লোক দেখানো ইবাদত

লোক দেখানো ইবাদত

কুরআনের আলো জুলাই ২০১১

“হযরত জুন্দব (রা) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি তার কৃতকর্মের সুনামের জন্য লোকসমাজে ইচ্ছাপূর্বক প্রচার করে বেড়ায়, আল্লাহ তাআলাও (কিয়ামতের দিন) তার কৃতকর্মের প্রকৃত উদ্দেশ্যের কথা লোকদের জানিয়ে ও শুনিয়ে দেবেন। আর যে ব্যক্তি লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে ও প্রশংসা লাভের উদ্দেশ্যে কোন সৎ কাজ করবে, আল্লাহও (কিয়ামতের দিন) তার প্রকৃত উদ্দেশ্যের কথা লোকদের মাঝে প্রকাশ করে দেবেন।" (সহীহ বুখারী)

সুপ্রিয় বন্ধুরা

আল্লাহপাক মানুষকে সৃষ্টি করেছেন তাঁর ইবাদত করার জন্য। এই ইবাদতের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে তাঁর সন্তুষ্টি অর্জন করা। কিন্তু কখনো কখনো আমাদের ইবাদত হয়ে যায় লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে। লোক দেখানো ইবাদত আল্লাহর কাছে কবুল হয় না। বরং ইবাদতের প্রকৃত উদ্দেশ্যই ব্যাহত হয়। কারণ ইবাদত করার মূল উদ্দেশ্য হবে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা। এখানে সন্তুষ্টি লাভের পরিবর্তে গুনাহ হওয়ার আশঙ্কাই বেশি থাকে। দৃষ্টান্তস্বরূপ নামাজের কথাই ধরা যাক। মুসলমান হিসেবে প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা আমাদের জন্য ফরজ। কিন্তু আমাদের সমাজে আমরা দেখতে পাই কেউ কেউ প্রতিদিনের নামাজের পরিবর্তে সপ্তাহে একদিন জুমার নামাজে যায়। যারা এ ধরনের নিয়মিত মুসল্লির পরিবর্তে সাপ্তাহিক মুসল্লি হিসেবে পরিচিত তাদেরকে লোক দেখানো মুসল্লি বলে। আর এ ধরনের লোক দেখানো ইবাদতকারীদের ব্যাপারে কুরআনে বলা হয়েছে, “আফসোস সে সকল মুসল্লির জন্য, যারা তাদের নামাজের ব্যাপারে উদাসীন।” লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে যারা নামাজ পড়ে আল্লাহ তায়ালা তাদের জন্য আফসোস করেছেন।

আর যারা সমাজের লোকেরা বড় বলবে এই উদ্দেশ্যে সৎ কাজ করে, দান সদকা করে কিংবা মানুষের কাছ থেকে প্রশংসা পাওয়ার আশায় নিজেকে লোক সম্মুখে পেশ করে বা কর্ম করে বেড়ায়, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তায়ালা তাদের কৃতকর্মের প্রকৃত উদ্দেশ্য লোক সম্মুখে জানিয়ে দেবেন। মানুষের অন্তরের সকল খবর আল্লাহপাক অবহিত। কোনটি নিছক আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে করা আর কোনটি লোক দেখানোর জন্য করা তা তিনি সম্যক অবহিত। তাই আমাদের উচিত কোন মানুষের প্রশংসা পাওয়ার আশায় কিংবা সমাজের লোকেরা ভাল বলবে এই আশায় কোন কাজ না করে শুধুমাত্র আল্লাহপাকের সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে করা।

প্রিয় বন্ধুরা

এসো আমরা লোক দেখানোর জন্য কোন কাজ না করে একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সৎ কাজ করি।

গ্রন্থনায় : আবদুল কুদ্দুস মাখন

আপনার মন্তাব্য লিখুন
অনলাইনে কিশোরকন্ঠ অর্ডার করুন
লেখকের আরও লেখা

সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

আরও পড়ুন...

CART 0

আপনার প্রোডাক্ট সমূহ