চালকবিহীন গুগল গাড়ি!

চালকবিহীন গুগল গাড়ি!

বিজ্ঞান জুলাই ২০১৩

সাকিব রায়হান ধরো, নতুন কেনা একটি গাড়ি নিজেই নিজেকে চালানোর সব দায়িত্ব নিয়েছে অর্থাৎ স্টিয়ারিং হুইলে কোনো মানুষকে বসতে হচ্ছে না, গাড়ি চালানোর যত ঝামেলা-ঝক্কি গাড়ির যন্ত্রপাতির ঘাড়ে, মানুষ শুধু বসে আছে, গাড়ি তাদেরকে নিয়ে যাচ্ছে গন্তব্যে কেমন দাঁড়াবে ব্যাপারটা? বিষয়টা কিন্তু এখন আর কোনো অলীক স্বপ্ন নয়, বিজ্ঞান ও উন্নত কম্পিউটার প্রযুক্তির কল্যাণে এ ধরনের স্বয়ংক্রিয় গাড়ির চলাচল এখন রীতিমত বিজ্ঞানসম্মত একটা সম্ভাবনা। গুগলের গাড়ি এরই মধ্যে এই প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছে। আমেরিকার বেশ কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে এ ধরনের স্বয়ংচালিত গাড়ি রাস্তায় পরীক্ষামূলকভাবে চালানোর অনুমতিও দেয়া হয়েছে। কিন্তু চালকবিহীন স্বয়ংক্রিয় গাড়ি কতটা প্রয়োজনীয় গাড়ির সব নিয়ন্ত্রণ পুরো যন্ত্রের হাতে ছেড়ে দেয়াটাই বা কতটা বুদ্ধিমানের কাজ? কম্পিউটার বিজ্ঞানী জ্যারন ল্যানিয়ের জানিয়েছেন, স্বয়ংচালিত গাড়ির যে সীমিত ব্যবহার এ যাবত হয়েছে তাতে উদ্বেগের কোনো কারণ তিনি দেখছেন না। তার বক্তব্য, চালকবিহীন গাড়ি যেখানে যেখানে রাস্তায় নামানো হয়েছে সেখানে দেখা গেছে এ ধরনের গাড়ি মানুষ নিয়ন্ত্রিত গাড়ির থেকে রাস্তায় অনেক বেশি নিরাপদ। প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ বিল টমসন্ বলছেন, গুগল ২০১০ সালে প্রথম চালকবিহীন গাড়ি রাস্তায় নামানোর ঘোষণা দেয়। তবে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে নয়, পরীক্ষামূলকভাবে। গুগল এ ধরনের গাড়ি রাস্তায় বের করার পর কয়েক লাখ মাইল নিরাপদে চলার কৃতিত্বও অর্জন করেছে। এই দু’বছরে গুগলের গাড়িতে দুর্ঘটনা ঘটেছে মাত্র একবার এবং সেবার একজন মানুষের হাতে ছিল ওই গাড়ির নিয়ন্ত্রণ। গুগলের গাড়িতে ফিট করা আছে নানা ধরনের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি যেমন লেজারচালিত স্ক্যানার, যা দেখে নিচ্ছে গাড়ির সামনে কী আছে এবং উন্নত জিপিএস বা স্যাটেলাইট নিয়ন্ত্রিত পথনির্দেশিকা যা বলে দিচ্ছে কোন্ দিক দিয়ে কীভাবে গাড়ির চাকা ঘুরবে। ফলে গাড়ি নিজে থেকেই বুঝে নিতে পারছে সে কোন্ পথ দিয়ে যাচ্ছে এবং তার চলার পথে কোথায় কী আছে। যন্ত্রে যেন্তু সবকিছু অনবরত ধরা পড়ছে, তাই এই গাড়ি চালকবিহীন হলেও নিরাপদভাবে পথ চলতে সক্ষম। আর সে কারণেই বলা যায় এই পরীক্ষা সফল এবং এই সাফল্যের কারণেই আমেরিকায় নেভাদা, ফ্লোরিডা এবং ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্য কর্তৃপক্ষ এ ধরনের গাড়িকে রাস্তায় চলার জন্য লাইসেন্সও দিয়েছে। তবে পুরোপুরি স্বয়ংচালিত গাড়ি বাণিজ্যিক ভিত্তিতে বাজারে ছাড়ার আগে একটা অন্তর্বতীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে বিজ্ঞানীরা কোথাও কোথাও আংশিকভাবে স্বয়ংচালিত গাড়ির বিষয়টা নিয়েও পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছেন। স্ক্যানডেনেভিয়াতে এ নিয়ে যেসব পরীক্ষা চলছে তাতে একটি মানুষচালিত পাইলট গাড়ি থাকছে সবার আগে আর তার পেছনে অনুসরণকারী গাড়ির বহর। সাতটি সংস্থার যৌথ উদ্যোগে সেফ রোড ট্রেন্ডস ফর এনভায়রনমেন্ট বা সারটে নামে প্রকল্পের অধীনে চলছে এর কাজ। এতে প্রথম গাড়ির চালক রাস্তার অবস্থা নিরূপণ করে তার ভিত্তিতে পেছনের গাড়ির বহরকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেয়। গাড়ি প্রস্তুতকারক ভলভো এরই মধ্যে সুইডেনের একটি ট্র্যাকে এই পদ্ধতির পরীক্ষা চালিয়েছে।

আপনার মন্তাব্য লিখুন
অনলাইনে কিশোরকন্ঠ অর্ডার করুন
লেখকের আরও লেখা

সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

আরও পড়ুন...

CART 0

আপনার প্রোডাক্ট সমূহ