তাকে যানটির ভেতরে নিয়ে গেল। দরজা বন্ধ হয়ে গেলে সমস্ত যানটির ভেতরে আলো জ্বলে উঠল। তখন সেখানে দেখল সেই তিনজন প্রাণী ও তাদের গ্রহের নেতা দাঁড়িয়ে রয়েছেন। তাদেরকে সালাম দিল ও কুশল বিনিময় করল। তারপর তাদের গ্রহের মধ্যে অবতরণ করার পর সেই প্রাণীদের সাথে গ্রহের বিভিন্ন জিনিস ঘুরে ঘুরে দেখল। প্রাণীদের সাথে শেষ মুহূর্তে বিদায় নেয়ার সময় আল্লাহ ও রাসূলের কথা পৃথিবীতে প্রচার করার জন্য বলল। শেষে সেই অদ্ভুত যানটি তাকে নিয়ে পৃথিবীর দিকে রওনা দিল। অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে সে পৃথিবীতে সেই অদ্ভুত যানটির মাধ্যমে চলে এলো। বাসায় এসে দেখল মাত্র ৩টা বাজে।