পৃথিবীতে এই মুহূর্তে সব থেকে বেশি প্রয়োজনীয় যোগাযোগমাধ্যম মোবাইল ফোন। ১৯৭৩ সালের ৩ এপ্রিল মোবাইল ফোন থেকে প্রথমবার কল করা হয়েছিল। মটোরোলার জ্যেষ্ঠ প্রকৌশলী মার্টিন কুপার প্রথমবারের মতো সেলুলার টেলিফোনে বিশ্বের প্রথম ফোনকলটি করেছিলেন। তারপর এখন তা বিশ্বব্যাপী রীতিমত বিপ্লবে পরিবর্তিত হয়েছে। গত ২০১২ সালের অক্টোবরে প্রকাশিত ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের এক তথ্য অনুযায়ী, ৬০০ কোটিরও বেশি মোবাইল সাবস্ক্রিপশন হয়েছে বিশ্বজুড়ে। ওই সময় পৃথিবীর জনসংখ্যা ছিল ৭০০ কোটি। যুক্তরাজ্যের টেলিকমিউনিকেশন প্রতিষ্ঠান টেলিফোনিকা ইউরোপ-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক শর্ট জানিয়েছেন, ব্যবসা ক্ষেত্রে মোবাইল ফোনের ব্যবহারের দিক থেকে গত চার দশকে দ্রুত উন্নতি করেছে মোবাইল ফোন। ভবিষ্যতে আরও উন্নত প্রযুক্তিপণ্য আমরা দেখতে পাব। এর মধ্যে রয়েছে পরিধেয় স্মার্ট হাতঘড়ি, চশমার মতো প্রযুক্তিপণ্য।
মার্টিন কুপারকে মোবাইল ফোনের জনক বলা হয়। বর্তমানে তার বয় ৮৫ বছর। বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মার্টিন কুপার জানিয়েছিলেন, চার দশক আগে মোবাইল উদ্ভাবনের পর এর দামও বেশি ছিল আর আকার ছিল বড়। তবে তিনি জানতেন একদিন মোবাইল ফোনের দাম আর আকার দুই-ই মানুষের হাতের মুঠোয় চলে আসবে।
আজ থেকে প্রায় চার দশক আগে মানুষের হাতে এসেছিল প্রথম মোবাইল ফোন সেট। সেটি ছিল মটোরোলার গবেষক মার্টিন কুপারের আবিষ্কৃত ডায়না টিসি। কুপার সেই মোবাইল ফোন দিয়ে প্রথম কথা বলেছিলেন তার প্রতিদ্বন্দ্বী বেল ল্যাবসের গবেষক জোয়েল এনজেলের সঙ্গে। মোবাইল ফোন সেট তৈরির জন্য তখন আলাদাভাবে কাজ করেছিলেন মটোরোলার গবেষক মার্টিন কুপার ও বেল ল্যাবসের জোয়েল এনজেল। তবে শেষ পর্যন্ত বিজয়ের হাসি হেসেছিলেন কুপার। মটোরোলা কোম্পানিতে কাজ করতেন মার্টিন কুপার। ওই সময় প্রতিষ্ঠানটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন প্রযুক্তিবিদ জন মিশেল। তিনি একদিন কুপারের সামনে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, বিশ্বের প্রথম মুঠোফোন তৈরি করবে মটোরোলা আর আবিষ্কারক হবেন কুপার। কুপার সেই চ্যালেঞ্জ নিয়ে জয়ী হয়ে গর্বিত করেছিলেন জন মিশেল ও তার প্রতিষ্ঠান মটোরোলাকে।
মার্টিন কুপার ডায়না টিএসি তৈরিতে সফল হয়েছিলেন ১৯৭৩ সালের ৩ এপ্রিল। সেটি বর্তমান সময়ের হালকা-পাতলা স্মার্টফোনের মতো ছিল না। সোয়া এক কেজি ওজনের সেই সেলুলার ফোনটি লম্বায় ছিল ১০ ইঞ্চি। একবার ব্যাটারি চার্জ হলে ২০ মিনিট কথা বলা যেত। আর ব্যাটারি চার্জ করতেও লাগত অনেক সময়। একসময় এর পরিচিতি দাঁড়ায় ব্রিক ফোন বা ইট আদলের ফোন। নিউ ইয়র্ক সিটির সিক্সথ অ্যাভিনিউতে হাঁটতে হাঁটতে প্রথমবারের মতো সেলুলার নেটওয়ার্কে ফোনকল করেন কুপার। টেলিফোনে বিশ্বের প্রথম ফোনকলটি গ্রহণ করেছিলেন বেল ল্যাবসের প্রধান গবেষক জোয়েল এনজেল। জোয়েলের অফিসে সরাসরি ফোনকল করার এ ঘটনাটিই বিশ্বের প্রথম সেলুলার ফোনালাপ।
হ জে হুসাইন