তবুও স্বপ্নে বিভোর দ্য ফিনিশার    -আসিফ হাসান

তবুও স্বপ্নে বিভোর দ্য ফিনিশার -আসিফ হাসান

খেলার চমক জুলাই ২০১৭

‘ভাই নাসির; প্লিজ আউট হয়ে যাও!’ একটি পত্রিকায় এই শিরোনামেই খবর প্রকাশিত হয়েছে। খবরটির বিষয়বস্তু হলো: জাতীয় দলের হয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজে একটিমাত্র ম্যাচে সুযোগ পেয়ে বোলিং ঝলক দেখিয়েছিলেন নাসির হোসেন। কিন্তু তবুও সুযোগ হয়নি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দলে। গত ম্যাচে যখন মেহেদী মিরাজ কিংবা নাসিরের অভাব অনুভব করছিল জাতীয় দল, তখন নাসির ঘরের মাঠে ডিপিএল নিয়ে ব্যস্ত। গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের জার্সিতে বল হাতে ঝলকের পাশাপাশি ব্যাটিং দাপট দেখাচ্ছেন তিনি। সবচেয়ে আশ্চর্য ব্যাপার হলো, কেউ তাকে আউটই করতে পারছে না! এজন্যই প্রতিপক্ষ বোলারের অবস্থা কল্পনা করে শিরোনাম করা হয়েছে ‘ভাই নাসির; প্লিজ আউট হয়ে যাও!’
এই প্রতিবেদনটি লেখার সময় ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের চলতি আসরে ৭ ইনিংস ব্যাট করে মাত্র ১ বার আউট হয়েছেন নাসির। তাকে একবার আউট করা সেই ভাগ্যবান বোলার হলেন ব্যক্তিগত জীবনে বিতর্কের মধ্যে থাকা স্পিনার আরাফাত সানি। আজকের আগে গত ৬ ম্যাচে এই অলরাউন্ডারের রান যথাক্রমে ১০৬*, ৪১*, ১৫*, ৬৪, ১৩৪* ও ৬১*। ব্যাটিং গড় দেখলে চোখ কপালে ওঠা ছাড়া উপায় নেই। নাসিরের ব্যাটিং গড় এখন ৪৭৭!
অথচ এই নাসির জাতীয় দলে স্থান পাননি। আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে তার স্থান যেখানে নিশ্চিত থাকার কথা, সেখানে তার সুযোগই হয়নি। তিনি কিন্তু এই বঞ্চনার জবাব ব্যাট হাতেই দিয়ে যাচ্ছেন। তিনি থামবেন না। তার ব্যাট, তার বলই তার কথা বলে যাবে। ফিনিশিংয়ের কাজটি তিনি যেভাবে সামাল দিতে পারেন, তার তুলনা খুবই কম। আর এ কারণেই তাকে বলা হয় ফিনিশার। বলা হচ্ছে, বাংলাদেশ ক্রিকেটের দন্ডমূলের কর্তাদের কারো কারো বিরাগভাজন হয়ে তিনি এভাবে বঞ্চিত হচ্ছেন। তবে নাসির জানেন, তিনি যদি খেলা অব্যাহত রাখতে পারেন, তবে তাকে খুব বেশি দিন ঠেকিয়ে রাখা যাবে না। তাকে দলে রাখতেই হবে। তিনি সেই কাজটিই করে যাচ্ছেন।

কে এই নাসির
ক্রিকেট মঞ্চে নাসিরের আত্মপ্রকাশ বাংলাদেশের ক্রিকেটের মতোই অভাবনীয় ব্যাপার। পারিবারিক পারিপার্শ্বিকতার দিক থেকে তার অবস্থা ছিল মোস্তাফিজ আর মিরাজের মতোই, কিংবা তার চেয়েও খারাপ। কিন্তু ক্রিকেটের প্রতি অদম্য নেশা আর সহজাত প্রতিভা তাকে এই পর্যায়ে নিয়ে এসেছে।
রংপুরেই জন্ম এবং সেখানেই বেড়ে ওঠা তার। বিরাট এক যৌথ পরিবার ছিল তার। তবে সচ্ছলতা ছিল না। দিন এনে দিনে খাওয়ার মতো অবস্থা।
তিনি নিজেই জানিয়েছেন, রংপুর থেকে যখন প্রথমবার ঢাকা খেলতে এসেছিলেন তখন বড় চাচার কাছ থেকে ৫০০, ফুপুর কাছ থেকে ২০০, বাবার কাছ থেকে ২০ টাকা এবং পরিবারের আরো অনেকের কাছ থেকে কিছু কিছু টাকা নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু ক্রিকেটের প্রতি প্যাশনটা ছিলো অন্য রকম।
এমন এক নাসিরের অভিষেক কেমন ছিল? ২০১১ সালের ১৪ আগস্টে জিম্বাবুয়ের সাথে বাংলাদেশের ৫৮/৬ এর অবস্থায় নাসিরের ওয়ানডে ক্যারিয়ার শুরু। ওই ম্যাচের ৬৩ রানের ইনিংস তার স্থান নিশ্চিত করে দেয়।
ক্যারিয়ারে উত্থান-পতন থাকবে। এখন কঠিন সময় যাচ্ছে। এটা কেটে যাবে। তিনি আবার তার যোগ্য স্থানে ফিরে যাবেন।
                        
আপনার মন্তাব্য লিখুন
অনলাইনে কিশোরকন্ঠ অর্ডার করুন
লেখকের আরও লেখা

সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

আরও পড়ুন...

CART 0

আপনার প্রোডাক্ট সমূহ