মোহাম্মদ আলী ইসলামের পতাকাবাহী  - মোহাম্মদ হাসান শরীফ

মোহাম্মদ আলী ইসলামের পতাকাবাহী - মোহাম্মদ হাসান শরীফ

খেলার চমক অক্টোবর ২০১৭

‘সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ’- এটাই তার কৃতিত্ব বোঝানোর জন্য সবচেয়ে সহজ বাক্য। তার রেকর্ড তাকে মুষ্টিযুদ্ধের ইতিহাসে সর্বকালের সেরা পারফরমার হিসেবে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করবে। সামর্থ্যরে সর্বোচ্চ অবস্থায় থাকার সময়ে তিনিই ছিলেন বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত ব্যক্তি। লড়াইয়ে তার দক্ষতা আর অবিশ্বাস্য আত্মবিশ্বাস তাকে সত্যিকার অর্থেই ‘সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ’ করেছে।

মুষ্টিযুদ্ধের রিংয়ে প্রজাপতির মতো নৃত্য করে এবং মৌমাছির মতো হুল ফুটিয়ে তিনি তার প্রতিদ্বন্দ্বীদের পর্যুদস্ত করতেন। তিন তিনবার হেভিওয়েট শিরোপা জয় করে তিনি বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী মানবে পরিণত হয়েছিলেন। ১৯৬৪ সালে সনি লিস্টনকে হারিয়ে তিনি নিজেই ঘোষণা করেছিলেন, ‘আমিই বিশ্বের সম্রাট’। তবে তার সেদিনের সাম্রাজ্য শুধুমাত্র হেভিওয়েট রিংয়ের মধ্যেই সীমিত ছিল। আজ তিনি মুষ্টিযুদ্ধেই নয়, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ক্রীড়াবিদদের একজন। রিংয়ের ভেতরে এবং বাইরে তিনি যে কৃতিত্ব স্থাপন করেছেন, তা তার আগে বা তার পরেও দেখা যায়নি। হয়তো কোনো দিনই দেখা যাবে না। এমনকি ক্যারিয়ারের সবচেয়ে নিম্ন অবস্থায় থাকার সময়ও মানুষ হিসেবে তার মর্যাদা, তার মাহাত্ম্য ফুটে উঠত। শোম্যান, বিদ্রোহী, মুসলমান, মানবাধিকারকর্মী, কবি- সব গুণেই তাকে অভিহিত করা যায়। জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে তিনি বিস্ময়কর ব্যক্তি বা মহামানব। এমনকি পৃথিবীর অনেক স্থান- যেখানে মুষ্টিযুদ্ধের কোনোই জনপ্রিয়তা নেই, সেখানেও তিনি মুকুটহীন সম্রাট। একজন মুষ্টিযোদ্ধার নামও যদি কেউ জানে, তবে তিনি হলেন মোহাম্মদ আলী।
সেরা ফর্মের সময়ে তিনি ছিলেন এক কথায় অপ্রতিরোধ্য। তবে তার লড়াই দেখতে যারা আসত, তিনি তাদের অর্থ উসুল করিয়ে দিতেন। চমৎকার আত্মরক্ষা কৌশল, বহু দূর পৌঁছতে পারার সক্ষমতা, রহস্যময় সময়জ্ঞান এবং অসাধারণ পূর্বাভাস নিয়ে গড়ে উঠেছিল তার দুর্দান্ত দক্ষতা। তার ঘুষি মারার ক্ষমতাসহ যে সামান্য কিছু ঘাটতি ছিল, তা পুষিয়ে দিয়েছিল গতিময় ফুটওয়ার্ক এবং রিংকে ব্যবহারের সক্ষমতা।
তিনি প্রায়ই দাবি করতেন, ‘আমিই সর্বশ্রেষ্ঠ’। আর এই দাবি প্রমাণও করেছেন তিনি ভালোভাবে। আর তাকে ঘিরে থাকা কিংবদন্তিগুলো কেন হয়েছে, তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন তিনি। তার মনোমুগ্ধকর দৈহিক গড়ন এবং তারকা গুণাবলি তাকে পরিণত করেছিল, ‘সুন্দরতম’ হিসেবে। আর তার চাতুর্যপূর্ণ কথাবার্তা তাকে পরিণত করে ‘দক্ষতম’। তিনি ছিলেন সর্বোচ্চ মাত্রায় আত্মবিশ্বাসী। নিজের শ্রেষ্ঠত্ব সম্পর্কে বিন্দুমাত্র সন্দেহ ছিল না। তিনি তার জীবনীকার টমাস হাউসারকে প্রশ্ন করেছিলেন, ‘কখনো কি এমন কোনো যোদ্ধা ছিল যে কবিতা লিখত, রাউন্ডের ভবিষ্যদ্বাণী করতো, সবাইকে হারাত, মানুষকে হাসাত, মানুষকে কাঁদাত এবং আমার মতো এত লম্বা ও এত সুন্দর ছিল? পৃথিবীর ইতিহাসের সূচনা থেকে কখনো আমার মতো কোনো যোদ্ধার আবির্ভাব ঘটেনি।’ আলী একবার তার এক প্রতিদ্বন্দ্বীকে হুঁশিয়ার করে বলেছিলেন, ‘তুমি যদি আমাকে হারানোর স্বপ্ন দেখে থাকো, তবে ঘুম থেকে উঠে ক্ষমা চাও।’ আর একবার তিনি মোহাম্মদ আলী নামক মুষ্টিযোদ্ধাকে চিনিয়ে দেয়ার জন্য যথার্থই নির্মম হয়েছিলেন। ১৯৬৭ সালে শিরোপার দাবিদার আরনি টারেল বলেছিলেন তিনি তার প্রতিদ্বন্দ্বীর নতুন নামের স্বীকৃতি দেবেন না। আলী সেবার ইচ্ছে করেই লড়াইকে ১৫ রাউন্ড পর্যন্ত টেনে নিয়ে গিয়েছিলেন। আর বারবার অসহায় টারেলকে ঘুষিতে ঘুষিতে কাঁপিয়ে দিয়ে জানতে চেয়েছিলেন, ‘বল, আমার নাম কী? বল আমার নাম কী?’
মোহাম্মদ আলী নামে তিনি জন্মগ্রহণ করেননি। ১৯৪২ সালের ১৭ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের কেন্টাকির লুইসভিলে জন্মগ্রহণ করেন, তখন তার নাম ছিল ক্যাসিয়াস মারসেলাস ক্লে। ক্যাসিয়াস (সিনিয়র) এবং ওডেসার প্রথম ছেলে ছিলেন তিনি। তার পিতা ছিলেন পেইন্টার। মোহাম্মদ আলী ইসলাম গ্রহণের পর তার ছোট ভাই রুড্লফও মুসলমান হন। তার নাম হয় রহমান আলী। আলীর মেয়ে লায়লা আলী পরবর্তীকালে মুষ্টিযুদ্ধে সুনাম অর্জন করেছিলেন।
সনি লিস্টনকে হারিয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়ে তিনি তার শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতি পান। এর দুই দিন পর বিশ্ব অবাক হয়ে আরেকটি খবর শুনল। লিস্টনকে হারানোর চেয়েও এটি ছিল চাঞ্চল্যকর। খবরটি হলো তিনি ইসলাম ধর্মগ্রহণ করেছেন এবং নতুন নাম নিয়েছেন মোহাম্মদ আলী। নতুন এক কিংবদন্তির জন্ম হলো। আলী তার ক্যাসিয়াস ক্লে নামকে অভিহিত করলেন, ‘দাসত্ব নাম’ হিসেবে। বিশ্বক্রীড়াঙ্গনে একটি স্থায়ী পরিবর্তনের সূচনা হলো এভাবেই। প্রথমে তিনি এলিজা মোহাম্মদ ও ম্যালকম এক্সের নেতৃত্বাধীন ‘ন্যাশন অব ইসলামের’ সাথে জড়িয়ে ছিলেন। তবে পরবর্তীকালে তিনি তাদের সংশ্রব ত্যাগ করেন। তিনি কুরআন অধ্যয়ন করতে থাকেন, সুন্নি ইসলামের অনুসারীতে পরিণত হন।
তার আরেকটি কৃতিত্ব হলো আফ্রিকা আর মুসলিম বিশ্বের দরজা খোলা। তার আফ্রিকা সফর ছিল একটি অনন্যসাধারণ ঘটনা। এই প্রথম আমেরিকার কোনো ক্রীড়াবিদ আফ্রিকা নামে কোনো মহাদেশের কথা সরাসরি স্বীকার করলেন। সারা বিশ্বে যখন আধিপত্যবাদের শিকল ছেঁড়ার আন্দোলন চলছে, তখন তাদের মাঝে তার উপস্থিতি ছিল বিরাট ঘটনা। আমেরিকার মিডিয়া তার এই সফরকে ঢেকে রাখতে চেষ্টার ত্রুটি করেনি। ঔপনিবেশিক শাসনের জাঁতাকল থেকে সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত আফ্রিকান দেশগুলোতে তার আগমন ছিল একটি অভূতপূর্ব বিষয়। তারা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন এবং সেইসাথে তাদের মতো কালো এক মুসলমানকে নিজেদের মধ্যে পেল। অধিকন্তু তিনি আফ্রিকায় তার পূর্বপুরুষের অস্তিত্বের কথাও জানালেন। তিনি ঘোষণা করলেন, ‘মুষ্টিযুদ্ধ রক্তপিপাসু কিছু লোকের সন্তুষ্টি ছাড়া কিছুই নয়। আমি আর ক্যাসিয়াস ক্লে নই। কেন্টাকির এক নিগ্রো হিসেবে আমি বিশ্বের, কৃষ্ণাঙ্গ বিশ্বের। পাকিস্তান, আলজেরিয়া, ইথিওপিয়ায় সব জায়গায় আমার বাড়ি আছে। টাকার চেয়ে এটা অনেক বেশি।’ ঘানায় প্রেসিডেন্ট এবং জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনের নেতা কোয়ামে এনক্রুমা তাকে বরণ করে নেন। এটাই ছিল কোনো রাষ্ট্রনেতার সাথে তার প্রথম কোলাকুলি। মার্কিন কোনো রাষ্ট্রপ্রধানের আলীর সাথে হ্যান্ডশেক করতে আরো এক দশক লেগেছিল।
আলী আসলে রিংয়ের বাইরেই সবচেয়ে বড় লড়াইয়ে লড়েছেন। যে দেশে তিনি থাকেন, সে দেশের প্রভুদের বিরুদ্ধেই তিনি আন্দোলন করেছেন। ১৯৬৬ সালে ভিয়েতনাম যুদ্ধের বিরোধিতা করা সামান্য কোনো ঘটনা ছিল না। ভিয়েতনামে মার্কিন বাহিনীর হয়ে যুদ্ধ করার জন্য তাকে সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে বলা হলো। তিনি ঘোষণা করেন, “তারা কেন আমাকে ইউনিফর্ম পরে বাড়ি থেকে এক হাজার মাইল দূরে যেতে বলবে, বাদামি লোকদের ওপর বোমা ও বুলেট ফেলতে বলবে যখন লুইসভিলে নিগ্রো মানুষদের সাথে কুকুরের মতো আচরণ করা হচ্ছে? ভিয়েতকংয়ের সাথে আমার কোনো বিবাদ নেই। কোনো ভিয়েতনামি আমাকে কখনো ‘নিগার’ বলে ডাকেনি।” তিনি অস্বীকার করলেন সরাসরি। এমনকি তিনি যদি সেদিন চুপচাপ থাকতেন, তবুও তার ওপর এতো চাপ আসত না। কিন্তু আলী তা করলেন না। আলীকে প্রথমে নিজ দেশে নিষিদ্ধ করা হলো। তিনি টরন্টো, ফ্রাংকফ্রুট, লন্ডনে (দুবার) শিরোপা রক্ষা করলেন। এতে তার লাভই হলো। তার ফ্যানের সংখ্যা বহির্বিশ্বে বাড়তেই থাকলো। কিন্তু দেশে তিনি এমন সমস্যায় পড়লেন, যা তার আগে কোনো ক্রীড়াবিদ পড়েনি। মার্কিন আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আমেরিকান হিসেবে তার অবস্থান পরাশক্তিটির জন্য ছিল মহা অস্বস্তিকর ব্যাপার। এক কৃষ্ণাঙ্গ মুসলিম বিশ্বের অন্যতম পরাক্রমশালী, শ্বেতাঙ্গ এবং খ্রিস্টান দেশটির সমালোচনা করবে, আগ্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করবে, তা কোনোমতেই সহ্য করা যায় না। তাই সামরিক বাহিনী তাকে যুদ্ধে পাঠাতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হলো। আইনজীবীরা তাকে কারারুদ্ধ করার ফন্দি আঁটলো। মিডিয়া তাকে তরুণ আমেরিকানদের জন্য সবচেয়ে কদর্য উদাহরণ হিসেবে চিত্রিত করলো। তাকে তার অবস্থান থেকে সরিয়ে আনার জন্য অনেক কিছুই করা হলো। অবশ্য ফাঁকে ফাঁকে লোভনীয় নানা প্রস্তাব দিয়ে তাকে নিজেদের দলে ভেড়ানোর চেষ্টাও কম করা হয়নি। এমনকি সামরিক বাহিনী থেকে এমন প্রস্তাবও দেয়া হয়েছিল, আলী যদি কেবল নাম লেখান, তবেই যথেষ্ট। তিনি ইউরোপ ভ্রমণ করতে পারবেন, প্রদর্শনী লড়াইয়ে নামতে পারবেন। এমনকি চাইলে পেশাদার লড়াইয়ে নামতে পারবেন। কিংবা অসুস্থতার ভান করে দুই কুলই রক্ষা করতে পারেন। কিন্তু আলীর সেই এক কথা, ‘যুদ্ধ করা আমার জন্য কোনো ব্যাপার নয়। আমার বিবেক সায় দিলে আমি সহজেই রণাঙ্গনে যেতে পারতাম।’ তিনি বললেন, ‘তারা যখন লুইসভিলের তথাকথিত নিগ্রোদের সাথে কুকুরের মতো আচরণ করছে, তখন কেন তারা আমাকে ভিয়েতনামের বাদামি মানুষের বিরুদ্ধে বোমা আর বুলেট বর্ষণ করতে বলছে? আমি আমার বিশ্বাস আর অবস্থানে অটল থেকে কিছুই হারাবো না। আমি ৪০০ বছর কারাগারে থাকতে পারি।’ তার এই প্রত্যয়ে তার নিজের ভবিষ্যৎই ফ্যাকাসে বলে মনে হলো। তিনি শিরোপা হারালেন, কারারুদ্ধ হলেন, কোটি কোটি ডলার থেকে বঞ্চিত হলেন। মনে হলো, আলী একটি বিস্মৃত নাম। কিন্তু তা তো হওয়ার নয়। পরে আলীর কথাই ঠিক বলে প্রমাণিত হয়েছে। ভিয়েতনামে মার্কিন আগ্রাসন যে ভুল ছিল, তা স্বীকার করে নেয়া হয়েছে। আর তিনি ফিরেছেন রাজসিকভাবে। এটা যে কত বড় জয়, তা এককথায় কি প্রকাশ করা যায়?
অন্য দিকে ফ্রেজিয়ার এবং ফোরম্যানের বিরুদ্ধে তার জয় কেবল মুষ্টিযুদ্ধেই সীমিত থাকেনি। এসব লড়াইকে স্রেফ মুষ্টিযুদ্ধ বিবেচনা করা হলে ভুল হবে। চামড়ায় কালো হলেও এই দু’জন ছিলেন আসলে শ্বেতাঙ্গ মার্কিন সরকারের, খ্রিস্টান ধর্মের প্রতিনিধি। ভিয়েতনামে আগ্রাসনের প্রতিবাদ জানানোর কারণে আলীর শিরোপা কেড়ে নিয়ে দেয়া হয়েছিল ফ্রেজিয়ারকে। তাকে তখন মার্কিন সরকারের অনুকূলে প্রচারণা চালাতে দেখা গেছে। অধিকন্তু তিনি ছিলেন একজন নিষ্ঠাবান খ্রিস্টান। ১৯৬৮ সালে মেক্সিকো অলিম্পিকে মার্কিন বর্ণবাদী নীতির বিরুদ্ধে পদকজয়ী দুই অ্যাথলেটিক- টমি স্মিথ ও জন কার্লোস কালো দাস্তানা পরিধান করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন, তখন মুষ্টিযুদ্ধে স্বর্ণজয়ী ফোরম্যান এফবিআইয়ের পরামর্শক্রমে মার্কিন পতাকা দুলিয়েছেন। তা-ই এ দু’জনের বিরুদ্ধে তার জয় ছিল প্রচলিত এবং পরাক্রমশালী প্রতিভূর বিরুদ্ধেই বিজয়। কিনসাসায় ফোরম্যানের বিরুদ্ধে লড়ার আগে মোহাম্মদ আলী টিভি ক্যামেরার সামনে বলেছিলেন, ‘আমি আল্লাহর জন্য এবং আমার জনগণের জন্য লড়ছি। আমি টাকার জন্য বা খ্যাতির জন্য লড়ছি না। আমি আমার জন্য লড়াই করছি না। আমি কৃষ্ণাঙ্গ জনগণের উন্নতির জন্য, যেসব কৃষ্ণাঙ্গের ভবিষ্যৎ নেই, যেসব কৃষ্ণাঙ্গ মদ আর মাদকাসক্তিতে ডুবে রয়েছে, তাদের জন্য লড়ছি। আমি আল্লাহর হয়ে কাজ করছি।’ এটিও একটি সহজ কোনো ঘোষণা ছিল না। তিন আরো বলেন, ‘এই ফোরম্যান খ্রিস্টানত্ব, আমেরিকা এবং সেই পতাকার প্রতিনিধিত্ব করছে, আমি তাকে ছেড়ে দেবো না। সে কুকুরের মাংসের প্রতিনিধিত্ব করছে।’
তিনি তার ঘোষণা বাস্তবায়ন করতে পেরেছিলেন। আর পেরেছিলেন বলেই তাকে বরণ করে নিতে বাধ্য হয়েছে সবাই। যে আলীকে একদিন যে শ্বেতাঙ্গ রেস্তোরাঁয় খেতে দেয়া হয়নি, সেখানে তিনি পরম আকাক্সিক্ষত ব্যক্তি। যেদেশ তাকে আস্তাকুঁড়ে ফেলে দিতে চেয়েছিল, সেই আমেরিকাতেই আলী সর্বোচ্চ সম্মান পেয়েছেন। যে পদকটি তিনি ছুঁড়ে ফেলেছিলেন একদিন, সেটি আবার নতুন করে বানিয়ে দেয়া হয়েছে। সাদা কালো, ধর্ম, বর্ণ-নির্বিশেষে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নাম হলো আলী।
আলীর মুষ্টিযুদ্ধ জীবনকে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়। প্রথমটিকে ধরা যেতে পারে মুষ্টিযুদ্ধে অংশগ্রহণ থেকে শুরু করে অলিম্পিক স্বর্ণলাভ এবং হেভিওয়েট শিরোপা বিজয়। পরের ধাপটি হলো এক মানবতাবাদী নেতার আত্মপ্রকাশ। এই পর্যায়ে তিনি আফ্রিকা জয় করেছেন, মূলে প্রত্যাবর্তন করেছেন, যুদ্ধবিরোধী ভূমিকা পালন করেছেন তথা সর্বগ্রাসী শক্তির বিরুদ্ধে লড়েছেন। তারপর তৃতীয় পর্যায়ে তিনি হারানো সম্মান পুনরুদ্ধার করেছেন, এক নতুন যোদ্ধা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন। আর সব শেষে তিনি বিশ্ব নাগরিকের দায়িত্ব পালন করেছেন। হ
                        
আপনার মন্তাব্য লিখুন
অনলাইনে কিশোরকন্ঠ অর্ডার করুন
লেখকের আরও লেখা

সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

আরও পড়ুন...

CART 0

আপনার প্রোডাক্ট সমূহ