Home কুরআন ও হাদিসের আলো হাদীসের আলো জিহ্বা দ্বারা যে কষ্ট দেয় সে জাহান্নামি

জিহ্বা দ্বারা যে কষ্ট দেয় সে জাহান্নামি

“হজরত আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত, একজন লোক রাসূলুল্লাহ (সা) এর নিকট এসে নিবেদন করলো, হে আল্লাহর রাসূল! অমুক স্ত্রীলোকটি অধিক নফল নামাজ, অধিক নফল রোজা ও অধিক দান-খয়রাতের জন্য বিখ্যাত কিন্তু সে তার প্রতিবেশীদেরকে জিহ্বা দ্বারা কষ্ট দেয়। রাসূলুল্লাহ (সা) বললেন, সে জাহান্নামি। সে আবার আরজ করলো, হে আল্লাহর রাসূল (সা), অমুক স্ত্রীলোকটি সম্পর্কে বলা হয়ে থাকে যে, সে নফল নামাজ কম পড়ে, নফল রোজা কম রাখে এবং কম দান করে কিন্তু মুখের ভাষা দিয়ে কোন প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয় না। রাসূলুল্লাহ (সা) বললেন, সে জান্নাতবাসী।” (মিশকাত)

সুপ্রিয় বন্ধুরা, সামাজিক জীবনে প্রতিবেশীর হক একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। কারণ একজন মানুষ একাকী জীবনযাপন করতে পারে না। পরস্পর পরস্পরের মুখাপেক্ষী। তাই সামাজিক জীবনে প্রত্যেক মানুষেরই রয়েছে কিছু দায়িত্ব ও কর্তব্য। সুখে-দুঃখে একজন আরেকজনের অংশীদার হওয়া, কেউ অসুস্থ হলে তার দেখাশোনা করা এটি একটি ঈমানী দায়িত্ব। তাই প্রত্যেক মু’মিন বান্দার উচিত তার প্রতিবেশীর হক আদায় করা। প্রতিবেশীর হকের গুরুত্ব সম্পর্কে হাদিসে বলা হয়েছে যে, ‘কোন বান্দা যদি কোন প্রতিবেশীর হক নষ্ট করে, আল্লাহ ঐ ব্যক্তিকে ততক্ষণ পর্যন্ত ক্ষমা করবেন না যতক্ষণ না সে ক্ষমা করে।’ সুতরাং এর দ্বারা বোঝা যায়, প্রতিবেশীর হক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

এ ব্যাপারে অত্র হাদিসে বলা হয়েছে কোন বান্দা যদি মুখের ভাষা দিয়ে কাউকে কষ্ট দেয় এবং সে যত বড় বুজুর্গই হোক না কেন, সে অধিক পরিমাণে নফল ইবাদত করলেও সে জাহান্নামি। পক্ষান্তরে কোন ব্যক্তি নফল ইবাদত কম করল কিন্তু সে সমাজের কোন মানুষকে তার মুখের কথা দ্বারা কষ্ট দেয় না তবে সে জান্নাতবাসী। জিহবা এমন একটি বস্তু যা দ্বারা একজন মানুষ আরেকজন মানুষের অনেক বড় ক্ষতি করে ফেলতে পারে। জিহ্বা বা মুখের কথাকে ধারালো অসির সাথে তুলনা করা যেতে পারে। ধারালো অসি যেমন কোন বস্তুকে কেটে ক্ষত-বিক্ষত করে ফেলতে পারে, তেমনিভাবে মুখের কথা একজন মানুষের মনকে ক্ষত-বিক্ষত করে ফেলতে পারে। রাসূল (সা) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আমাকে তার দু’টি বস্তুর ব্যাপারে নিশ্চয়তা দিতে পারবে একটি লজ্জাস্থান, আরেকটি দুই চোয়ালের মধ্যখানে অবস্থিত বস্তু অর্থাৎ জিহবা, তার জান্নাতের ব্যাপারে আমি রাসূল জিম্মাদার হবো।’ এর মাধ্যমে আমরা উপলব্ধি করতে পারি জিহবা দ্বারা কাটা দাগ বা ক্ষতস্থান সহজে শুকিয়ে যায় না, এর প্রভাব সুদূরপ্রসারী। তাই আমাদের উচিত জিহবাকে সংযত রাখা। সতর্কতার সাথে কথা বলা যাতে আরেক মানুষ কষ্ট না পায়।

প্রিয় বন্ধুরা, এসো আমরা আমাদের জিহ্বাকে সংযত রেখে এমনভাবে কথা বলি যাতে মানুষ কোন কষ্ট না পায়।

গ্রন্থনায় : আবদুল কুদ্দুস মাখন

SHARE

Leave a Reply