দাসত্ব মোচনই বিশ্ব মানবতার আদর্শ

দাসত্ব মোচনই বিশ্ব মানবতার আদর্শ

হাদীসের আলো অক্টোবর ২০১০

“হজরত আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূল (সা) বলেছেন, তোমাদের চাকর-বাকর বা দাস-দাসী প্রকৃতপক্ষে তোমাদের ভাই। আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে তোমাদের অধীনস্থ করেছেন। সুতরাং আল্লাহ তায়ালা যার ভাইকে তার অধীনস্থ করেছেন, তার উচিত সে যা খায় তাই তাকে খাওয়াবে এবং সে যা পরিধান করে তাই তাকে পরিধান করাবে, আর তার ওপর ক্ষমতা বহির্ভূত কোন কাজ চাপাবে না। একান্ত যদি চাপানো হয়, তাহলে কাজটি সমাধা করার ব্যাপারে তাকে সাহায্য করবে।” (সহীহ বুখারী ও মুসলিম)
সুপ্রিয় বন্ধুরা,
ধনী-গরিব সব নিয়েই আমাদের সমাজ। শুধু ধনীরা যদি সমাজে বাস করত, তাহলে সমাজ চলতো না। আবার শুধুমাত্র গরিবের যদি সমাজে বাস থাকতো তাও হতো না। একটু চিন্তা করলেই আমরা বুঝতে পারিÑ আমার বাসা অথবা অফিসের কাজের লোকটি যে কাজ করে, সে যদি তা না করতো তাহলে এ কাজটি আমাকেই করতে হতো। আবার আমার কাজটি যদি আমি না করতাম, তাহলে আমার কাজটি অন্য কেউ করতো। সুতরাং আমরা একজন অন্যজনের পরিপূরক। সামাজিক জীবনে আমরা কেউ একা একা চলতে পারি না। প্রয়োজন হয় অন্যের সহযোগিতার। সে হিসেবে আমাদের প্রত্যেকেরই কিছু না কিছু দায়-দায়িত্ব রয়েছে। এমনিভাবে দাস-দাসী বা চাকর বাকর এরা আমাদের সমাজের একটি অংশ। তাই চাকর বাকর বা দাস-দাসীদের সাথে সদাচরণ করতে হবে। এ ব্যাপারে আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা) বিদায় হজের ভাষণে বলেছেন, ‘তোমরা মুসলমানরা পরস্পর ভাই ভাই। তোমরা তোমাদের চাকর বাকরদের সাথে ভালো আচরণ করবে। তোমরা নিজেরা যা খাবে, তাদেরকেও তা খেতে দেবে। তোমরা যা পরিধান করবে, তাদেরকেও তাই পরাবে।
আলোচ্য হাদিসের আলোকে বোঝা যায় শুধু সামাজিক দায়বদ্ধতা নয়, একজন মুসলিম ভাই হিসেবেও আমাদের রয়েছে অনেক দায়িত্ব ও কর্তব্য। মুসলিম ভাই হিসেবে কোন ভেদাভেদ থাকবে না। ধনী-গরিব, উঁচু-নিচু কোন পার্থক্য থাকবে না। একজন মানুষ হিসেবে সকলের অধিকার হবে সমান। ইসলামের প্রাথমিক জীবনে কৌলিন্য প্রথা চালু ছিল। ছিল দাসত্ব প্রথাও। দাস-দাসীদের যেভাবে খুশি সেভাবে ব্যবহার করা হতো। তাদেরকে বলি দেয়া হতো। কিন্তু আমাদের প্রিয় নবী (সা) ইসলামের সুমহান আদর্শের মাধ্যমে তার অবসান ঘটিয়েছেন। তিনি কুরআনের আলোকে সমাজ থেকে এ সকল দাসত্ব প্রথা বিলোপ করেছেন। তিনি রচনা করে গেছেন ইসলামের এক স্বর্ণোজ্জ্বল অধ্যায়। আমরা যদি আমাদের সমাজ থেকে দাসত্ব মোচন করতে চাই, তবে বিশ্বনবীর (সা) সেই আদর্শ আমাদের অনুসরণ করতে হবে।
প্রিয় বন্ধুরা, এসো আমরা দাসত্ব মোচনে রাসূল (সা)-এর প্রদর্শিত আদর্শ অনুসরণ করি।
গ্রন্থনায় : আবদুল কুদ্দুস মাখন
                        
আপনার মন্তাব্য লিখুন
অনলাইনে কিশোরকন্ঠ অর্ডার করুন
লেখকের আরও লেখা

সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

আরও পড়ুন...

CART 0

আপনার প্রোডাক্ট সমূহ