বিপদের বন্ধু

বিপদের বন্ধু

তোমাদের গল্প ইফতেখার চৌধুরী সেপ্টেম্বর ২০২৩

শিমুল গাছের মগডালে সারস দম্পতির বাসা। বাসায় তাদের তিনটি ডিম। দুইজনে মিলে ডিমগুলো পালা করে পাহারা দেয়। একদিন ডিম ফুটে বেরিয়ে আসে তিনটি ফুটফুটে ছানা। সারস দম্পতির সে কী খুশি। দিনের আলো ফুটতেই ছানাগুলো কিচিরমিচির শুরু করে দেয়। পালাক্রমে মুখে করে কেঁচো এনে বাচ্চাদের খাইয়ে দেয় তাদের বাবা-মা। ধীরে ধীরে ছানাগুলো বড়ো হতে থাকে।

একদিন কোথা থেকে এলো এক শিকারি। দুরবিনে চোখ রাখতেই তার চোখ গিয়ে পড়ল শিমুল গাছের মগডালে। সাদা রঙের সুন্দর ছানাদের দেখতে পেয়ে শিকারি গাছে উঠতে শুরু করে। পাশের আম গাছেই বাস করত এক মৌমাছির ঝাঁক। উপায় না পেয়ে বাবা সারস সাহায্যের জন্য ছুটে যায় মৌমাছিদের রানিমার কাছে। কাকুতি মিনতি করে বলে, ‘আমার ছানাদের ধরতে এক শিকারি এসেছে। তোমরা কি আমার ছানাদের বাঁচাতে সাহায্য করবে?’ উত্তরে রানিমা বলে, ‘আমরা তো তোমার প্রতিবেশী। আমরা অবশ্যই তোমাকে সাহায্য করব।’

রানি মৌমাছি ছুঁচালো হুলওয়ালা সব মৌমাছিদের নিয়ে উড়ে আসে সারস দম্পতিকে সাহায্য করতে। ঐদিকে মা সারস ডানা ঝাপটে, ভয় দেখিয়ে প্রাণপণে চেষ্টা করছে তার ছানাদের শিকারির হাত থেকে বাঁচাতে। ঠিক তখনই মৌমাছির দল হামলে পড়ল শিকারির গায়ে। কেউ হুল ফোটাল পায়ে, কেউ হাতে, কেউ তো একেবারে নাকে-মুখে। শিকারির তখন পালাই পালাই দশা। জীবন বাঁচাতে শিকারি লাফিয়ে পড়ল গাছতলায়। মৌমাছিদের দল সেখানেও তাকে তাড়া করল। শেষে শিকারি নদীতে ঝাঁপ দিয়ে প্রাণ বাঁচাল। 

বিপদ কেটে যেতে সারস দম্পতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলে, ‘তোমাদের অনেক ধন্যবাদ ছানাদের রক্ষা করার জন্য। আমরা আজীবন তোমাদের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকব।’ উত্তরে মৌমাছিরা বলে, ‘যারা বিপদে এগিয়ে আসে তারাই তো প্রকৃত বন্ধু।

কিছুদিন পর সারস ছানাগুলো একে একে উড়তে শুরু করে। নিজেরাই শিখে যায় নিজেদের রক্ষা করতে। বাবা-মা আর ছানাগুলো মনের আনন্দে ডানা মেলে উড়াল দেয় দেশ থেকে দেশান্তরে; দূর অজানার পথে।

আপনার মন্তাব্য লিখুন
অনলাইনে কিশোরকন্ঠ অর্ডার করুন
লেখকের আরও লেখা

সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

আরও পড়ুন...

CART 0

আপনার প্রোডাক্ট সমূহ