কী অদ্ভুত

কী অদ্ভুত

রম্যগল্প আবু সুফিয়ান এপ্রিল ২০২৩

স্বপ্নটা দেখছি শেষ রাতে।

আমি ভ্যাবলা টাইপের হওয়ায় মোটামুটি বুঝবুদ্ধি হওয়ার পর থেকে কারও সাথে মারামারি করিনি। উচ্চবাচ্য করার ঘটনাও নেহাত হাতেগোনা। 

যাহোক, স্বপ্নে সব সম্ভব। একজন কী কারণে যেন ঘাওরামি করছিল। দিছি মাইর। একটু পর দেখলাম বেচারা মারা গেছে। 

ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে পলায়ন করলাম। নাহ্, দেশে না, একেবারে বিদেশ। কিন্তু স্বপ্নে কি বিপদ পিছু ছাড়ে! এয়ারপোর্টে নামতেই পুলিশ ঘাড় চেপে ধরল। 

বিচারকের আসনে দেখলাম গম্ভীর মুখে বসে আছেন শামসু চাচা। 

বিচারের রায় দিয়ে বরফকণ্ঠে বললেন, ফাঁসির আগে তোমার একটি শেষ ইচ্ছে পূরণ করা হবে, বলো কী চাও?

‘আমার একটা নয়, দুটো ইচ্ছে।’

‘বলো।’

‘ঝোলমাছ দিয়ে আতপ চালের ভাত খাব। আর ফাঁসিমঞ্চে দু’রাকাত নামাজ।’

ভাত নিয়ে আসা হলো। কোরাল মাছের মতো আরও চকচকে সাদাটে মাছঝোল দিয়ে। স্বাদটা অমৃত। পেটপুরে চেটেপুটে খাচ্ছি। শামসু চাচা পাশে বসে আমার চপচপ শব্দে খাওয়া দেখছেন। আমি বললাম, ‘স্যার, বেহেশতেও এ মাছ খাব। স্বাদটা ফাইন হইছে।’ 

চাচা আমার কথা শুনে হাসতে হাসতে বললেন, ‘বেহেশতে যাবা নিশ্চিত হলে ক্যামনে?’

‘মুমিন হিসেবে সে আশা তো রাখিই। তাই এখন থেকে কী কী খাওয়াদাওয়া হবে সেটার প্ল্যানও আগায়া রাখি, এই যেমনÑ কম তেলে ছোটো আলু দিয়ে বেশি ঝোল দেওয়া গরুর গোশত, ছুরি শুঁটকি দিয়ে কম ঝোলে টংকাবতি চরের বেগুন, আলু-শিম-বেগুন কুঁচি দিয়ে কুমড়োশাক, আর সাথে অবশ্যই আতপ চালের ভাত।’

শামসু চাচা হু হু করে হেসে উঠলেন। হাসির শব্দে ঘুম ভেঙে গেল। 

ভরপেট অসাধারণ সুখাদ্য খাওয়া হলো। 

কিন্তু ফাঁসিটা হলো না!

আপনার মন্তাব্য লিখুন
অনলাইনে কিশোরকন্ঠ অর্ডার করুন
লেখকের আরও লেখা

সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

আরও পড়ুন...

CART 0

আপনার প্রোডাক্ট সমূহ