কুরআনের আলো

কুরআনের আলো

কুরআনের আলো জুলাই ২০১২

বায়ু, বৃষ্টি, উদ্ভিদরাজি, ফলমূল সব কিছু আল্লাহর দান


“তিনিই আল্লাহ যিনি অনুগ্রহপূর্বক বৃষ্টির আগে সুসংবাদবাহী বায়ু পাঠিয়ে দেন। এমনকি যখন বায়ুরাশি পানিপূর্ণ মেঘমালা বয়ে আনে তখন আমি এ মেঘমালাকে একটি মৃত জমিনের দিকে হাঁকিয়ে দিই। অতঃপর এ মেঘ থেকে বারিধারা বর্ষণ করি। অতঃপর পানি দ্বারা সব রকমের ফল উৎপন্ন করি। এভাবেই আমি মৃতদেরকে মৃত্যুর অবস্থা থেকে বের করে আনব, যাতে তোমরা এই পর্যবেক্ষণ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করো।”
(সূরা আরাফ : ৫৭)

বন্ধুরা, এই আয়াতে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পৃথিবীবাসীর কল্যাণে সুসংবাদবাহী বায়ু, পানিপূর্ণ মেঘমালা, বৃষ্টি, সে থেকে উৎপাদিত ফলফলাদি ইত্যাদির বর্ণনা দিয়ে মানুষকে ওই সব নেয়ামতরাজির কারণে আল্লাহর আরো কৃতজ্ঞ বান্দা হওয়ার আদেশ দিয়েছেন। ঝড়, বৃষ্টি, সাইক্লোন প্রভৃতি শুরু হওয়ার আগে এমন একটি বায়ু প্রবাহিত হয়, যার মধ্য থেকে মেটোরোগ্রাফ (সধঃবড়ৎমৎধঢ়যং) অঙ্কন করা যায়। অর্থাৎ তাপমাত্রা, আর্দ্রতা, বায়ুর গতিবেগ, বৃষ্টিপাতের পরিমাণ, বজ্রবৃষ্টি, জলোচ্ছ্বাস প্রভৃতির সার্বিক মানচিত্র পাওয়া যায় এবং এ মানচিত্র আগে ভাগে দেয়ার নাম আবহাওয়ার পূর্বাভাস। আল কুরআন এটাকে বলেছে, সুসংবাদবাহী পূর্বাভাস বা বায়ু। এই বায়ু হাঁকিয়ে নেয় মেঘমালা। জলীয়বাষ্প থেকে মেঘ সৃষ্টি হয়। জলীয়কণা যখন সাগর, নদ-নদী, খাল-বিল থেকে বাষ্পাকারে উপরে ওঠে, তখন সেটা চারপাশের বায়ুস্তরের চেয়ে হালকা হয়ে যায়। ফলে জলীয়বাষ্প উৎপন্ন হয়েই উপরের দিকে উঠতে থাকে। আবার ঊর্ধ্বগামী বায়ুপ্রবাহ ক্রমশ শীতল হয়ে আসে এবং ঘনীভবনের মাধ্যমে সেটা ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র জলকণায় পরিণত হয়। অতঃপর এ মেঘ থেকে বারিধারা বর্ষণ করেন মহান আল্লাহ তাঁর চমৎকার শৈল্পিক সৃষ্টি নৈপুণ্যে। বড় ফোঁটা তৈরি করতে গেলে লবণ কণা, ধূলিকণা বা অন্যান্য ক্ষুদ্র দ্রবীকরণ কণা বাতাসে বর্তমান থাকা একান্ত প্রয়োজন।
আল্লাহ এসব মেঘমালাকে মানুষ ও সৃষ্টজীবের প্রয়োজন অনুযায়ী পাঠিয়ে তাদের ওপর বারিবর্ষণ করেন। ফলে মৃত জমিন পানিতে সিক্ত হয়ে উর্বরাশক্তি ফিরে পায়। উৎপাদিত হয় নানা উদ্ভিদ। ফলমূল শস্যভাণ্ডার, যা থেকে মানুষ ও অন্যান্য সৃষ্টজীব জীবন ধারণ করতে পারে। মৃত জমিন থেকে যেভাবে ফলমূল উদ্ভিদ বের করা আল্লাহর জন্য সহজ, তেমনি মৃত, পচে গলে যাওয়া মানুষগুলোকেও কবর থেকে  বের করা এবং অবাধ্যদেরকে বিচারের সম্মুখীন করা আরো সহজ। তিনি এত কিছু বর্ণনা করার উদ্দেশ্য হলো মানুষ যেন এরপর শিক্ষা গ্রহণ করে।
প্রিয় বন্ধুরা, এসো আমরা আল্লাহর দেয়া বৃষ্টি, বায়ু, ফলমূল, উদ্ভিদরাজি দ্বারা উপকৃত হওয়ার জন্য তাঁরই কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি ও তাঁর নির্দেশনা মেনে চলি।
আল্লাহ আমাদেরকে অতিবৃষ্টি ও অনাবৃষ্টি থেকে রক্ষা করুন এবং তারই কৃতজ্ঞবান্দা হওয়ার তৌফিক দিন, আমিন।
গ্রন্থনায় : মিজানুর রহমান
                        
আপনার মন্তাব্য লিখুন
অনলাইনে কিশোরকন্ঠ অর্ডার করুন
লেখকের আরও লেখা

সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

আরও পড়ুন...

CART 0

আপনার প্রোডাক্ট সমূহ