“তিনি (আল্লাহ তা’য়ালা) এমন যিনি তোমাদের জন্য আসমান থেকে পানি বর্ষণ করেছেন, যা থেকে তোমরা পান করতে পার এবং তার দ্বারা উদ্ভিদসমূহ (উৎপন্ন) হয়, যাতে তোমরা (জীব জন্তুগুলোকে) চরাবার জন্য ছেড়ে দাও। তিনি (আল্লাহ) তা দ্বারা তোমাদের জন্য শস্য এবং জয়তুন, খেজুর, আঙ্গুর এবং সর্বপ্রকার ফল উৎপাদন করেন, নিঃসন্দেহে এর মধ্যে চিন্তাশীল লোকদের জন্য নিদর্শন রয়েছে।”
(সূরা আন্-নহল ॥ আয়াত : ১০-১১)
সুপ্রিয় বন্ধুরা, মহান আল্লাহর বিস্ময়কর এক সৃষ্টি নিদর্শনের নাম ফল। এটি আল্লাহপাকের এমন এক নিয়ামত যা সবাই পছন্দ করে। ফলের কথা মনে পড়লে কার না লোভ লাগে? ফল খেতে জোয়ান-বুড়ো সবাই ভালোবাসে। আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু হরেক রকম মজার মজার ফল আমাদের দেশে পাওয়া যায়। এ সবই মহান আল্লাহর নিয়ামত। আমাদের সমাজে কেউ অসুস্থ হলে আমরা ফল নিয়ে তাকে দেখতে যাই। এটি হাদিসের নির্দেশও বটে। বছরের প্রতিটি সময়ই কোন না কোন ফল আমাদের দেশে পাওয়া যায়। কিন্তু আমরা কখনো কি ভেবে দেখেছি এ ফলের উৎপত্তি কোথা থেকে? এতো সুন্দরতম ব্যবস্থাপনার কারিগর কে? এ সবই মহান আল্লাহর দান। একটি বৃক্ষ- তার এমন কী গুণ আছে যে সে সুস্বাদু ফল দেবে? একটি বৃক্ষ-তার এমন কী ক্ষমতা আছে যে সে ফুল দেবে? গাছের কোন ক্ষমতা নেই ফল কিংবা ফুল দেয়ার, যদি আল্লাহ তার মধ্যে ক্ষমতা না দেন। আমরা মাটিতে চারা রোপণ করি, আর তাতে ফলের ব্যবস্থা করে দেন মহান আল্লাহ। তিনি আসমান থেকে পানি বর্ষণ করেন, তাতে ফল মিষ্টি এবং সুস্বাদু হয়। এভাবে প্রতিটি বৃক্ষই আল্লাহর কুদরতি ইশারায় বড় হয় এবং ফলন দেয়।
যারা এ বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করে, তারা এমন সাক্ষ্যপ্রমাণ পায়, যার ফলে আল্লাহ তা’য়ালার তাওহিদে বিশ্বাস আরও উজ্জ্বল হয়ে ফুটে ওঠে। এ কারণেই নিয়ামতগুলো উল্লেখ করে বারবার এ বিষয়ের প্রতি আল্লাহ তা’য়ালা বান্দাকে সতর্ক করেছেন। এ আয়াতের শেষে বলা হয়েছে যে, এতে চিন্তাশীলদের জন্য প্রমাণ রয়েছে। কেননা, ফসল ও বৃক্ষ এবং এসবের ফল ও ফুলের যে সম্পর্ক আল্লাহ তা’য়ালার কারিগরি ও রহস্যের সাথে রয়েছে তা কিছুটা চিন্তা-ভাবনার দাবি রাখে। মানুষের চিন্তা করা দরকার যে, শস্য কণা কিংবা আঁটি মাটির নিচে পুঁতে রাখলে এবং পানি দিলেই আপনা আপনি বিরাট মহীরূহে পরিণত হতে পারে না এবং তা থেকে রঙবেরঙের ফল ও ফুল উৎপন্ন হতে পারে না। যা হয়, তাতে কোন কৃষক বা চাষির ভূস্বামীর কোন দখল নেই। বরং সবই সর্বশক্তিমানের কারিগরি ও রহস্য। সবই মহান আল্লাহর অপার করুণা।
প্রিয় বন্ধুরা, এসো আমরা সৃষ্টির নিদর্শন এমন ফল যিনি সৃষ্টি করেছেন তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি।
গ্রন্থনায়: আবদুল কুদ্দুস মাখন