হরিণ ছানা

হরিণ ছানা

তোমাদের গল্প মাছুমা সুলতানা হাসনাহেনা ডিসেম্বর ২০২৩

ঘন জঙ্গলে আচ্ছাদিত চারপাশ। তার পাশে ছোট্ট কুঠিরে বাস করে সোহা নামে এক ছোট্ট মেয়ে ও তার বাবা মা।

বনে সারা দিন আনন্দ করে ঘুরে বেড়ায় সে। বেশি দূরে যায় না, মায়ের নিষেধ আছে। তার বাবা একজন কাঠুরিয়া। তিনি বাজার থেকে বিভিন্ন ফুলের মালা নিয়ে সোহাকে দেন। এতে খুব খুশি হয়ে আনন্দে বাবাকে জড়িয়ে ধরে সোহা।

প্রতিদিনের মতো আজো স্বচ্ছ নীল আকাশ। রোদের তেমন উত্তাপ নেই। সোহা খেলতে চলে গেলো বন্ধুদের সাথে, ফুল, পাখি, পরী ও প্রজাপতিরা তার প্রিয় বন্ধু। সবুজ ঘাসের চাদরের ওপর গল্পের আসরে মেতে ওঠে তারা। পাখি ও পরী বন্ধু সোহাকে নানারকম ফল সংগ্রহ করে এনে দেয়। এভাবেই আনন্দের মাখামাখিতে কেটে যায় সোহার দিনগুলো।

এক মিষ্টি সকালে সূর্য কেবল উঁকি দেওয়া শুরু করেছে। পাখিরা গান গাইতে শুরু করেছে।

কিছুক্ষণ পর এক হরিণ ছানা কাঁদতে কাঁদতে দৌড়ে তার দিকেই আসতে থাকে। সোহা কাছে গিয়ে লক্ষ করল গুরুতর আঘাত পেয়ে পা দিয়ে অঝরে রক্ত ঝরছে তার। সে দ্রুত হরিণ ছানাটি তার মায়ের কাছে নিয়ে যায়। মা দ্রুত তার ক্ষতস্থানে যত্ন সহকারে হলুদ বাটা আর কিছু ঔষধি পাতার প্রলেপ দিয়ে ব্যান্ডেজ করে দেয়। এতে কিছুটা শান্ত হয় হরিণ ছানাটি।

সোহা আনমনে ভাবতে থাকে, হরিণ ছানাটি সুস্থ হলে তাকে নিয়ে যাবে তার বন্ধুমহলে। সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেবে নিশ্চয় তার বন্ধুরা অনেক খুশি হবে ছানাটিকে পেয়ে। সোহা ছানাটির পিঠে হাত বুলিয়ে দেয়, নাম রাখে সাথী।

সোহা সাথীকে নিয়ে খুব ব্যস্ত সময় কাটায়। এ জন্য সারাদিন তার বন্ধু মহলে যাওয়া হয় না, খেলা হয় না। তার বন্ধুরা অভিমান করে। একদিন সোহা তাদের বুঝিয়ে বলে, সবাই যেন সাথীর জন্য দোয়া করে, যেন সে দ্রুত সুস্থ হয়ে তাদের খেলার একজন সাথী হতে পারে।

সোহা সাথীর জন্য কচি ঘাস সংগ্রহ করে নিয়ে আসে, পাখিরাও মাঝে মাঝে বিভিন্ন খাবার নিয়ে আসে। সাথী আনন্দে পেট পুরে খেয়ে নেয়। সারাদিন একসাথে খেলাধুলা করে কুঠিরের পাশেই।  

এখন হরিণ ছানাটি অনেকটা সুস্থ আর বেশ নাদুস নুদুস হয়ে উঠেছে। এ খবর শুনে বনের সব পশুপাখি তাকে দেখতে আসে। সোহা তাদের দেখে খুশিতে তাদের আপ্যায়ন করতে থাকে, সাথী লাফাতে শুরু করে বাইরে তাদের সাথে খেলতে যাওয়ার জন্য। মাকে বলে সাথীকে নিয়ে সোহা ছুটে চলে যায় তার সব বন্ধুর সাথে। সাথী ভীষণ আনন্দিত হয় তাদের পেয়ে। তারা খেলছে আর দুষ্টুমি করছে প্রজাপতির সাথে। সব পশু পাখি সাথীকে তাদের মাঝে পেয়ে খুব আনন্দিত হয়।

দূরে মা দাঁড়িয়ে তাদের দুষ্টুমি দেখে আনমনে হেসে ফেলে বলে, পাগলিটা যে, ছোট্ট সোনামনি!

আপনার মন্তাব্য লিখুন
অনলাইনে কিশোরকন্ঠ অর্ডার করুন
লেখকের আরও লেখা

সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

আরও পড়ুন...

CART 0

আপনার প্রোডাক্ট সমূহ