নতুন দিনের দোলা

নতুন দিনের দোলা

প্রচ্ছদ রচনা ড. আ জ ম ওবায়েদুল্লাহ জানুয়ারি ২০২৪

২০২৩ সালটি সহসাই বিদায় নিল আমাদের কাছ থেকে। ২০২৪ একটি নতুন বছর এলো আমাদের পৃথিবীকে আলোকিত করে; আশায় ভরিয়ে, আনন্দের জোয়ার নিয়ে। আশা জাগানিয়া এই নতুন বছরকে নিয়েই আজ আমাদের কথা।

কিন্তু তার আগে আমাদের একটুখানি ভাবতে হবে বিদায়ী বছরটি নিয়ে। কী বার্তা দিয়ে গেল ২০২৩ সাল? ব্যক্তি, গোষ্ঠী, দেশ, জাতি আর মহান এই বিশ্ব কী পেল এর কাছ থেকে? এক নজরে তাকে দেখলেই আমরা নতুন বছরের পথ নির্ণয় করতে পারবো, স্বপ্নের জাল বুনতে পারবো।

পল্লীকবি জসীম উদ্দীনের রাখাল ছেলে কবিতাটি খুব মনে পড়ছে-

রাখাল ছেলে! রাখাল ছেলে! বারেক ফিরে চাও,

বাঁকা গাঁয়ের পথটি বেয়ে কোথায় চলে যাও?

ওই যে দেখ নীল-নোয়ান সবুজ ঘেরা গাঁ,

কলার পাতা দোলায় চামর শিশির ধোয়ায় পা,

সেথায় আছে ছোট্ট কুটির সোনার পাতায় ছাওয়া,

সাঁঝ-আকাশের ছড়িয়ে-পড়া আবীর রঙে নাওয়া,

সেই ঘরেতে একলা বসে ডাকছে আমার মা-

সেথায় যাব, ও ভাই এবার আমায় ছাড় না।

খেলা মোদের গান গাওয়া ভাই, খেলা-লাঙল-চষা,

সারাটা দিন খেলতে জানি, জানিই নেকো বসা।

গ্রাম বাংলার চিরায়ত জীবনের কী অপূর্ব বর্ণনা। আজও কি ডিসেম্বরের বার্ষিক পরীক্ষার পর মা, বাবা, ভাই-বোন সবাইকে নিয়ে আমরা সেই সবুজে ছাওয়া গ্রামের বাড়ি যাই? আজও কি ‘নিমন্ত্রণ’ এর আনন্দ আমাদেরকে রাঙিয়ে তোলে?


২০২৩ কী দিলো আমাদের?

২০২৩ সমগ্র বিশ্বকে উপহার দিলো প্রযুক্তির ক্ষেত্রে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI), চ্যাট জিপিটি (Chat Gpt), কাতারের মতো ছোট আরব দেশ দেখিয়ে দিলো বিশ্বকাপ ফুটবলের সফল আয়োজন করে, আমরা দেখলাম চমকে ভরা একটি বিশ্বকাপ ক্রিকেট। আবার ২০২৩ সালেই আমরা দেখলাম ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ। ইসরাইলিদের হাতে গাজা ভূখণ্ডে নৃশংস হত্যাকাণ্ড, বিশ্বময় মারণাস্ত্রের ঝনঝনানি, অসংখ্য শিশুর লাশের ওপর পরাশক্তির তাণ্ডব, এ বছরই আমরা দেখলাম তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্প।

এ রকম হাজারো ঘটনা দুর্ঘটনায় ভরা ছিল ২০২৩ সাল। বছরের শুরুতে অনেক আশাবাদ আর স্বপ্ন নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও তা অনেকটাই অধরা থেকে যায়। যাদের স্বপ্নপূরণ হয় নিঃসন্দেহে তারা সফল, খুশি ও উদ্বেলিত। আর যারা ব্যর্থ হয়েছে তাদের মন খারাপ, হতাশায় ডুবে আছে তারা।


সংসার সমুদ্র মাঝে দুঃখ তরঙ্গের খেলা

আশাই তার একমাত্র ভেলা


মানব সন্তান জন্মের পর থেকেই পৃথিবীর বুকে সবচেয়ে সুন্দরভাবে বাঁচতে চায়। যে শিশুটি জন্মের পর কিছুই জানে না, কিছুই বোঝে না সেও কিন্তু প্রাকৃতিক নিয়মে মাকে চেনে। হাত-পা ছুঁড়ে কান্না করে, মায়ের স্তনে মুখ লাগিয়ে চুষতে থাকে, শীতে কুঁকড়ায়, গরমে ঘেমে যায়।

জন্মের পর থেকে সে পলে পলে, ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে। ভাগ্যবান শিশুরা সব সুযোগ সুবিধা পায়। তাদের মা-বাবারা বাবুর আগমন উপলক্ষ্যে কত প্রস্তুতি গ্রহণ করে, কত সুযোগ সুবিধার আয়োজন করে। আর যারা যুদ্ধবিধ্বস্ত জনপদে থাকে, বস্তিতে বসবাস করে, জীবনের সাথে সংগ্রামে হেরে যায় যাদের মা-বাবা- তাদের কী অবস্থা হয় একবার ভেবে দেখো।

এই ভব সংসারে তাদের জীবন শুধু দুঃখ তরঙ্গের দোলায় দুলতে থাকে। একবার ভেবে দেখো- টানা ৭৪ বছর গাজার মানুষের কী অবস্থা! প্রতিটি দিন তাদেরকে লড়তে হয়, কাঁদতে হয়, মরতে হয়, পাথর হাতে হায়েনার বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয়।

যে বয়সে তারা খেলাধুলা করা, মজার মজার খাবার খাওয়া, বন্ধুদের সাথে ইউনিফর্ম পরে স্কুলে যাবার কথা- তখন তাদের এ অবস্থা কেন?

একইভাবে- দুনিয়ার দেশে দেশে গরিব, না খেয়ে থাকা, অপুষ্টিতে ভরা শিশু-কিশোরদের বিশাল মিছিল।  তাদের মা-বাবারা অনেক কষ্ট করে, খেটে খায় কিন্তু প্রয়োজনীয় আয় করতে পারে না।

এ যেন সেই গানের প্রতিধ্বনি-

তুমি কি দেখেছো কভু জীবনের পরাজয় 

দুঃখের দহনে করুণ রোদনে তিলে তিলে তার ক্ষয়।

এই যে দুঃখ কষ্টের জীবন, এই যে লড়াকু প্রয়াস- এটি চলছে, চলবেই। জীবন জীবনের নিয়মে বয়ে যাবে। অভাব, দারিদ্র্য, কষ্ট যেমন জীবনকে থামিয়ে দিতে চাইবে- তেমনি আবার একদল মানুষ ঘুরে দাঁড়াবে আশায় বুক বেঁধে। একবার ভাবো পৃথিবীর সেই মানুষগুলোর কথা যারা চরম অভাব ও দারিদ্র্যের মধ্যে জন্ম নিয়েও পৃথিবীতে প্রাতঃস্মরণীয় হয়ে আছেন।

২০২৩ সাল যদি আমাদের ১০০টি স্বপ্ন কেড়ে নেয় তাতে ভড়কে যাবার কিছু নেই। আমরা বাধার বিন্ধাচল অতিক্রম করে ১০০০ স্বপ্নের জন্ম দেবো। আশার সূর্য জ্বেলে হতাশার সব মেঘ সরিয়ে দেবো।


চলো স্বপ্নের জাল বুনে যাই

নতুন আশায় ফের জীবন সাজাই


শুরু হলো নতুন বছর ২০২৪। ২০২৩ কে পেছনে ফেলে, তার পাওয়া না পাওয়ার অঙ্ক কষে নতুন দিনের স্বপ্ন আঁকবো। অতীতের ব্যর্থতার গ্লানি বয়ে বেড়ানোর কোনো অবকাশ নেই। সেই পুরোনো কথা- ‘গতস্য শোচনা নাস্তি।’ আমরা জানি আমাদের রব, আমাদের স্রষ্টা কত দয়ালু আমাদের প্রতি। তাঁর অমর ঘোষণা-

অতীতের চেয়ে নিশ্চয় ভালো হবেরে ভবিষ্যৎ

একদিন খুশি হবি তুই লভি তাঁর দান সুমহত।

নতুন বছরকে সামনে রেখে অঙ্গীকার করবো আমরা। নিজেকে, ঘরকে, সমাজকে, রাষ্ট্রকে আর মহাবিশ্বকে ফুলে ফলে সৃজনে মননে আলোতে আলোতে নতুন করে সাজানোর অঙ্গীকার।

মানুষের অনুশোচনা ও অঙ্গীকারের কোনো শেষ নেই। তাই আজ আমি সবার জন্য মোট দশটি অঙ্গীকার নিয়ে কথা বলবো- যে সব অঙ্গীকার নতুন দিনের দোলা দেবে আমাদের হৃদয়ে ও মনে। তারমধ্যে পাঁচটি ইতিবাচক অঙ্গীকার আর পাঁচটি নেতিবাচক অঙ্গীকার।


ইতিবাচক অঙ্গীকারসমূহ

১. মানুষের জীবন ভালো-মন্দ, কল্যাণ-অকল্যাণে ভরা। তবে সবার আগে চাই তার ইতিবাচক (Positive) ও কর্মময় (Pro-active) অঙ্গীকার।

বিগত বছরের একটি ছোট্ট পর্যালোচনা করা লাগবে। সমস্ত ইতিবাচক কাজের জন্য আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা জানানো দরকার। আর সমস্ত খারাপ কাজ ও ব্যর্থতার জন্য প্রার্থনা করা দরকার।

আর এসব করার পরই অঙ্গীকার (Pledge বা Resolution) করতে হবে। ২০২৪ হবে আমার জন্য ইতিবাচক, কল্যাণকর কাজের বছর।

আমি সবসময় ইতিবাচক কাজে ব্যস্ত থাকবো।

My life will be full of proactive and positive activities.


২. প্রতিদিন কমপক্ষে একটি ভালো কাজ করবো। সেটি হতে পারে কোনো দান, সাদাকা, কাউকে নামাজে ডেকে নিয়ে যাওয়া। অথবা মা-বাবার আদেশ পালন করা। এমনকি হতে পারে পথে পড়ে থাকা কাঁটা অথবা পাথর সরিয়ে দেওয়া।


৩. প্রতিদিনের কাজ প্রতিদিন শেষ করে ফেলবো। এ বছর নিশ্চয়ই একটা টাইম চার্ট মেনে চলবো।

যেমন নিচে চার্ট দেওয়া হলো যেখানে দৈনন্দিন কাজের বর্ণনা রয়েছে :

 


ঘুম
পাঠ্যবই
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
পারিবারিক কাজ
সামাজিক কাজ
অন্যান্য কাজ
মোট
৭ ঘণ্টা
৬ ঘণ্টা
৫ ঘণ্টা
২ ঘণ্টা
১ ঘণ্টা
৩ ঘণ্টা
২৪ ঘণ্টা



কোনো কারণে রুটিনের ব্যত্যয় ঘটলে পরবর্তী দিনগুলোতে তা অ্যাডজাস্ট করে নিতে হবে।

কোনো কাজকেই কালকের জন্য রাখবো না। কারণ, কাল কখনো আসে না। দিনের কাজ দিনে শেষ হলে মন হালকা হয়ে যায়। পাওয়ার আনন্দ ও তৃপ্তি পাওয়া যায়।


৪. প্রতিদিন নতুন কিছু শিখবো

আমরা যারা ছাত্র- তাদের তো প্রতিদিনই কিছু পাঠ্যবই পড়তে হয়। পাঠ্যবই বোঝার সবচেয়ে সুন্দর স্থান ক্লাসরুম। বুদ্ধিমান ছাত্র-ছাত্রীরা ক্লাসে মনোযোগী হয়। পড়া না বুঝলে শিক্ষককে জিজ্ঞেস করে নেয়। আরো ভালো করে বোঝার জন্য গ্রুপ স্টাডি করে। অধীত বিষয় অন্যদেরকে পড়ায়।

পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি আউট বই পড়বো। নির্বাচিত আউট বই জীবনবোধ জাগিয়ে তোলে। উপন্যাস, গল্প, কবিতা, নাটক, ইতিহাস যেকোনো বিষয়েই আগ্রহ থাকতে পারে।

এছাড়া- পরিকল্পিতভাবে ধর্মীয় গ্রন্থ, জীবনী, পত্র-পত্রিকা পড়া দরকার।

একজন কবির লেখা গানের কথা মনে পড়ছে-

পড়ো এবং পড়ো,

যে পড়ে সে বড়; পড়েই জীবন গড়ো।

৫.  সকাল সকাল উঠবো, সকাল সকাল ঘুমাবো

হিসাব করলে দেখা যাবে ২০২৩ সালে অনেক অনিয়ম করেছি। সকাল সকাল ঘুমাতে যাইনি, সকাল সকাল ঘুম থেকে জাগিওনি। ২০২৪ এ আর তা করবো না বরং এবার মেনে চলবো সেই বিখ্যাত ছড়ার কথাগুলো-

Early to bed, early to rise;

is the way to be healthy, wealthy and wise.

আমি হবো সকাল বেলার পাখি

সবার আগে কুসুমবাগে উঠবো আমি ডাকি

সকালে পাখির কিচিরমিচির, বাতাসের মৃদুমন্দ দোলা আর আজানের সুমধুর সুর যে মিস করে তার মতো হতভাগ্য আর কে?

২০২৪ এর প্রতিটি সকালে আমরা জেগে উঠবো নতুন প্রেরণায়, নতুন চেতনায়, নতুন দিনের সাড়া জাগাতে পাড়া ও মহল্লায়।


না সূচক অঙ্গীকারসমূহ


১. ২০২৪- এ প্রতিটি মন্দ, অকল্যাণ ও খারাপ ইচ্ছে, কাজ ও চিন্তাকে ‘না’ করে দেবো। 

যতটা সম্ভব সামাজিক, পারিবারিক ও কর্মময় জীবন কাটাবো। মানুষ একা হলেই তার সঙ্গী হতে আসে ইবলিস। একা অলস সময় কাটানোর চেয়ে খেলাধুলা ও ইতিবাচক সঙ্গ অনেক ভালো।


২. প্রতিদিন কমপক্ষে একটি মন্দ কাজ পরিহার করবো। কাউকে মন্দ কাজ করতে দেখলে বাধা দেবো। একা না পারলে অন্যদের সাহায্য নেব। আমাদের সৎ কাজের আদেশ ও মন্দ কাজে নিষেধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মন্দ কাজে বাধা দিতে না পারলে অন্তত তা থেকে দূরে সরে যেতে হবে।

সব মানুষ যদি মন্দ ও অকল্যাণকে রুখে দাঁড়ায় সমাজ ও রাষ্ট্র সুন্দর হয়ে যাবে।


৩. কালকের জন্য কিছু রাখবো না।

আমাদের হাতে যখন যে কাজ আসবে সেটি তখনই করে ফেলবো। মানুষের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় হচ্ছে এখন (Now)। তার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মানুষ যে এখন তার সাথে আছে। আর তার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ- এখন যে কাজটি তার হাতে বা দায়িত্বে রয়েছে। সুতরাং ২০২৪ এর সকল কাজ সময়ের মধ্যে করে ফেলবো।

কোনোকিছুই আগামীকালের জন্য রাখবো না।

Tomorrow, tomorrow and tomorrow, that never comes.

আমাদের সহজ সূত্র হবে ঘড়ি ড়ৎ হবাবৎ। করলে এখনই, আজই- না হয় সেটি হয়তো আর হবে না।


৪. সামাজিক যোগাযোগ/টিভি/মোবাইল আসক্তি কমাবো।

২০২৪ সালে মোবাইল, টিভিসহ নানা ডিভাইসে চোখ রাখা কমিয়ে দেবো। এতে একদিকে চোখের ওপর মন্দ প্রভাব পড়ছে, চোখ হারাতে বসেছে অনেকেই। এ ছাড়া ব্যাপক রাত জাগার কারণে স্বাস্থ্যের ক্ষতি হচ্ছে, পরিবার ও সমাজের সাথে সম্পৃক্ততা কমে যাচ্ছে।

ওখানে সময় না দিয়ে বাস্তবতায় এসো। মা, বাবা, ভাই-বোন, পরিবার ও সমাজের সাথে সময় কাটাও। জীবনকে উপলব্ধি করো। নতুন করে প্রাণের ছোঁয়া নাও।


৫. মাদককে না বলবো- আসক্তি থেকে বাঁচবো

আমাদের চারিদিকে মাদক ও আসক্তির ছড়াছড়ি।

২০২৪ এ অঙ্গীকার হোক মাদক ও আসক্তিকে না বলা। তোমার বা আমার আশপাশে কাউকে এসবের সাথে সম্পৃক্ত থাকতে দেখলে আমাদের উচিত ওখান থেকে ফিরিয়ে আনা।


নতুন প্রাণের দোলা দিয়ে যাই


প্রিয় বন্ধুগণ,

নতুন বছর আসছে ফুলের ডালি সাজিয়ে, আকাশ রাঙিয়ে। আসছে সৌরভে ও গৌরবে আমাদের ভরে দিতে।

এই নতুন বছরে বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত কবি ও গীতিকার জনাব চৌধুরী গোলাম মাওলার গানের কথায় সবাইকে আহ্বান জানাই-

দোলা লাগে, দোলা লাগে, দোলা লাগে

নতুন দিনের দোলা লাগে প্রাণেতে।


প্রাণে প্রাণে নতুন দোলা লাগুক। 

২০২৪ হোক স্বপ্নপূরণের বছর।

হোক সত্য ও কল্যাণের বিজয়ের বছর। 

হোক মানবতার বিজয়ের বছর।

আপনার মন্তাব্য লিখুন
অনলাইনে কিশোরকন্ঠ অর্ডার করুন
লেখকের আরও লেখা

সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

আরও পড়ুন...

CART 0

আপনার প্রোডাক্ট সমূহ