লজ্জার সৌন্দর্য
কুরআনের আলো ডিসেম্বর ২০১৭
লাজুক-লতা। না, এটা কোনো মেয়ের নাম নয়। ছেলের নাম। তার এ নাম তার বাবা-মা রাখেনি। সে নিজেও রাখেনি। কিন্তু অনেকে তাকে এ নামেই বেশি চেনে। এ নামেই ডাকে। কেউ ডাকে ভালোবেসে। গভীর ভালোবেসে! কেউ টিপ্পনী কেটে। ছেলেটি আর কেউ নয়, হাসিব। চোখে-মুখে তার নরম আলোর ঝলকানি। প্রশান্ত চেহারা! নিচু আওয়াজে ছোট ছোট বাক্যে কথা বলে। উঁচু পাহাড় থেকে যেভাবে নির্ঝরিণী বয়ে চলে, সেভাবে! শীতল বেগে। তার পরিমিত হাসিতে যেন হাসনাহেনা ফুল ফোটে। চোখ দুটো সবসময় নিম্নগামী। কারো চোখে চোখ রেখে কথা বলতে পারে না সে। বিশেষ করে বড়দের সাথে। লজ্জার আবরণে যেন সে পা থেকে মাথা পর্যন্ত আবৃত হয়ে আছে! লজ্জাবতী গাছের মতো। এ নিয়ে তাকে অনেকের অনেক কথা শুনতে হয়। ‘লজ্জা থাকা ভালো। তবে বেশি লজ্জা ভালো নয়’- এ জাতীয় কথা! এমনকি, মা-বাবাও বলেন। এখন সে-ই বা কী করবে। আল্লাহ তো তাকে এভাবেই বানিয়েছেন! বিষয়টা ছোট-চাচার চোখ এড়ায়নি। চাচা তাকে অনেক আদর করেন। ভালোবাসেন। পছন্দ করেন তার সবকিছু। তিনি হাসিবের মা ও বাবাকে ডেকে বললেন, আজ একটা গল্প শোনাবো। হাদিসের গল্প! “একবার মহানবী (সা) একজন আনসারি সাহাবির পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি তখন তার ভাইকে উপদেশ দিচ্ছিলেন লজ্জা কমানোর জন্য। তখন মহানবী (সা) বললেন, তাকে ছেড়ে দাও। কারণ লজ্জা ঈমানের অংশ!” (বুখারি-মুসলিম)। চাচা আরও বললেন, লজ্জা মানুষের অলংকার। জীবনের সৌন্দর্য। যে যত বেশি লাজুক, সে তত বেশি সুন্দর মানুষ! কারণ, সে কখনো অন্যায় করতে পারে না। পাপ করতেও সে লজ্জা পায়। এবার মনে হলো, মা-বাবাই কিছুটা লজ্জা পেলেন। আর হাসিবও প্রাণ ফিরে পেল যেন। আজ সে নতুন করে নিজেকে চিনলো। ভাবল, তাকে হতে হবে আরও লজ্জাশীল। আরও সুন্দর! বিলাল হোসাইন নূরী
আরও পড়ুন...