মশার উপমা
কুরআনের আলো অক্টোবর ২০১৯
বিকেলে মসজিদ থেকে বাসায় ফিরেই বাবা বললেন, চলো- আজ আমরা মশা নিয়ে গল্প করবো। বাবার কথা শুনে হেসে উঠলো সবাই। সামীরা, নাওরীন ও তাহসীন। এমনকি আম্মুও যোগ দিলেন সাথে। বাবা তাদের হাসির অর্থ বুঝতে পারলেন। তিনি বললেন, তোমরা মশাকে যতটা তুচ্ছ ভাবছো, আসলে সে অতটা তুচ্ছ নয়। এ কারণে, কুরআনেও আল্লাহ মশার কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আল্লাহ মশা অথবা তারও চেয়ে ক্ষুদ্র কিছুর উপমা দিতে লজ্জাবোধ করেন না।’ (সূরা আল-বাকারাহ : ২৬)
তাহসীন বললো, তাহলে শুরু করো বাবা। বাবা বললেন, মশা হচ্ছে এক ধরনের ছোট মাছি প্রজাতির পতঙ্গ। কিছু প্রজাতির নারী মশা রক্ত শোষণ করে এবং মারাত্মক সংক্রামক রোগ ছড়ায়। যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- অ্যানোফিলিস, কিউলেক্স, এডিস, হেমাগোগাস প্রভৃতি। এই দেখো না, আমাদের দেশে এখন ডেঙ্গুর ছড়াছড়ি!
নাওরীন বললো, সত্যিই বলেছো বাবা। আমার এক বান্ধবী বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ। তার ডেঙ্গু ধরা পড়েছে। বাবা বললেন, হ্যাঁ। এডিস মশার কামড়ে ডেঙ্গু, পীতজ্বর, চিকুনগুনিয়া প্রভৃতি রোগ হয়। এ মশা কেবল দিনের বেলা কামড়ায়। সাধারণত খুব ভোরে, সন্ধ্যার আগে ও সন্ধ্যায়। এডিস মশা দুই প্রজাতির। এডিস ইজিপটাই ও এডিস অ্যালবোপিকটাস। অ্যালবোপিকটাস সাধারণত গ্রামে থাকে, তবে শহরেও থাকতে পারে। আর ইজিপটাই থাকে শহরে।
তাহসীন বললো, এডিস মশার কামড় থেকে বাঁচার কি পথ নেই? বাবা বললেন, এ জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সতর্কতা ও সচেতনতা। আমাদের চারপাশ রাখতে হবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। এডিস এমন জায়গায় থাকে, যেখানে বাতাস কম ও তাপমাত্রা বেশি। যেসব জায়গায় এডিস মশা বেশি পাওয়া গেছে, সেগুলো হচ্ছে- পুরনো টায়ার, ঢাকনাবিহীন চৌবাচ্চা, ড্রাম, জলাধার, পোষা প্রাণীর পাত্র, ফেলে রাখা বোতল, ফুলের টব, পরিত্যক্ত খেলনা, ছাদ ইত্যাদি। এমনকি এরা বিমান, রেল বা যেকোনো গণপরিবহনে চড়ে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায়ও চলে যেতে পারে।
বাবা বললেন, মশার চেয়ে প্রাণনাশক প্রাণী আর নেই। প্রতি বছর পৃথিবীতে লাখ লাখ মানুষ মশাবাহিত রোগে মারা যায়। চলো, আমরা নিজেরাও সতর্ক হই। অন্যদেরও সতর্ক করি। সবাই বলল, ইনশাআল্লাহ।
বিলাল হোসাইন নূরী
আরও পড়ুন...