দুঃখী মানুষের পাশে

দুঃখী মানুষের পাশে

কুরআনের আলো অক্টোবর ২০১৭

বন্যায় ডুবে গেছে সব। সবকিছু। ঘরবাড়ি। পশুপাখি। স্বপ্ন। জীবন এখন ভেলার ওপর ভাসছে। কলাগাছের ভেলা। কলাগাছও তো নেই। এই ভেলা ভেঙে গেলে কী হবে তখন? অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ। খাবার নেই। পানীয় নেই। চারদিকে হাহাকার। এত কিছু হারিয়ে যাওয়ার পরও রাসেল কোনো কিছু নিয়ে ভাবে না। ভাবে না তাদের ফসলভরা মাঠের কথা। মাছভরা পুকুরের কথা। গরুভরা গোয়ালের কথা। তার আদরের টিয়ে পাখিটার কথাই কেবল মনে পড়ছে। তার কথা ভেবেই কাঁদছে সে। হায় পাখি! কোথায় হারিয়ে গেলে তুমি?

প্রিয় কিছু হারানোর কষ্ট রাসেল এই প্রথম বুঝতে পারছে। রাসেলের মতো এভাবে কত মানুষ প্রিয়হারা হয়েছে! কেউ হারিয়েছে মা। কেউ বাবা। কেউ সন্তান। ভাই-বোন হারিয়ে নিঃসঙ্গ হয়েছে কত শিশু-কিশোর!

আলিফ। টিভিতে দেখছে এসব চিত্র। বাস্তব কিন্তু গল্পের মতো মনে হচ্ছে সবকিছু। তার কিশোরমন দুলে উঠল। ছোট ছোট শিশুদের ভাসমান জীবন দেখে নিজের ছোট ভাইটিকে কল্পনা করল তাদের জায়গায়। না, আর ভাবা সম্ভব নয়। কী করতে পারে সে তাদের জন্য?

পরদিন স্কুলের নোটিশ বোর্ডে চোখ পড়ল আলিফের। বন্যার্তদের জন্য ত্রাণ তহবিল গঠনের ঘোষণা আছে সেখানে। একটি হাদিস লেখা আছে সুন্দরভাবে। আমাদের মহানবী সা: বলেছেন, “যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমের দুনিয়ার কোনো একটি কষ্ট দূর করবে, আল্লাহ তাআলা তার আখিরাতের একটি কষ্ট দূর করবেন।” (তিরমিজি) আলিফ নিজের জমানো টাকাগুলো দিয়ে দেয়ার কথা ভাবল। সাথে তার আব্বুও অংশগ্রহণ করলেন এ মহান কাজে। একজন, দু’জন করে বন্ধু-বান্ধব সবার মাঝে ছড়িয়ে পড়ল এ আহ্বান। সবাই বাড়িয়ে দিলো মমতার হাত। ভালোবাসার ছায়া।

আলিফদের ভালোবাসা যখন পৌঁছে যাবে দুঃখী মানুষের কাছে, হয়তো একটু হলেও সুখী হবে তারা। একজন মানুষের মুখে হাসি ফুটলেও কম কি! কিন্তু আলিফের ভাবনা অন্যখানে। রাসেল কি তার হারানো পাখিটি ফিরে পাবে?
বিলাল হোসাইন নূরী
                        
আপনার মন্তাব্য লিখুন
অনলাইনে কিশোরকন্ঠ অর্ডার করুন
লেখকের আরও লেখা

সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

আরও পড়ুন...

CART 0

আপনার প্রোডাক্ট সমূহ