সুুপ্রিয় বন্ধুরা,
মুখোমুখিতে আবারো হাজির হলেন দেশের প্রধান কবি আল মাহমুদ। তোমাদের পাঠানো অসংখ্য প্রশ্ন থেকে বাছাইকৃত কিছু প্রশ্ন এবং উত্তর নিয়ে সাজানো হলো এবারের মুখোমুখি।
‘কাবিলের বোন’ উপন্যাসের প্রেক্ষাপট কী? এটি কোন সময় রচনা করেছিলেন।
জামান
কুমিল্লা বিশ^বিদ্যালয়
আল মাহমুদ : আমার তো সব কিছু মনে পড়ছে না। আমাদের দেশে উপন্যাস খুব কম লেখা হয়েছে। আমরা মুখে বলি উপন্যাসের কাটতি ভালো। এর পাঠক আছে, সবই ঠিক আছে। কিন্তু এই উপন্যাস একটি ভিন্নধর্মী উপন্যাস, পূর্ণাঙ্গ উপন্যাস। এটি আমার জীবনের অভিজ্ঞতার আলোকে লেখা। আমি মনে করি ঐ সময়ের শ্রেষ্ঠ উপন্যাস হলো ‘কাবিলের বোন’।
মুক্তিযুদ্ধের সময়ের কোনো ঘটনা মনে আছে কি?
শায়লা
খুলনা বিশ^বিদ্যালয়
আল মাহমুদ : মুক্তিযুদ্ধের সময় আমি যুবকবয়সী, তখন আমি গৌহাটি হয়ে পালিয়ে কলকাতা গিয়েছিলাম। আমার ভগ্নিপতি ছিলেন বড় একজন আমলা। তার সহায়তায় কিছু কাজ করেছিলাম। বেশি কিছু মনে করতে পারছি না। আমার কাজ ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের এবং মুক্তিযুদ্ধের সহযোগীদের ‘মোটিভেট’ করা। আমি খুব পরিশ্রম করতাম। এত কিছু আমার মনে নেই। এককথায় আমি ছিলাম ‘মোটিভেটর’।
কবি মতিউর রহমান মল্লিকের সাথে আপনার সম্পর্ক কেমন ছিল, তার সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন কী?
মুন্সি রফিক
ঢাকা
আল মাহমুদ : কবি মতিউর রহমান মল্লিক প্রকৃতপক্ষে গানের লোক। গান তিনি ভালোবাসতেন। গানের ওপর তিনি আন্তরিকভাবে কাজ করে গেছেন। এবং খুব ভালো ভালো গান রচনা করেছেন। তার গানে ‘মরমি’ একটা ব্যাপার আছে। গীতিপ্রবণ মানুষ ছিলেন তিনি। আমার বিবেচনায় তিনি ভবিষ্যৎ দৃষ্টিসম্পন্ন মানুষ ছিলেন। অনেক প্রতিভা ও গুণ একত্রিত হয়েছিল তার সত্তায়। আমি তার কথা সবসময় চিন্তা করি। তাকে হারিয়ে আমাদের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেছে। অকালেই চলে গেছেন তিনি। এ জন্য আমি খুব দুঃখ-বেদনা অনুভব করি। যন্ত্রণা হয় যে, তার মতো একজন কবি, লেখক অতি অল্প বয়সে আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন।
আপনার শারীরিক অবস্থা এখন কেমন ? শুনেছি আপনি চোখে কম দেখেন- তাহলে লেখেন কিভাবে?
তানবীরুল ইসলাম (নাঈম)
মনিরামপুর, যশোর
আল মাহমুদ : আমার তো বয়স এখন প্রায় ৮০ বছর। এর পরও তোমাদের সাথে কথা বলতে পারছি, আল্লাহ এখনো সুস্থ রেখেছেন।
আর লেখার ব্যাপার হলো- আমার কয়েকজন ‘শ্রুতি লেখক‘ আছেন, যারা আমি বললে তারা তা লিখে নেয় এবং আমাকে আবার পড়ে শুনায় কী লিখেছে। এভাবেই এখন লেখালেখি চালিয়ে যাচ্ছি আর কী।
এই বয়সেও আপনি কিভাবে লেখালেখি করেন?
রওশনারা আক্তার
সাতমেড়া, পঞ্চগড়
আল মাহমুদ : সবই আল্লাহর ইচ্ছা, ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়।
আপনার ইচ্ছা কী?
মারিয়া আক্তার
চান্দিনা, কুমিল্লা
আল মাহমুদ : সত্য ও বিশ^াসকে আমি লালন করি সর্বতোভাবে, আমার শেষ চাওয়া হলো- এই বিশ^াস নিয়েই আমি মরতে চাই। তবে এর আগে একটি সুন্দর বাংলাদেশ দেখে যেতে চাই।
আপনার দৃষ্টিতে বাংলা সাহিত্য কতটুকু এগোলো বা এগোচ্ছে ?
শামীমা আক্তার
ফুলগাজী, ফেনী
আল মাহমুদ : নতুন বৈপ্লবিক লেখা হচ্ছে না; বাংলা সাহিত্য কিন্তু থেমে নেই। আধুনিক বাংলা সাহিত্য চুপ করে নেই, সে এগিয়ে চলছে, এ দেশের তারুণ্য নতুন যুগ খোঁজছে এবং ভালোই লিখছে।
সেরা মানুষ হওয়ার জন্য কী করতে হবে?
রফিক
মতলব, চাঁদপুর
আল মাহমুদ : সেরা মানুষ হওয়ার জন্য সেরাটা জানতে হবে, সেরাটা দেখতে হবে। যে যতো বেশি দেখতে পারে সে ততো সেরা মানুষ। চক্ষুষ্মান হতে হবে।