বিস্মিল্লাহির রাহমানির রাহীম
“হযরত জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা) বলেন, রাসূল (সা) বলেছেন, দু’টি বিষয় অপর দু’টি বিষয়কে অনিবার্য করে তোলে। এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসূল (সা), সে বিষয় দু’টি কী? নবী করীম (সা) বললেন, যে আল্লাহর সাথে কাউকে শরিক করে মৃত্যুবরণ করেছে, সে অবশ্যই জাহান্নামে যাবে। পক্ষান্তরে যে আল্লাহর সাথে কাউকেও শরিক না করে মৃত্যুবরণ করেছে, সে অবশ্যই জান্নাতে যাবে।” (সহীহ মুসলিম)
প্রিয় বন্ধুরা,
শিরক সম্পর্কে আমরা সবাই কমবেশি জানি। আল্লাহর জাত বা গুণের সমকক্ষ কাউকে সাব্যস্ত করাই হচ্ছে শিরক। আর তোমরা অবশ্যই জেনে থাকবে যে, ঈমানের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে তাওহীদ। অর্থাৎ এক আল্লাহতে বিশ্বাস। শিরক হলো তাওহীদের সম্পূর্ণ বিপরীত। আমাদেরকে যদি প্রকৃত মুমিন-মুসলিম হতে হয়, তাহলে শিরক থেকে পুরোপুরি মুক্ত থাকতে হবে। কেননা, এটি আল্লাহর কাছে সবচেয়ে নিকৃষ্ট অপরাধ। শিরককারী জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না বলে কুরআন ও হাদিসে ঘোষণা করা হয়েছে। কুরআন পাকে আল্লাহ বলেন, “নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর সাথে শরিক করাকে ক্ষমা করেন না, এছাড়া সবকিছু যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন এবং কেউ আল্লাহর সাথে শরিক করলে সে ভীষণভাবে পথভ্রষ্ট হয়।” (সূরা আন-নিসা : ১১৬)
এজন্য আমাদেরকে শিরক সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান লাভ করা প্রয়োজন যাতে আমরা আমাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে মনের অজান্তেও কখনও শিরকে জড়িয়ে না পড়ি। শিরক মূলত আল্লাহর জাত বা সত্তা ও গুণাবলির সাথে কাউকে সমকক্ষ মনে করা বোঝায়। আল্লাহর অনেকগুলো গুণবাচক নাম রয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে তাঁর অসংখ্য নিয়ামতের মধ্যে কিছু প্রকাশ পায়। যেমন, আল্লাহ হলেন- রিজিকদাতা, জন্ম-মৃত্যুদাতা, বিধানদাতা, লালন-পালনকারী, অতীত-ভবিষ্যৎ সকল বিষয়ের একমাত্র জ্ঞানী, বিশ্বজগতের নিয়ন্ত্রণকারী ইত্যাদি। এখন কেউ যদি কোনো ব্যক্তি বা কোনো বস্তুকে রিজিকদাতা বলে মনে করে, কোনো মানুষ যদি মানুষের রচিত আইনকে আল্লাহর আইনের পরিবর্তে ভালো আইন বলে গ্রহণ করে বা মনে করে, কোনো ব্যক্তি যদি কোনো ব্যক্তি বা বস্তুকে ভবিষ্যৎদ্রষ্টা বলে মনে করে ইত্যাদি তাহলে তা শিরকের অন্তর্ভুক্ত হবে এবং শিরককারী জান্নাতে যেতে পারবে না।
সুতরাং বন্ধুরা এসো, আমরা সকল প্রকার শিরক থেকে নিজেদের মুক্ত করে জান্নাতে যাবার পথ প্রশস্ত করি। আল্লাহ আমাদের তাওফিক দিন। আমীন।
গ্রন্থনা : মোহাম্মদ ইয়াসীন আলী