Home তোমাদের গল্প বিজয়

বিজয়

আরাফাত সিদ্দীকী (আল আমিন) #

golpoপ্রতিবারের মতো এবারও আমাদের পোড়াবাড়ি উচ্চবিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হলো অভ্যন্তরীণ ফুটবল টুর্র্নামেন্ট প্রতিযোগিতা। পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকে খেলা নিয়ে খুবই ব্যস্ত ছিলাম। এই বার মোট দল সংখ্যা ছিল ৫টিÑ লাল নীল, হলুদ, সবুজ ও কমলা এবং প্রত্যেক দলের খেলোয়াড় সংখ্যা ছিল ২৫ জন করে। আমি ছিলাম নীল দলের অধীনে। আমাদের দলে ছিল আরিফ মুবিন, কাওসার (পিএম), রিফাত আমিসহ আরও অনেকে। আমাদের দল ছিল তুলনামূলকভাবে বাকি দলের চেয়ে অনেকটা পিছিয়ে। তবুও আমরা আমাদের মনোবল হারাইনি। প্রত্যেক দলের খেলা ছিল ৪টি করে। যেই দুই দলের স্কোর বেশি হবে, তারাই খেলবে ফাইনাল ম্যাচ। প্রথম ম্যাচে আমরা লাল দলের সাথে ১-১ গোলে ড্র করি। ঐ দিনই আবার হলুদ দল কমলাকে ৫-০ গোলে হারায়। এভাবে পর্যায়ক্রমে খেলা চলতে থাকে। পঞ্চম দিন শেষে স্কোর দাঁড়ায় লাল ১০, নীল ০৪, হলুদ ০৬, কমলা ০৫ ও সবুজ ০১। বাকি রইল নীল দল ও হলুদ দলের খেলা। যেই দল এই ম্যাচে জিতবে সেই দল খেলবে লাল দলের সাথে ফাইনাল ম্যাচ। শেষ ম্যাচে আমরা হলুদ দলকে ৩-০ গোলে হারিয়ে আমাদের লক্ষ্যের চূড়ায় পৌঁছে যাই। ফাইনাল ম্যাচ লাল বনাম নীল দল। ম্যাচ ঠিক হয় শনিবার বেলা দেড়টায়। শনিবার বিদ্যালয়কে নবরূপে সাজানো হয়। চারদিকে শুধু দর্শক আমাদেরকে উৎসাহ দিচ্ছে। সবাই নানা রকম স্টাইল ও পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নামে। ৬০ মিনিটের খেলা। প্রথমার্ধের খেলা চলছে খুবই উত্তেজনা পূূর্ণ। হঠাৎ ১৭ মিনিটের মাথায় লাল দলের পক্ষে থেকে একটি গোল করে হৃদয়। চারদিকে হাহাকার। প্রথমার্ধের খেলা ১-০ গোলে শেষ হয়। দিতীয়ার্ধের খেলা শুরু, চলতে থাকেÑ হঠাৎ দ্বিতীয়ার্ধের ৫ মিনিটের মাথায় নীল দলের পক্ষ হতে গোল করে খোকন। খেলায় সমতা ফিরে আসে। তখনো বিপদ কাটেনি। কারণ যদি টাইব্রেকারে খেলা সমাপ্ত হয় তখন আমরা নিশ্চিত হারব কিন্তু। ৫৬ মিনিটের মাথায় রেফারি খোরশেদ আলম (ক্রীড়া শিক্ষক) ফাউলের অপরাধে নীল দলের পক্ষে ফ্রি কিকের সিদ্ধান্ত দেন। ফ্রি কিক করবে মেহেদী। তার ওপরই আমাদের সব ভরসা। চারদিকে নিস্তব্ধ। অবিশ্বাস্যভাবে ব্রাজিলের  ডেবিটি লুইজের মতো মাঝ মাঠ হতে গোল করে মেহেদী। আমরা সবাই খুশিতে আত্মহারা হয়ে উঠি। চারদিকে হই হই প্রতিধ্বনিতে ভরে উঠে। অবশেষে আমরা বিজয় লাভ করি। খেলায় সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয় নীল দলের মেহেদী। আর একেই বলে সত্যিকারে অভাবনীয় জয়।

SHARE

Leave a Reply